ব্যাকআপ এর অর্থ কি ? ব্যাকআপ কত প্রকার এবং এর সুবিধা

আমরা সব সময় দেখে থাকি বা শূনে থাকি যা আমাদের এই ফাইলটার ব্যাকআপ নেওয়া হলো না। আমি আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এর ব্যাকআপ গুলো করা এখনো রয়ে গেছে। এছাড়া আমাদের ওয়েবসাইট এর ব্যাকআপ নেওয়া প্রয়োজন।

বর্তমান সময়ে এই কম্পিউটার, মোবাইল এর জগতে আমরা কম, বেশি সকলেই ব্যাকআপ এর সাথে পরিচিত।

কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকের প্রশ্ন থাকে যে, কি এই ব্যঅকআপ বস্তুটি। এটি দিয়ে কি করা হয়।

ব্যাকআপ এর অর্থ কি ? ব্যাকআপ কত প্রকার এবং এর সুবিধা
ব্যাকআপ এর অর্থ কি ? ব্যাকআপ কত প্রকার এবং এর সুবিধা

তাই, আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানাব ব্যাকআপ কি, ব্যাকআপ এর অর্থ কি ? ব্যাকআপ কত প্রকার এবং এর সুবিধা গুলো সম্পর্কে।

আপনি যদি ব্যাকআপ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে চান। তাহলে শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।

ব্যাকআপ এর অর্থ কি ?

ব্যাক আপ হচ্ছে একটি ইংরিজি শব্দ। যার অর্থ সাধারণত বাংলা ভাষায় বালা হয় বিকল্প ব্যবস্থা।

আর কম্পিউটার এর দুনিয়া তথ্য প্রযুক্তির ভাষায় ব্যঅকআপ মানে দাড়ায় তথ্য এবং তথ্য সংক্রান্ত ফাইল এর অনুকরণ বা কপি করে। সেই তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা।

আমরা সকলেই জানি যে, সকল কম্পিউটার জগৎ চলছে, বিস্তর তথ্য সংগ্রহ আদান প্রদান এবং সংরক্ষণ এর মাধ্যমে।

এই তথ্য সংক্ষণের পদ্ধতিতে আমরা ব্যঅকআপ বলে থাকি। আমরা সহজ ভাষাতে ব্যাকআপ কে তথ্যের পুনরুদ্ধার হিসেবে বলতে পারি।

ব্যাকআপ এর সংজ্ঞা

ব্যাকআপ হচ্ছে এক ধরণের প্রক্রিয়া যা মূলত, তথ্য বা ফাইল এর বিকল্প বা অনুকরণ তৈরি করার একটি প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে আপনার আসল তথ্য হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলেও।

ব্যাকআপ করা তথ্য বা ফাইল গুলো থেকে পরবর্তী সময়ে আপনি আবার তথ্য গুরো ফিরিয়ে বা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

উক্ত ব্যাকআপ প্রক্রিয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হলো কোন ঐতিহাসিক তথ্য সংরক্ষণ। কোন প্রকার এর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা নথি সংরক্ষণ। কোন পরিসংখ্যান এর তথ্য সারাজীবন এর জন্য সংরক্ষণ করে রাখা।

উক্ত সকল তথ্য সংরক্ষণ এর কাজ গুলো ডেটা বা তথ্য সংরক্ষণ এর নীতি বা পলিসি অনুসরণ করা হয়।

সাধারণ অর্থে ব্যাকআপ বলতে, বুঝায় কম্পিউটার মেশিন এর ব্যর্থতা বা কোন প্রকার বিপর্যয় এর কারণে। যাতে আপনার তথ্য নষ্ট বা হারিয়ে যায় তার হাত থেকে রক্ষা পায়।

তাই কোন একটি সেকেন্ডারি বা গৌন স্থানে বা তথ্য ভান্ডার বা ডাটাবেস আপনার আসল তথ্য বা ভার্চুয়াল ফাইল গুলোকে অনুলিপি করে বা কপি করে রেখে দেওয়া হয়।

যার জন্য কোন বিপদজনক বা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি। আসলে আপনি সহজেই সেই জরুরুী তথ্য গুলো কে সফল ভাবে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

তথ্যের ব্যাকআপ রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ

এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে যে, তথ্য হারিয়ে গেলে কি বা আসে যায়। আবার সেগুলো আমরা তৈরি করে নেব। তবে এমনটা না। হয়তো আমাদের প্রতিদিনের ব্যক্তিগত জীবনে তথ্য সংরক্ষণ এর খুব বেশি এরকটা প্রয়োজন পড়ে না।

তবে একবার চিন্তা করে দেখুন। যে আমরা গুগল কে কোন প্রশ্ন করলে আমরা সঠিক উত্তর সাথে সাথে পেয়ে যায়। তবে কোনদিন ভেবে দেখেছেন কি গুগল এই সকল প্রশ্নের উত্তর কিভাবে করে থাকে।

কারণ আমরা যারা অনলাইনের মাধ্যমে, লেখালেখির কাজ করি, সেই সকল লেখা বা আর্টিকেল গুলো গুগল ব্যাকআপ করে রাখে।

আর মানুষ যখন সেই সকল প্রশ্ন করে, তথ্য সে গুলো গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে দেখানো হয়। আর আমরা যখন কোন ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের তথ্য গুলো আপলোড করে থাকি।

সেই সময় আমাদের অনেক সমস্যার জন্য আপলোড করা তথ্য গুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে কাজ করেন।

তখন যদি কোন সমস্যার জন্য আপনার সকল তথ্য গুলো নষ্ট হয়ে যায়। সেই সময় আপনার কেমন লাগবে। অবশ্যই খারাপ লাগবে।

আর উক্ত সমস্যার সম্মুখিন হতে না চাইলে, আপনাকে অবশ্যই যে কোন কম্পিউটার বা মোবাইল তথ্য গুলোর সংরক্ষণ করে রাখার জন্য আপনাকে ব্যাকআপ করতে হবে।

ব্যাকআপ প্রকার

ব্যাকআপ প্রক্রিয়াটি সময় এর সাথে সাথে উন্নত হওয়ার পাশাপাশি অনেক জটিল হয়ে পড়ে। উক্ত প্রক্রিয়াটি চলার সময় অনেক গুলো বিষয় এক সঙ্গে কাজ করে থাকে। যেমন-

তথ্য অনুলিপি’র জন্য অনেক ক্ষন সময় নেওয়া। পুনরুদ্ধার এর জন্য সময় নেওয়া, তথ্য সঞ্চয় স্থানের জন্য খরচ, নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইথের স্টোরেজ এবং আরো অন্যান্য।

তার জন্য সময় এর সঙ্গে সঙ্গে নতুন এবং উন্নত প্রযুক্তির উন্নতির জন্য ব্যাকআপ গুলোকে আরো ভালো করে ডিজাইন করার জন্য উক্ত পদ্ধতির জটিলতা অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উক্ত জটিল ব্যাকআপ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সংগঠন জড়িত থাকে। কিন্তু উক্ত ব্যাকআপ মুলত তিন প্রকার হয়।

যেমন-

01. সম্পূর্ণ সিস্টেম ব্যাকআপ

এই সকল ব্যাকআপ হচ্ছে সবথেকে সহজতম তথ্য পুনরুদ্ধার এর প্রক্রিয়া। উক্ত সম্পূর্ণ সিস্টেম ব্যাকআপপে মূলত আপনার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। মানে যা আপািন সব সময় রক্ষা করতে চান। এমন তথ্য গুলো কপি করা হয়।

এই ধরণের প্রক্রিয়ার কাজ হচ্ছে প্রতিবার আপনার অপারেটিং সিস্টেম। সকল এপ্লিকেশন ও যাবতীয় ডেটাসহ একটি নির্দিষ্ট সময় এর ব্যবধানে কম্পিউটার সিস্টেম কে পুনরুদ্ধার করার অনুমতি প্রদান করে থাকে।

উক্ত তথ্য গুলো প্রতিবার একটি সেকেন্ডারি স্টোরেজে কপি করা হয়। আপনি দৈনিক একবার উক্ত সম্পূর্ণ ব্যাকআপ প্রক্রিয়া করলে আপনার সারাদিনের তথ্য কপি হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে আপনি সেই তথ্য কে পরিবর্তন বা পুনগঠন করতে পারবেন। এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ হতে কম বেশি 40 – 50 মিনিট লাগে।

02. ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ

ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ এর ক্ষেত্রে সর্বশেষ হওয়া সম্পুর্ণ ব্যাকআপ এর পরে বাকি থাকা বা পরিবর্তিত হওয়ার সকল তথ্য ও তথ্যের ফাইল কপি করে রাখা হয়ে থাকে।

কিন্তু ডিফারেন্সিয়াল ব্যাকআপ কোন ধরণের আর্কাইভ এট্রিবিউট বা রেকর্ড থাকে না। মানে এই প্রক্রিয়াতে ব্যাকআপ কোন সময় হয়েছিল।

এছাড়া কীভাবে ডেটা পরিবর্তন করা হয় সেই সকলের কোন বিবরণ বা রেকর্ড থাকে না।

03. ফুল এন্ড ইনক্রিমেন্টাল বা সম্পূর্ণ ও বর্ধিত ব্যাকআপ

উক্ত প্রক্রিয়া সকল তথ্য ব্যাকআপ করার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায়। তার পরে সকল তথ্য গুলো কে অনেক ছোট ছোট অংশ হিসেবে শুধু মাত্র নতুন কিংবা পরিবর্তিত তথ্য বা তথ্যের ফাইল এর মতো করে ব্যাকআপ নেওয়া হয়ে থাকে।

নির্দিষ্ট সময় এর মধ্যে পুরো তথ্য গুলোকে পুনরুদ্ধার কারার জন্য সবার প্রথমে একটি সম্পূর্ণ সিস্টেম এর ব্যাকআপ প্রয়োজন হয়।

উক্ত ফুল সিস্টেম ব্যাকআপ হওয়ার পাশাপাশি যে ছোট খাটো তথ্য গুলো আমরা পরিবর্তন করতে থাকি। সেগুলো ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ এর প্রক্রিয়ার সহায়তায় প্রায় সাথে সাথে কপি হতে পারে।

যা ডিফারেন্সিয়াল ব্যাকআপ প্রক্রিয়াতে থাকা তথ্যের পরিমাণ এর তুলনায় অনেক কম।

ব্যাকআপ এর সুবিধা

ব্যাকআপ প্রক্রিয়ার বেশ কতগুলো জরুরী সুবিধা আছে। সেই গুলো হচ্ছে-

  • দ্রুত ফাইল অ্যাক্সেস করা যায়।
  • পাওয়ার ব্যর্থতার বিরুদ্ধে সুরক্ষা।
  • অ্যান্টি-ভাইরাসের পাশাপাশি তথ্য সংরক্ষণের সেরা প্রক্রিয়া।
  • ত্রুটিপূর্ণ হার্ড ড্রাইভের বিরুদ্ধে সুরক্ষা।
  • অপারেটিং সিস্টেম ব্যর্থ হলে পুনরুদ্ধারের সুবিধা। ইত্যাদি।

ব্যাকআপ নেওয়ার কিছু পদ্ধতি

আমরা অনলাইনে বা ডেটাবেস এর পাশাপাশি অনেক কিছু সাধঅরণ যন্ত্রপাতির সহায়তায় ব্যাকআপ নিয়ে থাকি। যেমন- ইউএসবি স্টিক, নেটওয়ার্ক এটাচড স্টোরেজ, হার্ড ড্রাইভ ইত্যাদি।

এছাড়া আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে আপনার যে কোন তথ্য ব্যাকআপ করতে চান। তাহলে আপনার জন্য তথ্য ব্যাকআপ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ক্লাউড স্টোরেজ এবং গুগল ড্রাইভ

আপনি যদি যে কোন অনলাইন তথ্য গুগল ড্রাইভে ব্যাকআপ নিতে চান। তাহলে একদম ফ্রিতে 15 জিবি স্টোরেজ পেয়ে যাবেন। সেখানে আপনি হিউজ পরিমাণের তথ্য জমা রাখতে পারবেন।

অ্যালগরিদম কি : তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানাব, অ্যালগরিদম কি? এবং এলগরিদম কাকে বলে। এছাড়া, অ্যাগরিদম এর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সমূহ। আপনি … Read more

শেষ কথাঃ

তো বন্ধুরা, আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হলো ব্যাকআপ এর অর্থ কি এবং ব্যাকআপ কত প্রকার এবং এর সুবিধা সম্পর্কে।

আপনি যদি সাইট বা সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করেন। তাহলে আপনার যাবতীয় তথ্য ব্যাকআপ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।

কিন্তু সবচেয়ে নিরাপদ হিসেবে আপনার গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন ফ্রিতে। তো আমাদের এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করে, আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন।

আর এই ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন বিষয়ে টিপ্স এন্ড টিক্স পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment