ডিপিএস কি ? কত ধরনের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস এর সুবিধা ও অসুবিধা

ডিপিএস কি : বর্তমানে মোট কত ধরনের ডিপিএস আছে এ বিষয় নিয়ে জানার জন্য, অনেকেই অনলাইনে খোঁজার চেষ্টা করে।

তাই আজ আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে, ডিপিএস কি? কত ধরনের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাবো।

ডিপিএস কি ? কত ধরনের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস এর সুবিধা ও অসুবিধা
ডিপিএস কি ? কত ধরনের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস এর সুবিধা ও অসুবিধা

আপনি যদি ডিপিএস সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পেতে চান? তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ডিপিএস কি ?

বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আর্থিক সঞ্চয় এর বিশেষ পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে ডিপিএস। উক্ত ডিপিএস এর ফুল মিনিং হচ্ছে, ডিপোজিট পেনশন স্কিম।

উক্ত আর্থিক সঞ্চয় করার স্কিম গুলো মাসিক ভিত্তিতে হয়ে থাকে। মানে আপনি এক মাসে নির্দিষ্ট কিছু টাকা আপনার নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে জমা করে রাখতে পারবেন।

তার পাশাপাশি আপনি যে, ব্যাংক এর একাউন্ট আপনার আর্থিক সঞ্চয় করবেন। সে ব্যাংক থেকে আপনাকে নির্দিষ্ট মেয়াদে বা মাসিক ভিত্তিতে সুদ বা মুনাফা প্রদান করবে। মূলত উক্ত পদ্ধতিকে সহজ ভাবে বলা হয়ে থাকে ডিপিএস।

আপনি যদি উক্ত আলোচনাটি অনসুরণ করে থাকেন। তাহলে বুঝতে পারছেন যে, ডিপিএস মূলক কি। আর যদি না বুঝে থাকেন। তাহলে আমাদের দেওয়া লেখাটি আরো একবার পড়ে নিন।

কেন ডিপিএস করবেন ?

উক্ত আলোচনাতে আপনারা জেনে নিতে পারলেন ডিপিএস কি? উক্ত ডিপিএস কি এই বিষয়ে জানার পরে আপনার এখন প্রশ্ন হতে পারে যে, একজন লোকের কেন ডিপিএস করা প্রয়োজন।

কারণ আপনি যদি ডিপিএস করেন। তাহলে সেখান থেকে আপনি অনেক ‍গুলো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আপনার মনে যদি এই সকল প্রশ্ন আসে। তবে আমি আপনাকে বলব। আপনি ভবিষ্যতের জন্য অবশ্যই ডিপিএস করা প্রয়োজন।

কারণ আপনি বর্তমান সমমে, যা কিছু ইনকাম করছেন। আপনার যতটুকু টাকা আয় হয়।

সেই টাকার মধ্যে কিছু পরিমানের টাকা আপনার নিকটবর্তী একটি ব্যাংক এ জমা রাখতে পারবেন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।

এছাড়া, আপনি যখন কোন একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলে সেখানে আপনার জমাকৃত টাকা রাখবেন। তখন আপনি নির্দিষ্ট একটি সময় সেই জমা রাখা টাকার উপর ভালো পরিমাণের সুদ পেয়ে যাবেন।

সেই ক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা জমা থাকলে সেই টাকার পরিমাণ কিন্তু অবশ্যই বাড়বে। আর জীবনে চলার পথে বলা তো যায় না কখন কোন অঘটন ঘটে যায়।

তাই নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করে আপনার ব্যাংকের মাধ্যমে ডিপিএস করা প্রয়োয়জন। আপনি যদি উক্ত বিষয়টি মনযোগ দিয়ে পড়েন।

তাহলে আপনিও বুঝতে পারছেন যে, ডিপিএস করা কতটা প্রয়োজন। আর যদি পুরোপুরি না বুঝতে পারেন। তাহলে দয়া করে উক্ত আলোচনাটি আরো একবার পড়ে নিন।

ডিপিএস এর কাজ কি ?

আমাদের এই পোস্টের এতদূর আসার পরে আপনার মধ্যে ডিপিএস কি এবং কেন ডিপিএস করার দরকার। সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

কারণ উক্ত আলোচাতে আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি, ডিপিএস কি? এখন আমি আপনাকে জানিয়ে দেব, ডিএসএস এর কাজ কি?

আমরা যখন কোন একটি ব্যাংক থেকে ডিপিএস সিস্টেম চালু করি। তখন সেই ব্যাংক এর আওতাধীন গ্রাহক তাদের ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে তাদের অর্থকে সঞ্চয় করে, রাখতে পারেন।

এছাড়া এই ধরণের টাকা সঞ্চয় স্কিম গুলো বিভিন্ন মেয়াদের হয়। যেমন- কিছি ডিপিএস আছে ২ বছর থেকে ৫ বছর। আবার কিছ ডিপিএস আছে ১০ বছর এর জন্য।

আপনি যখন কোন একটি ব্যাংক এর আওতায় নিজস্ব একটি ডিপিএস একাউন্ট খুলবেন। সেই সময় আপনি আপনার নির্দিষ্ট কিছু পরিমাণের টাকা সেই একাউন্টে জমা করে রাখতে পারবেন।

আপনার জমাকৃত টাকা থেকে যখন নির্দিষ্ট সময়ে আপনার ডিপিএস টি ভাঙ্গবেন। তখন সেই ব্যাংক থেকে আপনাকে জমাকৃত টাকা সহ আরো অনেক পরিমাণের সুদ প্রদান করা হবে।

মানে, আপনি কোন ব্যাংকে ডিপিএস খোলার পরে যে পরিমানের টাকা জমা করবেন। সেই টাকার উপার মাসিক যে সুদ আসবে। সেই সুদ এর টাকা সহ আপনারা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে, সম্পূন্ন গ্রহণ করতে পারবেন।

কত ধরনের ডিপিএস আছে : ডিপিএস কত প্রকার ?

উক্ত আলোচনাতে ডিপিএস কি? ডিপিএস  কেন করবেন? এবং ডিপিএস এর কাজ কি? সেই প্রেক্ষিতে এখন আমি আপনাকে জানিয়ে দেব। কত ধরণের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস কত প্রকার এই সম্পর্কে।

আপনি যদি জানতে চান। কত ধরণের ডিপিএস আছে বা ডিপিএস কত প্রকার সেই বিষয়ে জানতে নিচে দেওয়া তথ্য গুলো মনযোগ দিয়ে পড়ুন। যেমন-

মাসিক ভিত্তিক ডিপিএস

আপনারা প্রতি মাসে যে পদ্ধতিতে কিস্তির মতো করে, যে ডিপিএস এর মাধ্যমে আপনার টাকা জমা করবেন। সেই ধরণের ডিপিএস গুলো কে বলা হয় মাসিক ভিত্তিক ডিপিএস।

মাসে এই সকল ডিপিএস গুলোতে আপনাকে পুরো মাসে অন্তর অন্তর টাক জমা করতে হবে। এছাড়া এই ধরণের মাসিক ভিত্তিক ডিপিএস গুলো নির্দিষ্ট একটি সময় আছে।

আপনি যখন সেই সময়সীমা পর্যন্ত আপনার ডিপিএস এর টাকা জমা করে রাখতে পারেন। তখন আপনাকে সেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা জমা করে রাখার জন্য কিছু পরিমাণের সুদ প্রদান করবে।

আর সেই ধরণের মাসিক ভিত্তিতে ডিপিএস গুলোতে আপনি 500 টাকা থেকে শুরু করে 5000 টাকা ডিপিএস পর্যন্ত জমা করে রাখতে পারবেন।

এককালীন ডিপিএস

উক্ত আলোচনা থেকে আপনি ডিপিএস এর প্রথম অংশ মানে মাসিক ভিত্তিতে সম্পর্কে জেনে নিয়েছেন। কিন্তু এটি ছাড়াও কিন্তু আরও অনেক ধরনের ডিপিএস আছে যাকে বলা হয়ে থাকে এককালীন ডিপিএস।

কিন্তু জানার বিষয় হচ্ছে এই এককালীন ডিপিএস কি। এ ধরনের বিশেষ ডিপিএস গুলোতে আপনি একবার বেশি পরিমাণে টাকা জমা করে রাখতে পারবেন।

এবং সেটা আপনি নির্দিষ্ট কোন একটা সময় পর্যন্ত কোন একটি ব্যাংকে জমা রাখবেন।

আর যখন সেই নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যাবে তখন আপনি আপনার জমাকৃত টাকার ওপর ব্যাংক থেকে গ্রহণ করতে পারবেন।

মানে আপনি যদি 1 লক্ষ টাকা এককালীন ডিপিএস হিসেবে কোন ব্যাংকে রাখেন। সে ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে আপনাকে সেই নির্দিষ্ট সময়ের পরে।

এক লক্ষ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি। সেই ১ লক্ষ টাকার ওপরে যে, পরিমাণ সুদ আসে সেটি আপনাকে প্রদান করা হবে।

কোন ব্যাংক গুলো ডিপিএস সেবা দিচ্ছে ?

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি ভাবে অনেক ধরনের ব্যাংক আছে কিন্তু জানার বিষয় হচ্ছে যে এসকল ব্যাঙ্গালোর মধ্যে আপনি কোন ব্যাংকের মাধ্যমে ডিপিএস করে টাকা জমা করে, বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

সে বিষয়ে জানতে হলে, অবশ্যই আপনাকে নিচের দেওয়া তথ্যগুলো অনুসরণ করতে হবে।

সেখান থেকে আপনারা জানতে পারবেন। কোন ব্যাংক ডিপিএস সেবা প্রদান করে থাকে। আমরা আপনার জন্য কিছু ব্যাংকের তালিকা যুক্ত করেছি সেগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন। যেমন-

  • ডাচ বাংলা ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক লিমিটেড
  • ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড
  • জনতা ব্যাংক লিমিটেড
  • সোনালী ব্যাংক লিমিটেড
  • স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড
  • পূবালী ব্যাংক লিমিটেড
  • ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড
  • আই এফ আই সি ব্যাংক লিমিটেড ইত্যাদি

বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ থেকে যে সকল ব্যাংকের ডিপিএস এর পরিষেবা প্রদান করেছে সেগুলো উক্ত তালিকায় দেখতে পাচ্ছেন।

আমরা আশা করি, আপনি এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিয়ে। সেখানে আপনার নির্ধারিত একটি ডিপিএস খুলতে পারেন।

তো বন্ধুরা এখন আমরা আপনাকে জানিয়ে দেবো। ডিপিএস এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো সম্পর্কে। আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে নিচের তথ্যগুলো দেখুন।

ডিপিএস এর সুবিধা ?

আপনি যদি আপনার টাকা সঞ্চয় করার জন্য ডিপিএস খুলেন তবে। আপনি কিছু সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সে সুবিধা গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। যেমন-

আমার আপনার মত যেকোনো ব্যক্তি এ ধরনের ডিপিএস গুলো খুলতে পারবে।

আপনি যদি কোনো সরকারি বা বেসরকারি চাকরিজীবী হন এবং সে চাকরিতে বেতন যদি ব্যাংকের মাধ্যমে সংযুক্ত করা থাকে।

তাহলে অটোমেটিকভাবে তারা আপনার বেতন থেকে টাকা কেটে নেবে। যার ফলে আপনার কষ্ট করে, ডিপিএস এর জন্য। আলাদা ভাবে টাকা জমা করতে হবে না।

আপনারা যে, কোন সময় আপনার সেই ডিপিএস কে ভেঙে ফেলতে পারবেন।

আপনি যদি কোনো কারণে ডিপিএস এর টাকা জমা না দিতে পারেন সেক্ষেত্রে কখনো আপনার সেই টিভিএস অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হবে না।

এছাড়া একই ডিপি আছে আপনি যত বেশি টাকা রাখবেন। সেই টাকার উপর ভিত্তি করে, আপনাকে সুদ প্রদান করা হবে।

উপরের যে সুবিধাগুলো আপনারা দেখতে পাবেন এগুলো ছাড়া আরও অসংখ্য সুবিধা রয়েছে। আপনি যখন ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং টাকা জমা করবেন তখনই বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।

ডিপিএস এর অসুবিধা

ডিপিএস খোলার পর আপনারা অসংখ্য পরিমাণের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন কিন্তু এসবের পেছনে কিছু অসুবিধা রয়েছে।

সে সম্পর্কে আমরা এখানে জানিয়ে দেবো। আপনি যদি ডিপিএসের অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে নিচের তথ্যগুলো ধাপ অনুসরণ করুন।

আপনি যদি কোনো কারণে চলতি মাস এর ডিপিএস এর টাকা জমা করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনার এই পেজটি বন্ধ হয়ে যাবে না। কিন্তু পরবর্তী মাসে আপনাকে দুই মাসের কিস্তি একসাথে পরিশোধ করতে হবে্

আপনি যদি পরপর তিন মাস আপনার ডিপিএস এর টাকা জমা করতে না পারেন। সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার সেটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

এছাড়া আবার যদি কোন কারণে আপনার ডিপিএস বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে আপনাকে পুনরায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

এবং আপনার জরিমানা প্রদান করার পরে সে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট অন্যরাই চালু করতে হবে।

আমরা সব সময় মনে করি যে কোন জিনিসের ভালো দেখে এবং খারাপ দিক রয়েছে। ঠিক সেইভাবে আপনারা ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার পর সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

তবে এখানে কিছু অসুবিধাও দেখতে পারবেন সেগুলো আপনার ব্যক্তিগত কারণে হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ

শেষ কথাঃ

বন্ধুরা আপনি যদি টাকা সঞ্চয় করে রাখতে চান? এবং সে সময় থেকে বাড়তি কিছু টাকা লাভ করতে চান? তবে আপনার জন্য সবথেকে ভালো দিক হচ্ছে, ডিপিএস করা।

কারণ আপনি আপনার টাকা স্বল্পমেয়াদী দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে জমা রাখতে পারবেন। এবং সেই জমাকৃত টাকার বিনিময়ে আপনি ভালো করে পরিমাণের সুদ অর্জন করতে পারবেন।

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। ডিপিএস কি এবং ডিপিএস সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলী সম্পর্কে।

এখন ডিপিএস আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

আর বিশেষ করে, আমাদের ওয়েবসাইট থেকে নতুন নতুন ব্যাংকিং আর্টিকেল পেতে চাইলে, নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment