অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি – বিস্তারিত এখানে!

বর্তমান সময়ে, যারা বিভিন্ন জমির মালিক রয়েছেন। এখন আপনার জমি যদি খারিজ না হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি জমি বিক্রি করতে চাইলে, বিক্রি করতে পারবেন না।

কারণ আপনার জমি যদি খারিজ করা না থাকে, তাহলে কেউ কিনবে না। তাই যারা অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি জানতে চান? তারা একদম সঠিক আর্টিকেলে চলে এসেছেন।

এখন আপনি যদি একজন জমি ক্রেতা হয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যার জমি কিনবেন। সেই বিক্রেতার থেকে আপনার চাহিত জমি খারিজ করে নিতে হবে।

আবার আপনি যদি জমি বিক্রেতা হয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ক্রেতার নিকট জমির খারিজ করে দিতে হবে।

জমি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে জমি খারিজ করার পদ্ধতি গুলো জেনে রাখতে হবে। আর তাই আমরা আজকে অনলাইনে জমির খারিজ করার পদ্ধতি জানিয়ে দেব। আপনি যদি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে চান, আমাদের লেখাটির শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি - বিস্তারিত এখানে!
অনলাইনে জমি খারিজ করার পদ্ধতি – বিস্তারিত এখানে!

জমি খারিজ কি?

জমি খারিজ এমন একটি আইনী প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে একজন জমির মালিক, তার নির্দিষ্ট জমি অন্য ব্যক্তির কাছে টাকার বিনিময়ে হস্তাক্ষর করেন।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন মালিক জমির মালিকানা ভোগ করেন। পুরাতন মালিক তার জমির মালিকানা নতুন মালিকের কাছে টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর করে দেন।

সাধারণভাবে আপনার যদি নির্দিষ্ট কোন জমি থাকে।

তাহলে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিক্রি করতে পারবেন।

যখন জমি বিক্রি করবেন তখন অবশ্যই যিনি জমি কিনবেন তার নিকট খারিজ করে দিতে হবে।

এক্ষেত্রে জমি খারিজ করার জন্য, আপনাকে খারিজ করার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে হবে।

বিক্রি করার আগে খারিজ করে নিবেন আর খারিজ করার জন্য দালালের খপ্পরে পরে পড়বেন না। আপনি চাইলে নিজের জমির খারিজ নিজেই করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনি যদি একজন জমি ক্রেতা হয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জেনে নেয়া উচিত, জমি ক্রয় করার পূর্বে করণীয়গুলো সম্পর্কে।

জমি খারিজ করার পদ্ধতি

আপনার ব্যক্তিগত কোন জমি খারিজ করতে চাইলে, বিশেষ করে জমির মালিকানা অন্য কারো কাছে হস্তান্তর  করতে চাইলে, নিচে দেওয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে, জমির খারিজ প্রক্রিয়া জেনে নিন।

জমির নতুন দলিল তৈরি করে নিন

জমির বর্তমান মালিক এবং জমি ক্রেতার মধ্যে একটি নতুন দলীল তৈরি করতে হবে।

অবশ্যই ভূমি মন্ত্রণালয়ের যেকোনো রেজিস্টার অফিসে গিয়ে উক্ত জমির দলিল রেজিস্টার্ড করতে হব।

নতুন জমির দলিলে জমির বিবরণ যেমন – জমির পরিমাণ কতটুকু, জমির অবস্থান কোথায় বিক্রয়কৃত জমির দাম, জমির টাকা পরিশোধের শর্তাবলী এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

নতুন জমির দলিলটি অবশ্যই নোটারী পাবলিকের সামনে স্বাক্ষরযুক্ত করতে হবে।

ই-নামজারি আবেদন করে নিন

জমির খারিজ করার জন্য অবশ্যই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসের নিকট জমির নামজারি আবেদন করে নিতে হবে।

সকল নামজারি আবেদন গুলো এখন অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব হয়।

আর নামজারি অনলাইন আবেদন গুলোকে মূলত ই নামজারি বলা হয়।

অনলাইনের মাধ্যমে ই নামজারি আবেদন করা যায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই https://mutation.land.gov.bd অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে। 

ওয়েবসাইটে ভিজিট করে, একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নেবেন। তারপর নামজারি আবেদন করার সময় অবশ্যই কয়েকটি বিষয় আপনাকে আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

  • আপনার জমির দলিলের একটি কপি।
  • বর্তমান জমির মালিক ও আগ্রহী জমি ক্রেতার পরিচয়।
  • আরো প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র।

উপরে দেয়া তথ্য অনুযায়ী আবেদন সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে, অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আপনাকে শুনানির জন্য ডাকবে।

আপনার আবেদন পত্রটি যদি ট্র্যাক করতে পারেন তাহলে, জেনে নিতে পারেন। আপনার ই নামজারি আবেদন সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে।

নামজারীর শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে হবে

আপনারা যখন ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিকট নামজারি আবেদন সম্পন্ন করবেন। তখন আপনাকে সেখান থেকে শুনানির জন্য ডাকা হবে।

সেখানে অবশ্যই জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে উভয়কেই ডাকবে।

সেই সঙ্গে জমি সংক্রান্ত এবং তাদের দাবি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করব।

নামজারি আদেশ জারি এবং মালিকানা পরিবর্তন

ভূমি মন্ত্রণালয় এর জাজ বা কর্মকর্তাগণ শুনানির পরে একটি নামজারি আদেশ জারি করবে।

সেই আদেশের মাধ্যমে নতুন মালিক জমির মালিকানা বুঝে নিবে।

সেই সাথে পুরাতন মালিক তার জমির মালিকানা নতুন জমি ক্রেতাকে হস্তান্তর করে।

উপরে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো অনুসরণ করে জমির মালিকানা হস্তান্তর বা জমি খারিজ করতে পারবেন।

জমি খারিজ করতে যেসকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে সেগুলোর নিম্নরুপ:

  • জমি ক্রেতা ও বিক্রেতা জাতীয় পরিচয় পত্র।
  •  জমি ক্রেতা ও বিক্রেতা ছবি।
  • জমি ক্রেতা ও বিক্রেতার স্বাক্ষর।
  • নতুন জমির দলিলের কপি।
  • সর্বশেষ হালনাগাদ করা জমির খতিয়ান পত্র।
  • জমির ওয়ারিশ সনদপত্র।

জমি খারিজ করার প্রয়োজনীয় ফি

আপনি যদি জমি খারিজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিতে হবে।

জমি খারিজ করার ফি কত হবে। সেটি নির্ভর করবে জমির পরিমাণের ওপর এবং এলাকার উপর ভিত্তি করে।

বিশেষ করে জমি খারিজ করার জন্য দলিল করতে আপনার খরচ কত হতে পার।  নামজারি আবেদন করতে খরচ কত হতে পার।  এবং শুনানির সময় আপনার টাকা খরচ কত হতে পারে।

তাছাড়া আপনি যদি ২য় পক্ষের মাধ্যমে আপনার জমি খারিজ করতে চান সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা খরচ হতে পারে।

আপনারা কোন কোন খাতে টাকা খরচ করতে হবে সেগুলো নির্ধারণ করে সর্বশেষ একটি হিসাব করবেন। তাহলেই বুঝে যাবেন খারিজ করতে কত টাকা খরচ হল।

শেষ কথা

তো বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারলেন। অনলাইনে জমি খারিজ কাটার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

এখন আপনার যদি জমি খারিজ করার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন।

আর আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে জমি সংক্রান্ত আরো বিভিন্ন আপডেট জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন।

ধন্যবাদ।

Leave a Comment