মেয়েদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং – মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন। সুবিধা গুলো জানুন!

আমাদের জানামতে অনলাইন সেক্টরে সব থেকে জনপ্রিয় একটি কাজের নাম হল- ফ্রিল্যান্সিং। আর ফ্রিল্যান্সিং করে, অনেক ছেলেমেয়েরা এখন নিজের ঘরে বসে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছে।

কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি দেশের একটি জরিপের মাধ্যমে জানা গেছে, ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে 96% ছেলে এবং বাকি 4% মেয়েরা এই ফ্রিল্যান্সিং কাজের সাথে জড়িত। এই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে মেয়েরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

মেয়েদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং - মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন।
মেয়েদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং – মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন।

তবে আপনার যদি মেয়ে হয়ে ছেলেদের মত ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের ঘরে বসে ইনকাম করতে চান? তাহলে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

বিশেষ করে মেয়েদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আমি বিস্তারিত তথ্য দেব। মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং করলে কি কি সুবিধা রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত।

আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে নির্দিষ্ট কোনো ফ্রিল্যান্সিং কাজের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। যেমন- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও এক্সপার্ট, কন্টেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়ারসহ আরো অসংখ্য কাজ রয়েছে।

যেগুলোর মধ্যে একটি কাজের ওপর নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারলে, ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রচুর ইনকাম করতে পারবেন।

আমরা জানি ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে এখন আলোচিত একটি বিষয়। বিশেষ করে তরুণ যুব সমাজের কাছে।

যারা লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি কাজ যেখানে যে কেউ তার মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে শূন্য থেকে ভালো সফলতা নিয়ে আসতে পারে।

বাংলাদেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে এখন প্রতিদিন প্রায় কয়েক লাখ টাকা ইনকাম করছে, ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে।

তবে আমরা আগেই বলেছি, এ সকল ছেলেমেয়েদের মধ্যে, ফ্রিল্যান্সিং কাজের ছেলেরাই বেশি যুক্ত রয়েছে। তার মধ্যে মেয়েরা মাত্র ১% এরও কম।

তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই হারের সংখ্যা অনেক বেশি। তার কারণ ঘরে বসে নিজের পছন্দের সময় অনুযায়ী কাজ করার স্বাধীনতা, মূলত মেয়েদের একে বড় উন্মোচনকারী সুযোগ।

যদি তাই হয় বাংলাদেশের মেয়েরা কেন এই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আসছে না। কেন ইন্টারনেট জগতে মেয়েদের উপস্থিতি এতটা কম। আর ফ্রিল্যান্সিং কাজের মেয়েরা কেন বা মেয়েদের এতটা অনীহা।

তো চলুন জেনে নেয়া যাক, ইন্টারনেটে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং কাজে মেয়েদের এই পিছিয়ে থাকার কারণ গুলো সম্পর্কে বিশ্লেষণ করি।

মেয়েরা ফ্রিল্যানিসং বিষয়ে কম জানে?

উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ অনেক কম। সামাজিক এবং পারবারিক বিভিন্ন কারণে মেয়েরা পড়াশোনা দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে না।

যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রেই নারীদের অনেক প্রতিবন্ধীকতার সম্মুখীন হতে হয় সেখানে প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা না থাকাই স্বাভাবিক।

কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক মেধাবী। একটু সুযোগ পেলে তারা পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় খাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তবে যথেষ্ট প্রযুক্তি জ্ঞানের অভাবে, বাংলাদেশের মেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে খুব একটা জানেনা। তাই অনেক সম্ভাবনাময় এই হাতে তাদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম।

মেয়েদের আত্মবিশ্বাস অনেক কম?

আমাদের বাংলাদেশের মেয়েদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই কম। অনেকেই মনে করে আমি কি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারব। আর ফ্রিল্যান্সিং কাজ করলে লোকে কি বলবে।

বর্তমানের এই আধুনিক যুগে এসেও এই চিন্তা গুলো অধিকাংশ মেয়ের মধ্যে রয়েছে। যার ফলে কোন কাজ শুরু করার আগে এই নেতিবাচক ধারণা গুলো তাদের সফলতার মুখ দেখায় না।

বর্তমান সময়ে অনেক মেয়ে সকল ফ্রিল্যান্সার হয়েছেন। আমাদের এই উপমহাদেশে বিশেষ করে, পাকিস্তান, ভারত এ বছর পরিমাণের মেয়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজে যুক্ত রয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরে সফলতার সাথে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা রোজগার করছে।

তাই অনলাইন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চাইলে আত্মবিশ্বাস আনতে হবে। সবাই পারলে আপনি কেন পারবেন না। তারা যেভাবে পারিবারিক অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয় এ সফলতা অর্জন করছে। মন চাইলে আপনি ও তাদের মত ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবে তা জানে না?

আমাদের বাংলাদেশে অনেক মেয়েরা ইন্টারনেট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখে। অনেকেই কিছু না কিছু কার সম্পর্কে জানে। তবে তারা অনলাইনে এই কাজগুলো কিভাবে শুরু করবে সে বিষয়ে বুঝে উঠতে পারে না। এটি হচ্ছে মেয়েদের প্রধান সমস্যা।

আমাদের দেশে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শেখানোর চেয়ে, নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে বেশি পছন্দ করে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের জ্ঞানটা ঠিকমতো যায় না। যার ফলে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে না কিছুই।

ভালো মাইন্ডের শিক্ষকের অভাবে অনেক মেয়েদের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও তারা ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে পারছে না।

ফ্রিল্যান্সিং কাজে সঠিক গাইড লাইনের অভাব?

অনেক মেয়ে মনে করে থাকে ফ্রিল্যান্সিং মানে ওয়েব ডিজাইন কিংবা গ্রাফিক্স ডিজাইন। তাই মেয়েরা বলে আমি তো এগুলোর কোন কিছুই পারি না।

এখন আমি কিভাবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করব। তবে আমি বলব মেয়েদের এই ধারণা টি সঠিক নয়। ফ্রিল্যান্সিং মানে যে শুধুমাত্র গ্রাফিক্স ডিজাইন আর ওয়েব ডিজাইন তা কিন্তু নয়।

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এমন অসংখ্য কাজ রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং পাশা যেমন স্বাধীন তেমন ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনার কাজ গুলো উন্মুক্ত।

আপনি যদি ভালো লেখালেখি জানেন। সে ক্ষেত্রে আপনি কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ পাবেন। আবার আপনি যদি ছবি একটা পছন্দ করেন সে ক্ষেত্রে আপনি আর্টিস্ট এর কাজ পাবেন।

আবার আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে ভালো ভয়েজের অধিকারী হয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ভিডিওর জন্য নিজের কন্ঠ ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারবেন।

মূলত ফ্রিল্যান্সিং একটি ভালো ক্যারিয়ারের মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রতিটি মানুষের মেধা এবং প্রতিভার মূল্য প্রদান করা হয়। তাই আপনারা যে কোন বিষয়ে ভালো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হলে সে অনুযায়ী কোনো না কোনো একটি কাজ খুঁজে পেয়ে যাবেন।

মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন – মেয়েরা কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন?

আপনি যদি যথেষ্ট ধনী পরিবারের সন্তান হয়ে থাকেন। তারপরেও আপনার ফ্রিল্যান্সিং শাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে হতে পারে আপনি যথেষ্ট সচ্ছল।

তবে আপনাকেও কাজ করতে হবে। যারা জীবনে বড় কিছু করেছে। তারা কিন্তু অবশ্যই কোন কাজের মাধ্যমে পেয়েছে।

তাই আসুন জেনে নেয়া যাক। মেয়েদের কেন ফ্রিল্যান্সিং করা প্রয়োজন বা মেয়েরা কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন।

আমাদের বাংলাদেশের ধর্ষণের সংখ্যা এখন অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে, ঘরের বাইরে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ধর্ষণের পরিমাণ এখন এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে মেয়েদের জন্য বাইরে কাজ করা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিজের ঘরে বসে নিরাপত্তার সাথে স্বাধীনভাবে এমন একটি পথ চালু রয়েছে সেটি হল- ফ্রিল্যান্সিং।

আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নিয়ম হলো ছেলেরা বাইরে কাজ করবে, আর মেয়েরা বাসায় থেকে সাংসারিক কাজ করবে। তবে বর্তমানে এই ধারণাটা পাল্টে গেছে।

এখন অনেক শিক্ষিত স্বামী তার স্ত্রীকে বাইরে কাজ করানোর জন্য আগ্রহ প্রদান করে। তবে আপনি যদি একান্তই বাইরে যেতে না চান? সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আপনার ঘরে বসে ইনকাম করার হাতিয়ার।

যার ফলে স্বামীর পাশাপাশি আপনিও পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা বয়ে আনতে পারবেন।

আমাদের বাংলাদেশ যেহেতু ইসলাম ধর্মালম্বী বেশি। কিন্তু বেশিরভাগ মেয়েরাই পর্দা করে না। তবে তার মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা পর্দা করেন।

আর তাদের জন্য বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই নিজের ঘরে বসে স্বাধীনভাবে পর্দার সহিত কাজ করতে চাইলে, ফ্রিল্যান্সিং শিখে ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন।

যার ফলে, আপনার নিজের ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা হবে, সেই সঙ্গে আপনার পর্দা ভঙ্গ করতে হবে না।

তো শেষ মতে আমি আপনাকে একটি বিষয় বলতে চাই সেটি হলো আপনি যদি অনলাইন সেক্টরে কাজ করতে চান তাহলে, অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে প্রায় 200 বেশি কাজ আছে।

আপনারা যে কোন একটি কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারেন।

শেষ কথাঃ

সুপ্রিয় দর্শক ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে হাজার হাজার কাজ রয়েছে। আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে নিজের সংসারের হাল ধরতে চান?

তাহলে নিজের ঘরে বসে স্বাধীনভাবে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘন্টা সময় ব্যয় করে, ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে ছোট ছোট কাজ করার বিনিময়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

তো সর্বশেষ আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে যদি ভালো লাগে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। সেই সাথে এটি আপনার বন্ধুদের কে জানানোর জন্য একটি সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করে দিবেন।

আর আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আরো নতুন নতুন টিপস জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন

ধন্যবাদ।

Leave a Comment