ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় । ফেসবুক থেকে ইনকাম ২০২৩

ফেসবুক থেকে ইনকাম ২০২৩: ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়।  সাধারণ মানুষজন অযথাই ফেসবুকে প্রচুর সময় নষ্ট করে। সারাদিন শুয়ে বসে মেতে থাকে চ্যাটিং কিংবা কার স্ট্যাটাস কেমন দেখা নিয়ে।

অপরদিকে, কিছু মানুষ জানার চেষ্টা করে কিভাবে ফেইসবুককে কাজে লাগিয়ে কিভাবে সফল হওয়া যায়, বাড়ানো যায় নিজের দক্ষতা।

যেহেতু, আপনি গুগলে সার্চ দিয়ে এই আর্টিকেলটি পেয়েছেন এবং বিপুল আগ্রহের সঙ্গে পড়াও শুরু করে দিয়েছেন, তাই অবশ্যই আপনি জ্ঞান পিপাসুদের দলেরই কেউ একজন।

ফেইসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়
ফেইসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়

facebook থেকে টাকা ইনকাম

এই আর্টিকেলে আমি সরাসরি Facebook থেকে টাকা ইনকাম করার  নিজস্ব কিছু সিস্টেম (যেমন: ফেইসবুক মনিটাইজেশন বা In Stream Ads, Instant Article এবং Brand Collabs Manager প্রোগ্রাম) সম্পর্কে আলোচনা করবো। পাশাপাশি অবসারসময়কে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ফেসবুক থেকে ইনকাম এর পথ প্রশস্ত করা যায়, সেসব নিয়েও আলোচনা করব।

ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় (Earn From Facebook)

আপনি যদি ফেসবুকে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমেই আপনাকে পার্সোনাল আইডি এবং ফেইসবুক পেজের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে। অনেকেই এই দুইটি টার্ম প্রায়ই গুলিয়ে ফেলে।

আপনি যদি ফেসবুকে রেজিস্ট্রেশন করে একটা আইডি খোলেন, তবে সেটাই হবে আপনার পারসোনাল ফেইসবুক আইডি। আর facebook আইডি সবসময়ই আপনার নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।

অন্যদিকে ফেসবুক আইডি থেকে নিজের ব্যবসা বা শখের জন্য তৈরী করা প্রোফাইলগুলো হলো ফেইসবুক পেজ। এসব ফেসবুক পেজ সাধারণত ব্যবসায়ীক কাজে ব্যবহার করা হয়।

ফেসবুকে পার্সোনাল আইডি থেকে টাকা ইনকাম করার বিশেষ কোনো সুযোগ নেই। ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করার সকল উপায়ই মূলত ফেইসবুক পেজ নির্ভর।

ফেইসবুক পার্সোনাল আইডি দিয়ে টাকা আয়

বর্তমানে কিছু ওয়েবসাইট ফেসবুকে লিংক শেয়ার করিয়ে টাকা ইনকামের সুযোগ করে দিয়েছে। Hotovaga.com সেইসব ওয়েবসাইটের মধ্যে অন্যতম একটি। এটি একটি বাংলাদেশি আইটি কোম্পানী।

এখানকার আর্টিকেলগুলো প্রতিদিন facebook আইডি দিয়ে শেয়ার করলে তারা মাস শেষে সাধারণত ৬ শত থেকে ১ হাজার টাকা করে দেয়।

hotovaga.com এর লিংক শেয়ার করে টাকা আয় করার ক্ষেত্রে আপনার ফেসবুক আইডিটিকে অবশ্যই জেনুয়িন হতে হবে, ফেইক হলে চলবে না। ফেইসবুক ফ্রেন্ড সংখ্যা মিনিমাম ৫০০ হতে হবে এবং সকল পোস্টের প্রাইভেসী পাবলিক করা থাকতে হবে। প্রোফাইল লক রাখা যাবে না।

বাংলাদেশী সাইট হওয়ায় hotovaga.com থেকে পেমেন্ট পাওয়া খুবই সহজ। বিকাশ বা রকেট দিয়েই মাস শেষে পেমেন্ট নেয়া যায়।

ফেসবুক পেজ দিয়ে টাকা ইনকাম ২০২৩

ফেইসবুক থেকে ইনকাম করার বিষয়ে সিরিয়াস থাকলে এবং স্বপ্নের পরিধি অনেক বড় হলে, ফেইসবুক পেজের মাধ্যমে আপনি তা পূরণ করতে পারবেন। নিচে facebook থেকে ইনকাম করার উপায়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

#১ In Stream Ads এর মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে ইনকাম

আপনি নিশ্চয়ই ফেসবুকে ভিডিও দেখার সময় খেয়াল করেছেন, কিছু ভিডিও এর শুরুতে, মাঝখানে কিংবা শেষের দিকে ছোট ছোট বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়। এসব বিজ্ঞাপনগুলোকেই In Stream Ads বলা হয়ে থাকে।

ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করার ক্ষেত্রে In Stream Ads ব্যবহার করা বেশ লাভজনক একটি উপায়। বর্তমানে যারা ভিডিও আপলোড করে ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম (Make money with facebook)  করতে চাচ্ছে, তাদের মুল টার্গেটই থাকে এধরণের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকের কাছ থেকে এ্যাপ্রুভাল আদায় করা।

In stream ads ব্যবহার করে ফেসবুক মনিটাইজেশন করার শর্তসমূহ

ফেসবুকে পেজ খুলে ইচ্ছেমতো ভিডিও আপলোড করা শুরু করে দিলেই আপনার ভিডিওতে ln Stream Ads প্রদর্শিত হবে না। ভিডিওতে In Stream Ads পেতে হলে ফেসবুকের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। শর্তগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • একটা ফেইসবুক পেজ থাকতে হবে।
  • facebook পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ১০,০০০ বা এর বেশি হতে হবে।
  • পেজটির ভিডিওগুলোতে বিগত ৬০ দিনে কমপক্ষে (১ মিনিটের বেশি সময় যাবৎ দেখা হয়েছে এমন) ৩০,০০০ ভিউ থাকতে হবে। যেসকল ভিডিও ৩ মিনিটের বেশি সময়ের, শুধুমাত্র সেগুলোই এক্ষেত্রে কাউন্টের মধ্যে পড়বে।

শর্তগুলো দেখে ফেইসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা খুব কঠিন মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটা কিন্তু কঠিন কিছু নয়। ৩০-৩৫ টা ভিডিও আগেই বানিয়ে নিয়ে সেগুলো একসাথে ফেসবুকে আপলোড করলে সবগুলো ভিডিও মিলিয়ে ২ মাসে ৩০ হাজার ভিউ পাওয়া খুব কঠিন বিষয় নয়।

কেননা, ফেসবুকে ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং তারা সবসময়ই নতুন ও মানসম্মত কিছু দেখার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকে।

ফেইসবুক In-Stream Ads প্রদর্শনের জন্য আপনার পেজটি উপযুক্ত কিনা জানার উপায়

আপনার ফেইসবুক পেজ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার জন্য যোগ্য হয়ে উঠেছে কিনা বা আপনার facebook পেজের ভিডিওগুলোতে ফেইসবুক In-Stream Ads প্রদর্শন করতে পারবেন কিনা তা জানতে প্রথমেই আপনার পার্সোনাল ফেসবুক আইডিতে লগইন করুন।

তারপর এই লিংকে ক্লিক করে “Go to creator studio” বাটনে চাপ দিন।

যদি আপনার ফেইসবুক পেজ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে ইনকাম করার জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে, তবে সেখানে সবুজ রঙে “Eligible” লেখা থাকবে। আর যদি উপযুক্ত না হয়ে থাকে, তবে লাল রঙে “Not Eligible” লেখা ভেসে উঠবে।

শর্ত পূরণের চেষ্টা করা সত্ত্বেও লাল কালিতে “Not Eligible” লেখা ভেসে উঠলে ফেসবুকের উপরোক্ত শর্তগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করুন এবং সেগুলোর মাঝে কোন শর্তটি পূরণ হয়নি, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।

যদি আপনি ফেসবুকের শর্তসমূহ পূরণ করে ফেলেন এবং এখানে “Eligible” লেখা প্রদর্শিত হয়, তবে Creator Studio থেকেই In Stream Ads চালু করা যাবে। এক্ষেত্রে ফেইসবুক আপনার নির্দিষ্ট কিছু ভিডিওতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিংবা ম্যানুয়ালি In Stream Ads যুক্ত করতে দেবে।

জেনে রাখা ভালো, বিজ্ঞাপনের ধরণ এবং দেখানোর সময়ের ভিত্তিতে In Stream ads কে তিনভাগে ভাগ করা যায়।

সেগুলো হলো:

Pre roll ads: ফেসবুকে কোনো ভিডিও শুরু হওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে যেসব বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়, সেগুলোকে বলে Pre roll ads। এ ধরণের বিজ্ঞাপন সাধারণত কম সময়ের হয়ে থাকে।

নতুন অবস্থায় Pre roll ads ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, অনেক ভিউয়ার শুরুতেই বিজ্ঞাপন দেখলে মূল ভিডিও শুরু হওয়ার আগেই ধৈর্য্য হাড়িয়ে ফেলে। কিন্তু, পরবর্তীতে যখন মানুষ আপনাকে চিনবে, তখন এ ধরণের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করলে ভিউয়ারদের ধৈর্যের বিচ্যুতি ঘটার সম্ভাবনা থাকবে না।

Mid-roll ads: ভিডিও চলাকালীন সময়ে যেসব বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়, সেগুলোকেই Mid roll ads বলা হয়ে থাকে। এসব বিজ্ঞাপন অনেকটাই টিভির বিজ্ঞাপনের মতো হুট করে চলে আসে।

Image ads: এধরনের বিজ্ঞাপন ছবিকেন্দ্রিক। এক্ষেত্রে মূল ভিডিও এর নিচে বিজ্ঞাপনের একটি ছবি বা ব্যানার প্রদর্শিত হয়। আপনি যদি আপনার ভিডিও এর শুরুতে কিংবা মাঝখানে বিজ্ঞাপন ভিডিও প্রদর্শন করতে না চান, তবে এ ধরণের ছবি ভিত্তিক ফেইসবুক বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে পারেন।

আপনি আপনার ভিডিওতে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করিয়ে ফেসবুক থেকে ইনকাম করবেন, সেটা সম্পূর্ণভাবেই আপনার ব্যাপার। বিজ্ঞাপন দেখানোর ক্ষেত্রে স্বাধীনতার এই ব্যাপারটি ভিডিও মেকারদের অনুপ্রেরণা বাড়িয়ে দেয়।

ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করার জন্য ইউটিউব বেশি ভালো? নাকি ফেইসবুক?

অভিজ্ঞদের মতে, ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুকের In Stream Ads ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করার জন্য বেশি লাভজনক। কারণ, ইউটিউবে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনসমূহ ২-৩ সেকেন্ড দেখে স্কিপ করা যায়। এতে ভিডিও মেকাররা বিজ্ঞাপনের পুরো টাকাটা পায় না।

কিন্তু ফেসবুকে এরকম বিজ্ঞাপন স্কিপ করার কোনো সিস্টেম নেই। তাই ভিউয়ারকে বাধ্য হয়েই পুরো ভিডিওটা দেখতে হয় এবং ভিডিও মেকার বিজ্ঞাপনের পুরো টাকাটাই অর্জন করতে পারে।

এছাড়াও, ফেইসবুক অনেক বেশি মানুষের আবাসস্থল হওয়ায় এখানে ভিডিও আপলোডের পর প্রচারণা চালানোও অনেক বেশি সহজ। তাই ভিডিওতে দর্শক আনতে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না।

অন্যদিকে ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করলেও সেটি মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য ফেসবুকে এসেই লিংক শেয়ার করতে হয়। তাই অবশ্যই ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম বেশি সহজ।

ইউটিউবে পাবলিশ করা ভিডিও কি ফেসবুকে পাবলিশ করা যাবে?

ফেসবুকের বর্তমান পলিসি অনুযায়ী, ইউটিউবে পাবলিশ করা ভিডিও ফেসবুকে পাবলিশ করা যাবে, কিন্তু সেক্ষেত্রে ভিডিওটি অবশ্যই আপনার নিজের তৈরী হতে হবে।

ইউটিউবে থাকা অন্যের ভিডিও আপনার পেজে পাবলিশ করলে সঙ্গে সঙ্গেই ফেইসবুক সেটা সড়িয়ে ফেলবে না। কারণ, আপনার ভিডিওটি অন্য প্লাটফর্ম থেকে কপি করা কিনা সেটা বোঝার ক্ষমতা ফেসবুক রোবটের নেই।

কিন্তু, কেউ একজন যদি সেই ভিডিওতে রিপোর্ট মারে, তবে সেটা যাচাইয়ের আওতায় চলে যাবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে আপনার পেজটি পরবর্তী কয়েক মাস কিংবা সারাজিবনের জন্য মনিটাইজেশন বা In Stream Ads এর সুবিধা হাড়িয়ে ফেলবে।

শুধু তাই নয়, ঐ ফেইসবুক পেজে In Stream ads দ্বারা অর্জিত জমা থাকা আগের টাকা পয়সাও বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

#২ ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে ইনকাম ২০২২

ফেসবুকে প্রচুর নিউজ শেয়ারিং পেজ রয়েছে। সেগুলোতে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আর্টিকেলের লিংক প্রচার করা হয়। যে সমস্ত ওয়েবসাইটের লিংক প্রচার করা হয়, সেগুলোর আয়ের একটি বড় উৎস হলো ফেইসবুক প্রদত্ত বিজ্ঞাপন।

তাদের প্রচার করা লিংকে ক্লিক করলে আর্টিকেলের পাশাপাশি আপনি দেখতে পাবেন বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। এ সমস্ত বিজ্ঞাপন সরবরাহ করে স্বয়ং ফেইসবুক। ওয়েবসাইটের মালিক এসব বিজ্ঞাপন প্রচার করে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করে থাকে।

ওয়েবসাইটের আর্টিকেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম (Make money with facebook) করার এই প্রোগ্রামটির নাম হলো “ফেইসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রাম”।

২০১৫ সালে রিলিজ হওয়া “ফেইসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল” প্রোগ্রামটি ব্লগারদের জন্য ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম (Make money with facebook)  করার নতুন একটি সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

ফেইসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামের মজার একটি দিক হলো, এটার মাধ্যমে টাকা ইনকামের ক্ষেত্রে “বিজ্ঞাপন কোথায় বসাবো” টাইপের চিন্তা করতে হয়না। ফেইসবুক স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এ্যাড প্লেসমেন্ট করে দেয়।

“ফেইসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল” প্রোগ্রামের আওতায় থাকা ওয়েবসাইটের পেজগুলো দেখতে অনেকটাই গুগলের AMP পেজের মতো হয়। AMP এর ওয়েবপেজগুলো যেমন দ্রুত লোড নেয়, এসব ওয়েবপেজও ঠিক তেমনই দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়ে থাকে। পাশাপাশি এসব পেজে থাকে প্রচুর বিজ্ঞাপন।

কিভাবে ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামের সাহায্যে ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম (Make money with facebook)  করা যায়?

প্রথমেই বলি, ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামে যুক্ত হতে হলে ইউনিক আর্টিকেলসমৃদ্ধ নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট, একটি ফেইসবুক পেজ এবং ব্যাংক এ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হবে। বলে রাখা ভালো, ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করতে হবে। অনিয়মিতভাবে আর্টিকেল প্রকাশ করা ওয়েবসাইটকে ফেইসবুক সাধারণত এই প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়না।

এই পদ্ধতিতে ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করার জন্য প্রথমেই ফেসবুকের ইন্সট্যান্ট আর্টিকেলে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এরপর তাদের দিক নির্দেশনা অনুসারে আপনার ওয়েবসাইটটি এই প্রোগ্রামের সাথে কানেক্ট করার জন্য আবেদন করতে হবে।

ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে। আবেদন মঞ্জুর হলো কিনা সেটা জানাতে তারা সাধারণত ৩ দিনের মতো সময় নিয়ে থাকে। আবেদন গৃহীত হলে আপনি খুব সহজেই ফেইসবুক থেকে টাকা আয় শুরু করতে পারবেন।

আবেদন গৃহীত হওয়ার পর ওয়েবসাইটের আর্টিকেলগুলো ফেইসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামে সাবমিট করার তিনটি পথ রয়েছে। সেগুলো হলো: API, RSS Feed এবং CMS প্লাগইন (ওয়ার্ডপ্রেস ব্যভারকারীদের জন্য বানানো)।

এসব পদ্ধতিগুলোর মাঝে API তুলনামূলকভাবে বেশি সহজ এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত একটি পদ্ধতি। ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য CMS প্লাগইনও কার্যকরী একটি পন্থা। কিন্তু ফেসবুক তাদের গাইডলাইন ও পলিসিতে কিছুদিন পর পরই পরিবর্তন আনে এবং সেই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে প্লাগিনের ডেভেলপাররা প্লাগিনটি আপডেট করতে পারে না, অনেকটাই দেরী হয়ে যায়। এতে সাময়িক জটিলতার সম্মুখীন হওয়া হতে হয়।

দেখুন: ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল থেকে ইনকাম করার উপায়

ওয়েবসাইটে একইসঙ্গে এ্যাডসেন্স এবং ফেসবুকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যাবে কি?

ফেসবুকের বিজ্ঞাপন এবং গুগল এ্যাডসেন্সের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। গুগল এ্যাডসেন্স দ্বারা প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন যেকোনো ব্রাউজারেই প্রদর্শিত হয়। কিন্তু ফেসবুকের বিজ্ঞাপনগুলো সেরকম নয়।

ফেসবুকের বিজ্ঞাপন শুধুমাত্র ফেইসবুক মোবাইল এ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য। ফেইসবুক পেজে শেয়ার করা লিংকে ঢুকলেই শুধুমাত্র সেই ওয়েবসাইটে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে। অর্থাৎ একই সময়ে যদি কেউ সাধারণ কোনো ব্রাউজার দিয়ে ওই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, তবে কোনো বিজ্ঞাপন সে দেখতে পারবে না।

ফেসবুকের সর্বশেষ আপডেটকৃত পলিসি অনুযায়ী, ফেসবুকের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে একই সময়ে গুগল এ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপনও ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এটা করা উচিৎ নয় এবং এ্যাডসেন্সের জন্য হুমকিস্বরুপ বলা চলে।

কেননা, ফেইসবুক দ্বারা প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলো একটি Iframe এর ভেতর প্রকাশ করা হয়, যা এ্যাডসেন্সের গাইডলাইন ভঙ্গ করে।

তবে আমার পরিচিত অনেক ওয়েবসাইট একই সঙ্গে ফেইসবুক ইনস্ট্যান্ট প্রোগ্রামের বিজ্ঞাপন এবং এ্যাডসেন্সও ব্যবহার করছে। পাশাপাশি তারা এটাও বলছে যে, এতে তাদের ওয়েবসাইটের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না। বরং এ্যাডসেন্স এবং ফেসবুক থেকে ইনকাম মিলিয়ে সম্মিলিত উপার্জন তাদের আরো অনেক বেড়ে গেছে।

ফেইসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রাম থেকে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব?

সত্যি বলতে, ফেইসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রামের আওতায় থাকা বিজ্ঞাপনগুলোর সিটিআর খুবই সামান্য। তবে ফেসবুক পেজ যদি পপুলার হয় এবং সাইটে বেশি সংখ্যক ভিজিটর ভিজিট করে, তবে এই সামান্যই অসামান্যতে রুপ নেয়।

বাংলাদেশের অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেগুলো এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে মাসে হাজার হাজার ডলার আয় করে নিচ্ছে। আবার এমনও অনেক ওয়েবসাইট আছে, যারা তুলনামূলকভাবে কম ইনকাম করে হরহামেশাই ফেসবুকের নিন্দা করছে।

এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে আপনি ঠিক কত আয় করতে পারবেন, তা নিশ্চিতভাবে বলার আমি কেউ নই। তবে মানসম্মত আর্টিকেল এবং অধিক সংখ্যক ভিজিটর টানতে পারলে আয় যে আপনার মন মতোই হবে, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি।

এক্ষেত্রে একটা “কমন” পরামর্শ হলো, উন্নত দেশগুলোতে অবস্থান করা মানুষদেরকে টার্গেট করে আর্টিকেল লিখুন। এক্ষেত্রে ইংরেজীতে আর্টিকেল না লিখে বাংলাতেই লিখতে চাইলে আপনার টার্গেট রাখতে হবে ইউরোপ আমেরিকায় থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের উপর। তাহলে তুলনামূলকভাবে বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

#৩ Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেসবুক থেকে ইনকাম

ফেসবুকের Brand Collabs Manager প্রোগ্রামটি অনেকটাই স্পনসরশীপ প্রোগ্রামের মতো। এর মাধ্যমে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা বা পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বিভিন্ন ফেইসবুক পেজের সাথে চুক্তি করে থাকে।

সহজ কথায়, মনে করুন, ফেসবুকে খাবারের রিভিউ বিষয়ক আপনার একটি পেজ আছে। পেজটিতে মোটামুটি ভালো পরিমাণ ফলোয়ার রয়েছে। এখন, কোনো একটা রেস্টুরেন্ট যদি আপনার ফেইসবুক পেজে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে কিংবা নিয়মিত তাদের রেস্টুরেন্টের পজিটিভ রিভিউ প্রচার করে জনপ্রিয়তা বাড়াতে চায়, তবে Brand Collabs Manager এর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার অনুমতি সাপেক্ষে সেটা তারা করতে পারবে এবং আপনি ঘরে বসে খুব সহজেই তাদের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম (Make money with facebook)  করতে পারবেন।

এই প্রক্রিয়াটি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার অন্যান্য পদ্ধতিগুলোর তুলনায় অনেক বেশি সহজ। এভাবে টাকা উপার্জন করার জন্য আপনার কষ্ট করে নিয়মিত ভিডিও কিংবা আর্টিকেল লিখতে হচ্ছে না। শুধুমাত্র ফেইসবুক পেজের জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে।

তবে ফেইসবুক পেজ থেকে আয় করার এই সহজ পদ্ধতিটি আমাদের দেশে তেমন জনপ্রিয় নয়। তাই বাংলা ভাষায় তৈরীকৃত পেজে এ ধরণের স্পনসর পাওয়া দুষ্কর। Brand Collabs Manager প্রোগ্রামটিকে টার্গেট করে ফেইসবুক থেকে ইনকাম ২০২২ এ করতে চাইলে, ইংরেজী ভাষাকে কেন্দ্র করে ফেইসবুক পেজ তৈরী করা উচিৎ।

Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। সেটি হলো, ফেইসবুক পেজের নিশ!

মনে করুন, আপনি Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেসবুক

থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য একটা পেজ খুলেই ফেললেন। এরপর সেখানে লাইক কমেন্ট পাওয়ার জন্য ফানি ভিডিও বা জোক্স পাবলিশ করা শুরু করলেন! অথচ আপনি মনে মনে আশা করছেন, কোনো ভালো রেস্টুরেন্ট কিংবা প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি আপনাকে স্পনসর করবে!

এরকমটা করলে, কোনো কমেডি নির্ভর প্রতিষ্ঠান হয়তো আপনাকে স্পনসর করলেও করতে পারে, কিন্তু রেস্টুরেন্ট বা প্রযুক্তি বিষয়ক কোনো কোম্পানী আপনাকে কখনোই স্পনসর করবে নাহ। কেননা, Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে নিশ বা পেজে পাবলিশ করা কনটেন্টের বিষয় অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করে।

Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে ইনকাম করার উপায়

Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের মাধ্যমে টাকা আয় করার জন্য In stream Ads এর মতো আপনার ১০,০০০ ফলোয়ারের প্রয়োজন হবে না। মাত্র ১ হাজার ফলোয়ার থাকলেই এই প্রোগ্রামে ফলোয়ারভিত্তিক শর্ত পূরণ হয়ে যাবে।

তবে, শর্ত কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। ১ হাজার ফলোয়ারের পাশাপাশি এনগেজমেন্টভিত্তিক আরো শর্ত আমাদের পূরণ করতে হবে।

এনগেজমেন্টভিত্তিক শর্তগুলো হলো, ৬০ দিনের ভেতর ১৫,০০০ পোষ্ট এনগেজমেন্ট অথবা ৬০ দিনের ভেতর ১৮০,০০০ মিনিট ভিডিও ভিউ অথবা ৩ মিনিটের সব ভিডিও মিলিয়ে ৬০ দিনে ১ মিনিট করে মোট ৩০,০০০ ভিউ পাওয়া।

এখানে বলে রাখা ভালো, ফেইসবুক পেজের পোস্টগুলোতে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের সমষ্টিকে এনগেজমেন্ট বলা হয়। অর্থাৎ আপনার ফেইসবুক পেজে আপলোড করা কোনো পোস্টে যদি কেউ একটা লাইক দেয়, তবে সেই লাইকটা ১ টা এনগেজমেন্ট হিসেবে কাউন্ট হবে।

একইরকমভাবে, কেউ কোনো পোস্টে কমেন্ট ও শেয়ার করলে কমেন্টের জন্য ১ টা এবং শেয়ারের জন্য আরো একটা এনগেজমেন্ট কাউন্ট হয়।

আমি যদি আপনার পেজে ঢুকে আপনার পেজের কোনো পোস্টে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার তিনটাই করে আসি, তবে এর জন্য আপনার পেজে ৩ টা এনগেজমেন্ট বেড়ে যাবে।

আশার ব্যাপার হলো, এসব শর্তের সবগুলোই আপনাকে মানতে হবে না। ১,০০০ ফলোয়ারের পাশাপাশি উপরের যেকোনো একটা শর্ত পূরণ করলেই আপনার ফেইসবুক পেজটি Brand Collabs Manager প্রোগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।

#৪ ফ্রিল্যান্সিং জব করে ফেসবুকের মাধ্যমে টাকা ইনকাম

অনলাইনে আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আর ভরসাযোগ্য কাজটি হলো ফ্রিল্যান্সিং। এর মাধ্যমে আমরা নিজের সুবিধামতো যেকোনো কাজ খুঁজে নিতে পারি। কাজগুলো করা যায় যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায়।

ফ্রিল্যান্সিং মানেই হলো স্বাধীন বা মুক্ত পেশা। আর যিনি ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে যুক্ত তাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং কে শুধুমাত্র পার্টটাইম নয় ফুলটাইম জব হিসেবেও নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য অবশ্যই আপনার কিছু বিশেষ দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

সেইসাথে প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট কানেকশন। এবং তৃতীয় ধাপে প্রয়োজন হবে ক্লায়েন্ট; যে বা যারা আপনাকে কাজের সুযোগ দেবে।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ক্লায়েন্ট পাওয়া। আপনার মতো অনেকেই প্রতিনিয়ত ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কাজ খুঁজে চলেছে। কিন্তু কাজ পাচ্ছে হাতে গোনা কয়েকজন।

কায়েন্ট পেতে প্রয়োজন মার্কেটিং। হ্যাঁ, পণ্যের মতো আপনার দক্ষতারও মার্কেটিং প্রয়োজন।

ভেবে দেখুন, আপনি যদি নিজের দক্ষতা সম্পর্কে কাউকে না-ই জানান তবে তারা কিভাবে জানবে আপনি কতটা জানেন? তাছাড়া আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্ৰহী সেটাও তো ক্লায়েন্টদের জানানো প্রয়োজন। এজন্য আপনাকে আপনার দক্ষতাগুলো সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে। আর এই মার্কেটিং এর জন্য প্রয়োজন মার্কেটপ্লেস।

Upwork, Freelancer, Fiverr এর মতো ফেইসবুকও হতে পারে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের জন্য আশির্বাদ। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে আপনার মতোই হাজার হাজার মানুষ অনেক আগে থেকেই যুক্ত এবং প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

তাই স্বাভাবিকভাবেই আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনা খুবই কম। এমনকি আপনি ১-২ বছরে কোন কাজ পাবেন কিনা সে ব্যাপারেও নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। এক্ষেত্রে ফেইসবুক আমাদের বেশকিছু বাড়তি সুবিধা দিতে প্রস্তুত।

ফেসবুকে Content writer, Freelancer community in Bangladesh, Freelancer Bangldesh group, Sofol Freelancer, Freelancer of Bangldesh, Freelancer Family, Bangladeshi Freelancer নামক ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক প্রচুর গ্ৰুপ ও পেইজ আছে। এখানে নিজের দক্ষতা জানিয়ে পোস্ট করলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনি বেশ কয়েকজন ক্লায়েন্ট পেয়ে যেতে পারেন।

আবার বিভিন্ন সময় ক্লায়েন্টরা তাদের কাজের বর্ণনা দিয়ে গ্ৰুপে পোস্ট করে থাকে। সেখান থেকেও আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে নিতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে আপনার ফেইসবুক একাউন্টে লগ ইন করতে হবে। এরপর সার্চ অপশনে গিয়ে সার্চ করলে রেজাল্টে অনেকগুলো গ্ৰুপ প্রদর্শিত হবে। সেখান থেকে ঘাঁটাঘাঁটি করে সেরা গ্ৰুপগুলো বেছে নিন।

দেখা করা হয়ে গেলে গ্ৰুপে জয়েন করুন এবং গ্ৰুপের একজন সক্রিয় সদস্য হয়ে উঠুন।

নিয়মিত গ্ৰুপে ভিজিট করুন এবং ধীরে ধীরে গ্ৰুপে নিজের পরিচিতি বাড়াতে থাকুন। এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনি কাজ পেতে শুরু করবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য Content writing,  Graphics designing,  SEO, Web designing, Photoshop, Programing, Digital service সহ আরো প্রচুর কাজ আছে। এগুলোর মধ্যে আপনার যে দক্ষতাটি/দক্ষতাগুলো আছে সেগুলোই কাজে লাগান।

ফেসবুকের মাধ্যমে শুধু যে আপনি ক্লায়েন্ট খুঁজে পাবেন তা নয়, ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও পেতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে আপনি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রথম প্রথম বেশি কাজ পাওয়া যায় না। কিন্তু একবার যখন আপনি ক্লায়েন্ট পেতে শুরু করবেন, ধীরে ধীরে আপনার আয় বাড়তেই থাকবে।

এক্ষেত্রে আপনার কাজের দক্ষতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ক্লায়েন্টদের চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস দিতে পারলে আপনার ক্লায়েন্ট ও কাজের পরিমাণ দুটোই বাড়তে থাকবে। আর কাজ বাড়লে সেইসাথে আপনার আয়ও বেড়ে যাবে।

তাছাড়া ফেসবুকের বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং গ্ৰুপ থেকে কাজ পেলে আপনার ক্যাশ আউটের জন্য জটিলতায় পড়তে হবে না। বিকাশ, রকেট, নগদ বা ডাচ বাংলা থেকে কয়েক মিনিটেই টাকা হাতে পৌঁছে যাবে।

কিন্তু আপওয়ার্ক বা ফ্রিল্যান্সারের মতো সাইটগুলো থেকে আপনি যে কাজ পাবেন তার পেমেন্ট নিতে হবে skill, paypal বা local bank এর মাধ্যমে; যেগুলো তুলনামূলকভাবে প্রচুর জটিলতাপূর্ণ একেকটা পদ্ধতি।

#৫ অনলাইন বিভিন্ন কনটেস্টে অংশ নিয়ে ফেইসবুক থেকে ইনকাম

অফলাইনের পাশাপাশি আজকাল অনেক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় অনলাইনেও। এসব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ছবি আঁকা, কবিতা আবৃত্তি, সাধারণ জ্ঞান, প্রবন্ধ রচনা, প্রোগ্ৰামিং,  ডিজাইন, কুইজ, স্বরচিত গল্প-উপন্যাস বা কবিতা, সঙ্গীত, নৃত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর।

আর এ প্রতিযোগিতাগুলো খুঁজে পাবার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ফেইসবুক।

এসব অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমেও আপনি ফেইসবুক থেকে মোটামুটি ভালো অংকের টাকা আয় করতে পারেন।

বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময় অনলাইনে নানান প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতাগুলোর মূল উদ্দেশ্যই হলো কোম্পানির পরিচিতি বাড়ানো।

নতুন কোনো পণ্যের ক্যাম্পেইন বা মার্কেটিং এর জন্য বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম হলো ফেইসবুক। ফেসবুকের মাধ্যমে এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার হিসেবে লুফে নিতে পারেন নগদ অর্থ বা ইন্টার্নশিপ কাজের সুযোগ।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বাধীনতা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৭ই মার্চ, ১৫ই আগস্ট, বিজয় দিবস সহ বিভিন্ন সময় অনলাইন বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

সেখানে পুরষ্কার হিসেবে রাখা হয় নগদ অর্থ বা বিভিন্ন দামী উপহার। জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত এসব প্রতিযোগিতার খবরাখবর ফেইসবুক নিউজফিডে কারোরই চোখ এড়ায় না।

প্রতিযোগিতাগুলো সম্পর্কে‌ প্রায় সকল তথ্য আপনি ফেইসবুক থেকেই পেতে পারেন।

প্রতিযোগিতার জন্য অনুশীলনের ক্ষেত্রেও ফেইসবুক আপনাকে সাহায্য করতে পারে। ফেসবুকে প্রতিটি বিষয়ের উপর আলাদা আলাদা প্রচুর গ্ৰুপ আছে। এর মাধ্যমে আপনি প্রতিযোগিতার জন্য নিয়মিত অনুশীলন করতে পারবেন।

যেমন ধরুন, আপনি সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এখন ফেসবুকে সাধারণ জ্ঞানের গ্ৰুপগুলো জয়েন করে সেখান থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। এখানে প্রতিযোগিতাটি যদি পরীক্ষা হয় তবে গ্ৰুপগুলোকে ধরা যেতে পারে তার মডেল টেস্ট।

তাছাড়া প্রতিযোগিতার জন্য ফেসবুকে এমন কিছু গ্ৰুপও আছে; যেগুলো প্রতিনিয়ত কনটেস্টের আয়োজন করে থাকে। এ আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলের পক্ষ থেকে। এসব গ্ৰুপে জয়েন করে আপনিও প্রতিযোগিতার অংশ হতে পারেন। বিজয়ী হয়ে জিতে নিতে পারেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

কনটেস্টের মাধ্যমে ফেইসবুক থেকে আয় এর জন্য, প্রথমেই আপনাকে কিছু প্রতিযোগিতা খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য ফেইসবুক একাউন্টে লগ ইন করে মেনুতে যেতে হবে। সেখানে group, friends, memories, pages, setting ও অন্যান্য অপশনের সাথে আপনি Events নামক অপশন দেখতে পাবেন। Events অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনি চলমান সকল প্রতিযোগিতার তথ্য পেয়ে যাবেন। পছন্দমতো প্রতিযোগিতা খুঁজে না পেলে বিষয়ের নাম লিখে সার্চ করলেই হবে।

ফেসবুকের এসব অনলাইন প্রতিযোগিতা থেকে আপনাকে নিজের দক্ষতা ও পারদর্শিতা অনুযায়ী সঠিক প্রতিযোগিতাটি বেছে নিতে হবে।

কিছু প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হতে পারে। তবে এমন অনেক প্রতিযোগিতা আছে যেখানে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোন ফি দিতে হবে না।

আবার এসব প্রতিযোগিতায় অংশ গ্ৰহণের জন্য শর্ত হিসেবে টাকার বদলে আপনাকে কিছু কাজও দেয়া হতে পারে। যেমন: ১০ বা ২০ জন বন্ধুকে ট্যাগ করা, ইনভাইট করা, পোস্ট শেয়ার করা ইত্যাদি।

আগেই বলেছি, এসব প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য কোম্পানির পরিচিতি বাড়ানো। তাই এখানে শুধু আপনার যোগ্যতাই যথেষ্ট নয়। বিজয়ী হতে হলে আপনার পোস্টে থাকতে হবে সর্বোচ্চ লাইক, পজিটিভ কমেন্ট ও শেয়ার।

আপনার যদি খুব বেশি ফ্যান-ফলোয়ার না থাকে তাহলে এক্ষেত্রে আপনার জয়ী হওয়া অসম্ভব। তবে অন্যভাবে বিবেচনা করলে যোগ্যতাটাই কিন্তু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিযোগিতায় আপনার প্রজেক্ট ভালো না হলে লাইক, কমেন্টের আশা করা বৃথা।

ফেইসবুক কনটেস্ট থেকে আয়ের জন্য ফলোয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আপনার যত বেশি ফলোয়ার থাকবে, কনটেস্ট পোস্টে তত বেশি লাইক, শেয়ার ও পজিটিভ কমেন্ট আসবে। সেইসঙ্গে বাড়বে আপনার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাও। কারণ প্রতিযোগিতার ফলাফলের ৩০% থেকে ৫০% নির্ভর করবে এসব লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের উপর।

তাই এখন থেকেই ফেইসবুক একাউন্টে ফলোয়ার বাড়ানো শুরু করুন। সেইসাথে নিয়মিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট শেয়ার ও সকলের সাথেই মোটামুটি ধরনের ভালো সম্পর্ক রাখতে চেষ্টা করুন। মোটকথা, প্রতিযোগিতায় জিততে হলে আপনাকে একজন এ্যাক্টিভ ফেইসবুক ইউজার হয়ে উঠতে হবে।

আপনি চাইলে এজন্য একটি ফেইসবুক পেজও ক্রিয়েট করতে পারেন। ফেইসবুক পেজই এক্ষেত্রে বেশি ইফেক্টিভলি কাজ করে।

ব্যক্তিগত পরিচয় কাজে লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কোম্পানির পণ্যের মার্কেটিং করাই হলো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং। একে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সর্বশেষ সংস্করণও বলা যেতে পারে।

ইনফ্লুয়েন্সার বিষয়টা অনেকটা আধুনিক ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের মতো। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলো এমন একজন ব্যক্তি যে কোনো একটি নির্দিষ্ট পণ্যের মার্কেটিং করে থাকে। অর্থাৎ ব্যাক্তিটি সে পণ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।

শুধুমাত্র সেলিব্রিটি ব্যাক্তিদেরই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়। যেমন গ্ৰামীণফোনের নতুন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

তবে ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার জন্য আপনাকে কোনো বড় মাপের সেলিব্রিটি হতে হবে না। এক্ষেত্রে শুধু নিজের প্রোফাইল বা পেজকে জনপ্রিয় করে তুললেই হবে। এজন্য প্রয়োজন নিজেকে সকলের সামনে উপস্থাপন করা।

নিজেকে উপস্থাপনের দক্ষতা না থাকলে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং আপনার জন্য নয়। কেননা শুধুমাত্র এধরণের ব্যাক্তিত্বই অন্যকে ইনফ্লুয়েন্স বা প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর জন্য আপনার প্রয়োজন একটি ফেইসবুক ACCOUNT বা ফেইসবুক পেজ। এক্ষেত্রে প্রোফাইলে বায়োডাটা হতে হবে বেশ গোছানো। নিজের দক্ষতা, পারদর্শিতা, অভিজ্ঞতা, শখ সবকিছুই থাকতে হবে স্পষ্টভাবে।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয় বাছাই করতে হবে। পরবর্তীতে আপনার সকল স্ট্যাটাস বা পোস্ট হতে হবে সে নির্দিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করেই।

ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য প্রোফাইল বা ফেইসবুক পেজে নিয়মিত সে নির্দিষ্ট বিষয়ে কনটেন্ট শেয়ার করতে হবে। সেইসাথে কনটেন্টগুলো হতে হবে আকর্ষণীয় ও সৃজনশীল। তবে সেগুলো কখনোই সে নির্দিষ্ট বিষয়ের বাইরে হওয়া চলবে না।

এভাবে ফেইসবুক প্রোফাইল বা পেজে ধীরে ধীরে ফলোয়ার বাড়াতে হবে। ফলোয়ার ধরে রাখতেও করতে হবে কঠিন পরিশ্রম।

ফলোয়ারের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।

এরমধ্যে প্রধান চারটি ভাগ হলো:

  • Nano influencer (১০ হাজার এবং এর নিচে)
  • Micro influencer (১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ)
  • Macro influencer (১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ)
  • Mega influencer (১০ লক্ষ এবং এর উপরে)

আপনি হয়তো ভাবছেন, ম্যাগা ইনফ্লুয়েন্সারদের ফলোয়ার সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের আয়ও হবে প্রচুর! কিন্তু এমনটা নয়।

আয়ের সুযোগ এক্ষেত্রে ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সারদেরই সবচেয়ে বেশি। কারণ ফলোয়ার যত বেশি হয় তাদের মধ্যে যোগাযোগ তত কমে যায়। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় পারস্পরিক যোগাযোগ হয় না বললেই চলে। আর ফলোয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ না হলে কখনোই ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এ সফল হয় না। এজন্য বেশির ভাগ কোম্পানি তুলনামূলক কম ফলোয়ার সংখ্যাবিশিষ্ট ইনফ্লুয়েন্সারকে মার্কেটিং এর সুযোগ দিয়ে থাকে।

আপনার প্রোফাইল বা পেজে যথেষ্ট ফ্যান-ফলোয়ার হয়ে আসলে এরপর আপনাকে যেতে হবে দ্বিতীয় ধাপে। এ পর্যায়ে আপনাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এজেন্সিতে একটি ACCOUNT ক্রিয়েট করতে হবে। এসব এজেন্সি আপনাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর সুযোগ করে দেবে। Hire-influence,  Fromote, Blog-mint, এরকমই সুযোগ প্রদানকারী কিছু এজেন্সি। এসকল সাইটে রেজিস্ট্রেশনের পর নিজের প্রোফাইলের তথ্য দিয়ে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, ফর্মে কোন তথ্যই যেন ভুল না হয়।

এখানে একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে আপনার যেকোন পণ্যের একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণের সু্যোগ রয়েছে। যেমন: ইস্পাহানী মির্জাপুর ব্র্যান্ডের প্রত্যেক পণ্যের ক্ষেত্রে আপনি ৫০০/১০০০/২০০০ টাকা করে মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন।

ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মাধ্যমে শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিগত পরিচয় কাজে লাগিয়েই আপনি মাসে মোটা অংকের টাকা আয় করে নিতে পারেন। ভবিষ্যতেও এ কাজের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। যেভাবে দিন দিন ফেসবুকের জনপ্রিয়তায় বেড়ে চলেছে তাতে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

শুধু ফেসবুকে নয়, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করতে পারেন অন্য সকল সোশ্যাল মিডিয়া সাইটেও। তবে একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে ফেসবুকের মাধ্যমেই আপনি সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন। কেননা পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইটটি হলো ফেইসবুক। এবছর সারাবিশ্বে ফেইসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮৬ কোটি!

#৭ পণ্য বিক্রি করে ফেইসবুক থেকে ইনকাম

পণ্য বিক্রি করে ফেইসবুক থেকে আয়

ফেইসবুক পণ্য বিক্রি করার অসাধারণ একটি জায়গা। আপনি চাইলেই আপনার পুরাতন মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে মোটর সাইকেল – সব কিছু বিক্রির জন্য ফেসবুকে ক্রেতা খুঁজতে পারেন। কয়েক বিলিয়ন ব্যবহারকারীর মাঝে আপনার পণ্যের ক্রেতা খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না।

অনলাইনে সেকেন্ড হ্যান্ড প্রোডাক্ট ক্রয় বিক্রয়ের জন্য প্রচুর গ্রুপ খোলা আছে। সেগুলোতে যুক্ত হয়ে আপনি পুরাতন পণ্য বিক্রি করে ফেসবুকের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও, ফেসবুকে পেজ খুলে নতুন পণ্যও বিক্রি করা যায়। অনেক অনলাইন শপ আছে, যারা সম্পূর্ণভাবে ফেইসবুক নির্ভর। এভাবে পণ্য বিক্রি করতে চাইলে প্রথমে কম দামে কোনো জায়গা থেকে পণ্য কিনুন। এরপর সেগুলোর ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করুন। এরপর কেউ সেই পন্য অর্ডার করলে, কেনার চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে সেটা বেঁচে দিন। ব্যস!

#৮ ফেইসবুক পেজ বিক্রি করে আয়

মনে করুন, নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য অর্জনে কিংবা শখের বসে ফেইসবুক পেজ খুলে ফেললেন। কিন্তু কিছুদিন পর আর পেজটি ব্যবহার করার আগ্রহ অবশিষ্ট রইলো না। তখন কি করবেন? ফেলে রাখবেন?

নাহ্! আপনি চাইলেই আপনার ফেইসবুক পেজটি ফেলে না রেখে বিক্রিও করে দিতে পারেন। ফেইসবুক পেজ বিক্রি করলে সেই পেজে থাকা ফলোয়ার এবং পাবলিশ করা পোস্টের মানের ভিত্তিতে খুব ভালো পরিমান টাকা আয় করা যাবে।

গত বছর শখের বসে ট্রাভেলিং কে কেন্দ্র করে আমি একটা ফেইসবুক পেজ তৈরী করেছিলাম। ভ্রমণকেন্দ্রিক কয়েকটা ভিডিও প্রকাশ করার কয়েক মাসের মধ্যেই আমার পেজটিতে ৩৫ হাজারের মতো ফলোয়ার হয়ে গিয়েছিলো। সেই ভিডিওগুলো ও ৪০ হাজার ফলোয়ার সমেত ফেইসবুক পেজটি পরবর্তীতে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।

#৯ ফেইসবুক গ্রুপ থেকে ইনকাম ২০২২

বর্তমান সময়ে ফেইসবুক গ্রুপ থেকে টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য সেই গ্রুপে ভালো পরিমাণ একটিভ মেম্বার থাকতে হবে। আমার পরিচিত কয়েকজন ব্লগার রয়েছেন, যারা তাদের ফেইসবুক গ্রুপ ভাড়া দিয়ে ফেইসবুক থেকে ইনকাম আয় করতেছেন।

ফেইসবুক গ্রুপ থেকে আয় করার পদ্ধতিটা হচ্ছে, আপনার ফেইসবুক গ্রুপে যদি ভালো পরিমাণে একটিভ মেম্বার থাকে, তাহলে আপনি সেই গ্রুপে বিভিন্ন লিঙ্ক শেয়ার করার মাধ্যমে অন্য কারো কোম্পানির বা পণ্যের মার্কেটিং করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। এটা খুব সহজ একটি বিষয়।

নোট: আমরা পরবর্তী কোন পোস্টে কিভাবে ফেইসবুক গ্রুপ খুলে টাকা আয় করবেন সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ফেইসবুক পেজ জনপ্রিয় করে তোলার উপায়

এতোক্ষণ ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনার পর, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, টাকা উপার্জনের জন্য একটি ফেইসবুক পেজ ঠিক কতটা প্রয়োজনীয়।

কিন্তু মনে রাখবেন, ফেইসবুক পেজ খুলে বসে থাকলেই কিন্তু টাকা উপার্জন হওয়া শুরু হয়ে যাবে না। এজন্য ফেইসবুক পেজটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে বা ফলোয়ার বাড়াতে হবে।

একটি ফেইসবুক পেজ থেকে ইনকাম শুরু করার প্রথম কাজই মূলত পেজটিকে জনপ্রিয় করে তোলা। কিভাবে একটি ফেইসবুক পেজকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলা যায়, তার কিছু টিপস এখানে উল্লেখ করা হলো।

ফেইসবুক পেজকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই নতুন একটা ফেইসবুক পেজ খুলতে হবে। অনেকেই ফেইসবুক আইডিকে পেজে মাইগ্রেট করে ব্যবহার করে। কেউ কেউ আবার বহুদিন যাবৎ ফেলে রাখা পুরাতন কোনো পেজের আগের সব পোস্ট ডিলিট করে নতুন করে তুলতে চায়। এগুলো করলে পেজের পোস্টগুলোর “Reach” কমে যাবে। অর্থাৎ, সবার টাইমলাইনে আপনার পেজের নতুন পোস্ট পৌছাবে না।

পেজের প্রোফাইল এবং কভার পিক অবশ্যই আকর্ষণীয় এবং পেশাদার হতে হবে। প্রয়োজনে লোগো ডিজাইনারদের মাধ্যমে ডিজাইন করিয়ে নিন। এগুলো ডিজাইন করতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৩০০ থেকে ২০০০ টাকার মতো লাগতে পারে। মনে রাখবেন, সকল ব্যবসার শুরুতেই কিছু না কিছু ইনভেস্ট করতে হয়। যে এসব আইটি সম্পর্কিত কাজ পারে, সে শ্রম ও সময় ইনভেস্ট করে। আর যে পারে না, সে ইনভেস্ট করে টাকা।

  • পেজের Url অবশ্যই শর্ট রাখতে হবে, যেন মানুষ সহজেই সেটা মনে রাখতে পারে।
  • প্রতিদিন দিনে কমপক্ষে ২ টা ভালো কিছু পোস্ট করুন। এটা হতে পারে সাধারণ লেখা, ছবি কিংবা ভিডিও।
  • অন্যদের কমেন্টের রিপ্লাই করুন। আপনার পেজটিকে জিবন্ত মনে হবে, যদি নিয়মিত পোস্ট ও কমেন্টের রিপ্লাই করতে পারেন।
  • পেজে লাইক দেয়ার জন্য বন্ধুদের নিয়মিত ইনভাইট করুন। আপনার ফলোয়ারদের কোনো বিষয়ে লোভ দেখিয়ে তাদের দিয়েও ইনভাইট করিয়ে নিতে পারেন।

মাঝে মাঝেই ফলোয়ারদের গিফট দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আপনার পেজটি পণ্য বিক্রির পেজ হলে, মাসে বা সপ্তাহে একদিন কিছু ফলোয়ার বা নিয়মিত ক্রেতাকে ফ্রিতে কোনো পণ্য দিয়ে দিতে পারেন। এই ফ্রিতে দেওয়ার ব্যপারটা পেজে হালকাভাবে প্রচার করুন। বেশি হাইলাইট করলে ট্রোলের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মাঝে মাঝেই ফেইসবুক পেজে আপনার বিভিন্ন পন্যের ডিসকাউন্ট কুপন প্রচার করুন।

নিয়মিত পেজের “Insights” চেক করুন।

পেজে কেউ ম্যাসেজ করলে দেরীতে রিপ্লাই দিন সমস্যা নেই, কিন্তু সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতে হবে। বাংলিশ না লিখে শুদ্ধ বাংলাতে ভদ্রতার সাথে কথা বলুন।

সর্বশেষে আমাদের পরামর্শ

ফেইসবুক পেজ হলো একধরণের উৎকৃষ্ট সম্পদ। একটা ফেইসবুক পেজকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারলেই বহুভাবে সেটা থেকে টাকা আয় করা যায়।

পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকলে ফেইসবুক থেকে ইনকাম করার সকল উপায় আপনার রপ্ত হয়ে গেছে। এখন হাতে কলমে প্রয়োগ করার পালা। আশা করছি, খুব দ্রুত আপনি ফেইসবুক থেকে আয় করা শুরু করে দিতে পারবেন।

আর যদি এই “ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়” পোস্ট আপনার ভালো লাগে, তাহলে অনলাইন আয় বিডি এর পোস্টটি আপনার জানামতে অনলাইন ইনকামে আগ্রহী ব্যাক্তিদের সাথে শেয়ার করবেন।

Leave a Comment