পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা – বর্তমান সময়ে ফেলা দেওয়া পুরাতন কার্টুন এবং কার্ডবোর্ডের বাক্স বিক্রি করে আপনি মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন।
পুরাতন কার্টুন এবং কার্ডবোর্ডের বাক্স গুলো অল্প দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। আমরা আজকের এই আর্টিকেলে, পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। যা আপনারা বাংলাদেশের লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে পুরাতন কার্টুন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে আপনি নিজের ভবিষ্যৎ জীবন উজ্জ্বল করতে পারবেন। তো পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা করার সম্পূর্ণ নিয়ম জানতে, আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা করার নিয়ম
আপনি যদি বাংলাদেশের লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া হিসেবে পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা শুরু করেন। তাহলে এই ব্যবসা শুরুতে কি পরিমানের টাকা মূলধন খাটাতে হবে।
ব্যবসা করার জন্য পুরাতন কার্টুন গুলো কিভাবে সংগ্রহ করবেন। কিভাবে পুরাতন কার্টুন গুলো বিক্রি করবেন।
এই বিষয় গুলো সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। তো আপনি যদি শিক্ষিত হয়েও বেকার অবস্থায় ঘরে বসে থাকেন। আপনার কাছে ইনভেস্ট করার মত টাকা আছে।
কিন্তু কোন ধরনের ব্যবসা করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। তাই তারা চাইলে, বাংলাদেশের লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া হিসেবে পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
কারণ এই পুরাতন কার্টুনের ব্যবসায়ী আপনারা প্রতি মাসে লাখ টাকারও বেশি রোজগার করতে পারবেন। তাহলে বুঝতে পারছেন পুরাতন কার্টুন ব্যবসা কতটা লাভজনক।
বিশেষ করে আমরা প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য যে সকল জিনিসপত্র কিনে থাকি। তার মধ্যে বেশিরভাগ জিনিসপত্র গুলো আমাদের মোটা কাগজের কার্টুনের মধ্যে মোড়ানো থাকে।
জিনিসপত্রগুলো কার্টুন থেকে বের করার পরে সাধারণত আমরা সেগুলো ফেলে দেই বা পুড়িয়ে ফেলি। এখন আপনারা এই কার্টুনের বাক্স গুলো সংগ্রহ করে সহযোগী ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন।
পুরনো কার্টুনের ব্যবসা টা কেমন
পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা আপনি বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরাতন কার্টুন এবং কার্ডবোর্ড গুলো সংগ্রহ করে, নিজের একটি গোডাউনে স্টক করে রাখতে পারবেন।
তারপর সেই পুরাতন কার্টুনগুলো বাছাই করে রিসাইকেলিং করবেন। পরবর্তীতে এগুলো টন হিসেবে কার্টুন রিসাইকেলিং প্লান্টে সাপ্লাই করে দিতে পারবেন।
সর্বপ্রথম আপনাকে পুরাতন কার্টুন এবং কার্ডবোর্ড গুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে হবে। তারপর গোডাউনে সংরক্ষিত করতে হবে।
এই পুরাতন কার্টুনগুলো আপনারা বিভিন্ন ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কম দামে কেজি ধরে কিনতে পারবেন।
পরবর্তীতে পুরাতন কার্টুনগুলোকে পরিষ্কার বা রিসাইকেল করে, সঠিক ওজন দিয়ে, সেগুলো কার্টুন রিসাইকেলিং প্লান্টে সাপ্লাই করতে পারবেন।
পুরাতন কার্টুন ব্যবসা করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
আপনি যদি পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করতে চান। তাহলে প্রথমত সঠিকভাবে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে কি কি জিনিস প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে জেনে নিতে হবে।
তাই চলুন জেনে নেয়া যাক, পুরাতন কার্টুন ব্যবসা করার জন্য কি কি প্রয়োজন হবে।
০১। প্রথমে আপনার ব্যবসার জন্য একটি গোডাউনে পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে। যেখানে আপনার মালামাল গুলো স্টক করে রাখা যাবে। গোডাউনের জন্য কমপক্ষে ১০০০ থেকে ২০০০ স্কয়ার ফিট জায়গা দরকার পড়বে।
০২। পুরাতন কার্টুনের মালামাল গুলো আপনার গোডাউনে আসার পরে, এগুলো যেন কম জায়গা নেই এবং ট্রান্সপোর্টে কম জায়গা খরচ হয়। আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে হাইড্রলিক লিভারের সাহায্য নেওয়া। কারণ এই যন্ত্রের মাধ্যমে আপনারা সহজেই পুরাতন কার্টুনগুলো প্রেসার দিয়ে ছোট করতে পারবেন।
তবে পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করার প্রথম দেখে হাইড্রোলিক লিভার না কিনলেও চলবে। আপনার ব্যবসা উন্নতি হচ্ছে তখন আপনারা এই যন্ত্রটি কিনে কার্টুনগুলো প্রেসার দিয়ে ছোট করার জন্য হাইড্রোলিক লিভার কিনবেন।
০৩। পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে কিছু পরিমাণের শ্রমিক ভাড়া করতে হবে। কারণ মালামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে রিসাইকেলিং, সাপলাইন, কার্টুন গোছানো, গাড়িতে লোড করা সহ সকল কাজ করা একার পক্ষে সম্ভব হবে না।
তাই আপনার পুরাতন কার্টুন ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য তিনজন থেকে পাঁচজন শ্রমিক ভাড়া করতে হবে কাজ করানোর জন্য।
০৪। পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি ভাড়া গাড়ি। গোডাউনে কার্টুনের বাক্স গুলোকে রিসাইকেলিং প্লান্টে পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করার দরকার পড়বে।
আপনি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে, ভাড়া গাড়ি সংগ্রহ করতে পারবেন।
০৫। পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার কাছে পর্যাপ্ত ইনভেস্ট করার মূলধন থাকতে হবে।
পুরাতন কার্টুনের বক্স গুলো কিভাবে সংগ্রহ করবেন?
পুরাতন কার্টুনের বাক্স গুলো সংগ্রহ করার জন্য আপনারা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করার সুযোগ পাবেন। প্রথমে আপনারা বিভিন্ন ভাঙ্গারিওয়ালা, ফেরিওয়ালাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের কাছ থেকে মূলত পুরাতন কার্টুনগুলো কেজি ধরে অল্প দামে কিনতে পারবেন।
তারপর আপনারা নিজের এলাকার বাজারের দোকান গুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন। কারণ বাজারে এমন অসংখ্য দোকান রয়েছে যেগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে আসা হয়।
দোকানদাররা সে সকল প্রোডাক্ট কার্টুন থেকে বের করে সেগুলো পুড়িয়ে দেয় বা কেজি দরে বিক্রি করে। আপনারা বিভিন্ন দোকানে যোগাযোগ করে কার্টুন গুলো রেখে দিতে বলবেন। তারপর কেজি দরে তাদের কাছ থেকে সহজেই কিনে নিতে পারবেন।
উক্ত প্রক্রিয়া গুলো অনুসরণ করে, আপনারা খুব সহজে পুরাতন কার্টুনের বক্সগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ পাবেন।
পুরাতন কার্টুন বক্স গুলো কোথায় বিক্রি করবেন?
আপনারা বিভিন্ন উপায়ে পুরাতন কার্টুন বক্সগুলো সংগ্রহ করে। সেগুলো ভালোভাবে রিসাইকেলিং করে, সরাসরি টন হিসেবে কার্টুন রিসাইকেলিং প্লান্টে বিক্রি করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় কার্টুন রিসাইকেলিং পয়েন্ট রয়েছে। আপনার চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে, কি পরিমানের কার্টুন বিক্রি করবেন কত দামে বিক্রি করবেন। সে বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে বিক্রি করে দিতে পারবেন।
আপনারা চাইলে গুগলে সার্চ করে জেনে নিতে পারেন আপনার আশেপাশে কোন কার্টুন রিসাইকেলিং প্লান্ট রয়েছে কিনা। তো গুগলে সার্চ করার জন্য Carton Recycling Plant Location in Bangladesh এটি লিখতে পারেন।
উপরে দেওয়া সেন্টেন্সটি লেখার পরে আপনার আশেপাশে থাকা, বা কোন জায়গায় রয়েছে। সে কার্টুন রিসাইকেলিং প্লান্টের সন্ধান জানতে পারবেন।
পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করতে মূলধন কেমন লাগবে?
আপনার যদি পুরাতন কার্টুনের ব্যবসা শুরু করার জন্য, একটি গোডাউন থাকে। সেক্ষেত্রে এ ব্যবসাটি প্রথমে শুরু করার জন্য আপনার কাছে ২ লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা থাকতে হবে।
আর গোডাউনের জায়গা যদি না থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে এত বেশি টাকা ইনভেস্ট করে গোডাউন ভাড়া নিতে হবে। প্রথম অবস্থায় গোডাউন সহ পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাদের ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
আর যখন দেখবেন আপনার পুরাতন কার্টুন ব্যবসাটি জাঁকজমক ভাবে চলছে, তখন আপনারা বেশি বেশি টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসাটি বড় পজিশনে নিয়ে যেতে পারেন।
এখন আপনি যদি পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করে, ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেন। তাহলে ১ কেজি কার্টুনের দাম যদি ১০০/- টাকা হয়।
তাহলে আপনি সেগুলো রিসাইকেলিং করে, ১৫০/- টাকা থেকে ২০০/- টাকা বিক্রি করতে পারবেন। তাহলে বুঝতে পারছেন পুরাতন কার্টুন ব্যবসায়ী ডাবল লাভ করা সম্ভব।
আপনার জন্য আরো পোস্ট……
- অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করার নিয়ম – (ফেসবুক এন্ড ওয়েবসাইটে)
- ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া – অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করে ইনকাম করার উপায় [বিস্তারিত এখানে]
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আশা করি, কিভাবে পুরাতন কার্টুন ব্যবসা শুরু করবেন। কার্টুন ব্যবসা শুরু করার জন্য কি কি প্রয়োজন। পুরাতন কার্টুন গুলো কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন এবং কোথায় বিক্রি করবেন।
পুরাতন কার্টুন ব্যবসায়ী কেমন লাভ। সে বিষয়ে আমরা উপরে উল্লেখিত আলোচনায় বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছি।
এখন আপনি যদি পুরাতন কার্টুন ব্যবসা করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে নিজেকে পরিশ্রমী করে তুলুন। আপনি যত বেশি শ্রম দিতে পারবেন তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন।