ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয়

ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয় কি : দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কতটুকু অসাবধানতা জন্য একজন মানুষের ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন হয়।

ভুলবশত ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নামকরণ হয়ে গেলে, পুনরায় ঠিক করার করণীয় কি? সে বিষয়ে লোকেরা অনলাইনে জানার চেষ্টা করেন।

ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয়
ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয়

তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন করনীয় কি ? সে বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করব।

বর্তমান সময়ে ভোটার তালিকা থেকে একজন জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হয়ে গেলে, সেই ব্যক্তির যে, ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়।

তা বলে শেষ করা যাবে না। এ সমস্যা গুলো একমাত্র সেই ব্যক্তি বুঝে। যার ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন হয়ে গেছে।

তো চলুন জেনে নেয়া যাক ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন কেন হয়। আর কর্তন হলে কিভাবে সেটি ঠিক করা যাবে।

যে কারণে জীবিত ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকা থেকে করত হয় ?

সকলে জানেন, ভোটার আল-নাকাত কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে যারা পূর্বে কখনো ভোটার হয়নি। তাদেরকে নতুন ভোটার করার জন্য তথ্য সংগ্রহকারীরা প্রতিটি বাড়ি গিয়ে, তথ্য সংগ্রহ করে দৈনক নিবন্ধন ফরম পূরণ করেন।

আবার সেই সঙ্গে তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিরা মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ১২ নং ফরম পূরণ করেন।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ ছাড়া, যে কোন সময় নির্বাচন অফিসে এসে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে ভোটার হওয়া যায়।

তবে ভোটার কর্তনের কাজটা সচরাচর হালনাগাদ এর সময় হয়।

ভোটার তালিকা থেকে নামকরণের জন্য অফিসে তেমন কোন আবেদন জমা হয় না। এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা থেকে একজন জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হয় সাধারণত তিনটি কারণ।

সেগুলো হলো-

  1. তথ্য সংগ্রহকারের অসাবধানতার কারণে।
  2. ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এর টাইপিং মিসটেক এর কারণে।
  3. শত্রুতার কারণে।

তো চলুন আমরা এখন এই তিনটি কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

তথ্য সংগ্রহকারী অসাধারণতা

ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর তথ্য সংগ্রহকারীরা যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। সেই সময় মৃত্যু ব্যক্তিদের নাম কর্তন করার জন্য ১২ নং পরম পূরণ করেন।

সেই ফরম এ কর্তন যোগ্য ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, ভোটার নম্বর সহ আরো অন্যান্য তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়।

কর্তনকৃত ব্যক্তির ভোটার নম্বর যদি লেখার সময় ভুল হয় সেক্ষেত্রে যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম কর্তন না হয়ে ভুল হয়ে, যার ভোটার নম্বর লেখা হয়ে যায় তার নামটি ভোটার তালিকা থেকে কর্তন হয়।

এরকম ভুল অনেক ব্যক্তির সাথে ঘটতে পারে। মূলত তথ্য সংগ্রহকারের অসাবধানতার কারণে এই ভুলগুলো হয়ে থাকে।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এর টাইপিং মিসটেক

ভোটার হালনাগার চলাকালীন সময়ে তথ্য সংগ্রহকারীরা যে ১২ নং ফরম উপজেলা রেজিস্ট্রেশন অফিসে জমা দেয়।

তারপর সে ফর্ম গুলো ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রতিটি মানুষের ভোটার নম্বর দিয়ে সার্ভারে সার্চ করে, এনআইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ সহ প্রয়োজনের ডাটা গুলো সংরক্ষণ করেন।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর যখন ভোটার নম্বর টাইপ করেন তখন কখনো কখনো নম্বর ভুল হয়ে যায়। সে সময় অন্য ব্যক্তিদের তথ্য চালু হয়।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর যদি যথেষ্ট সাবধানতার সাথে কর্তনের কাজ না করে সেক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির পরিবর্তে একজন জীবিত ব্যক্তির তথ্য ভোটার তালিকায় কর্তন হয়ে যায়।

কিন্তু ডাটা এন্ট্রি অপারেটর করতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। কারণ যখন সার্ভারে ভোটার নম্বর দিয়ে সার্চ করা হয়। তখন যদি নাম্বার ভুল টাইপ হয়। তবে অন্য ব্যক্তির ছবিসহ যাবতীয় তথ্য চলে আসবে।

সেই ফরম এ উল্লেখিত ব্যক্তির নাম এবং সার্চ করে পাওয়া ব্যক্তির নাম যাচাই করে দেখা হয়। যদি মিল থাকে বোঝা যায় নম্বরটি সঠিক রয়েছে।

আর যদি থাকে পুনরায় একবার ভালো করে চেক করা হয় কোথাও কোন কিছু ভুল রয়েছে কিনা।

মানে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর করতে, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম তারপরও ডাটা অফার করতে ভুল হতে পারে। এই কারণে মূলত জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হয়।

শত্রুতার কারণে

বর্তমান সময়ে অনেক ব্যক্তি আছে অন্যের ভালো দেখতে পারেন না। সে শত্রুতা আপনার আমার সাথে হতে পারে। মনে করুন আপনার একজন নিকট শত্রু প্রতাপ তথ্য সংগ্রহকারী কে বিভিন্ন কথা বলে পটিয়ে ফেলেছে।

যেমন বলতে পারে, স্যার অমুক লোক ১ মাস আগে মৃত্যুবরণ করেছে, আপনি কি জানেন। তথ্য সংগ্রহকারী বলতে পারে কোথায় আমি তো জানিনা।

তাকে আশ্বস্ত করে, বলা হয় সে মারা গেছে। যদি নাম কর্তনের কাজ চলমান থাকে তবে তার নামটি ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করে দিতে পারেন।

তথ্য সংগ্রহকারী চিন্তা করে দেখেন একটি ফরম পূরণ করলেই। তো তিনি নির্ধারিত পরিমাণের টাকা পাবেন।

আবার অন্যদিকে, মৃত্যুর পাকাপোক্ত খবর পেয়ে ফর্মটি পূরণ করে ফেলে। ঠিক এরকম ভাবে ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম হতে পারে।

এই ধরনের শত্রুতা অনেক কম ঘটে থাকে। তারপরও যদি এমনটা হয়। অকে সময় কম সংখ্যার মানুষ এগুলো করে থাকে।

ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয়

ভোটার তালিকা থেকে একবার নাম কর্তন হয়ে গেলে পণ্যটাই ফিরে পাওয়ার অনেকটা সময় সাপেক্ষ ছিল। মাঠ পর্যায়ে হতে এই কাজ গুলো করা যেত না।

কর্তনকৃত ভোটার রোল ব্যাক করার কাজ একমাত্র হেড অফিস থেকে করা হতো। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন অফিস থেকেই আবেদন করা হতো।

তবে বর্তমান সময়ে ভুলবশত ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে, সেটি পুনরায় ঠিক করার কাজ সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে করা যায়।

কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম পুনরায় বহাল রাখতে হলে আপনি যে জীবিত রয়েছেন তার প্রমাণ গুলো সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে।

এখন বলতে পারেন আমি তো আপনার সামনেই জলজন্ত্র প্রমাণ। হ্যাঁ আপনার কথা ঠিক রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাগজপত্র দ্বারা প্রমাণ করতে হয়।

তো চলুন এখন জেনে নেয়া যাক ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে। কি কি কাগজপত্র জমা দিয়ে ঠিক করা যায়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • সরকারি হাসপাতালে চাকরিগত একজন এমবিবিএস ডাক্তারের মেডিকেল রিপোর্ট।
  • ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ পৌর কাউন্সিলর কর্তৃক জীবিত আছেন মর্মে একটি প্রত্যয়ন পত্র এবং নাগরিক সনদ পত্র।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর আবেদন করতে হবে স্ব-শরীরে।

উপরোক্ত কাগজপত্র সংগ্রহ হয়ে গেলে কম্পিউটার টাইপ করে বা সাদা কাগজের নিজের হাতে লিখে উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর আবেদন করবেন আবেদন বিষয়ে দিতে পারেন- ভুলবশত ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হওয়া প্রসঙ্গে।

তারপর আপনি আপনার বিস্তারিত বিষয়গুলো উল্লেখ করে দিবেন। আপনার আবেদনটি উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর জমা দেওয়ার পর সেটি শনাক্ত করবে।

এবং প্রাথমিক অনুমোদন দিলে আপনার হাতের ছাপ নিয়ে, সার্ভারে থাকা হাতের ছাপ এর সাথে মিলিয়ে দেখবেন।

যদি সঠিকতা পাওয়া যায় পরবর্তীতে তারা ভোটার তালিকায় আপনার নাম সংযুক্ত করে দিবে। আপনি নিশ্চিন্তে ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে, যে কোন কাজে যুক্ত হতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

তো বন্ধুরা আপনারা যারা অনলাইনে জানার চেষ্টা করেন। ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে করণীয় কি?

তো আপনারা জানতে পারলেন কি কি কারণে, ভোটার তালিকা থেকে জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হয়। আর জীবিত ব্যক্তির নাম কর্তন হলে ঠিক করার উপায় কি।

এ বিষয়ে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত নতুন নতুন আপডেট পেতে, নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment