পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন : বর্তমান সময়ে আমাদের বিভিন্ন আর্থিক ঘাটতির কারণে, লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
যেমন হতে পারে- গৃহ নির্মাণ লোন বা গাড়ি কেনার জন্য লোন। এছাড়া বর্তমান সময়ে লোকেরা আরো বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যক্তিগত লোন বা পার্সোনাল লোন গ্রহণ করে থাকেন।
সে ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশের ব্যাংক গুলো সহজ শর্তে এই ধরনের লোন গুলো প্রদান করা থাকে। সাধারণত মানুষের বার্ষিক ইনকামের উপর তাদের কতটা ঋণ দেয়া হবে তা নির্ভর করবে।
মানে প্রতি মাসে, ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বার্ষিক আয় এর উপর ভিত্তি করে লোন দেয়া হবে।
- জরুরী লোন বাংলাদেশ ২০২৩ (জেনেনিন এখানে)
- ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম
- বিকাশ লোন | বিকাশ লোন কিভাবে নিবো [জেনে নিন এখানে]
কিন্তু এখানে বলে রাখাই ভালো অন্যান্য লোনের তুলনায় পার্সোনাল লোনের রেট মানে, ইন্টারেস্ট রেট অনেক বেশি হয়। পার্সোনাল লোন বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বা প্রয়োজনে লোকেরা গ্রহণ করে থাকে যেমন-
- জরুরী চিকিৎসা
- বিদেশে ভ্রমণ
- গৃহনির্মাণ
- গাড়ি ক্রয়
- বিবাহের জন্য খরচ
বর্তমান সময়ে লোকেরা উপরোক্ত প্রয়োজনে ব্যক্তিগত বা পার্সোনাল লোন গুলো গ্রহণ করে থাকে। তো চলুন পারসোনাল লোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
পার্সোনাল লোন কি ?
আপনি কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে, জরুরি প্রয়োজনে বা কোন কাজের জন্য চেক বা ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে যে, কোন লোন নিতে পারবেন। আর সেই মাধ্যমকে পার্সোনাল লোন বলা হয়।
পার্সোনাল লোন আপনার বর্তমান আর্থিক চাহিদা মেটাতে, সহায়তা করবে। আর পার্সোনাল লোন নেওয়ার সময় সাধারণত কোন সুরক্ষা বা জামানত গ্রহণের প্রয়োজন হয় না।
চাইলে যে কেউ এই পার্সোনাল লোন নিতে পারবে। এবং নিজের ইচ্ছায় খরচও করতে পারবে। কিন্তু পার্সোনাল লোনের সুদের হার বেশি হওয়ার ফলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্যারান্টার ছাড়া লোন দেওয়া হয়।
সাধারণত ব্যাংকগুলো ১১% সুদের হার হতে ১৬% হার সুদে পার্সোনাল লোন প্রদান করে। তাই সুদের হার সম্পর্কে নির্যাত হয়ে লোনের জন্য আবেদন করা উচিত সকল ব্যক্তিদের।
কোথায় থেকে পার্সোনাল লোন নিবেন ?
আপনারা বিভিন্ন ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংক হতে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবেন যেমন-
- এবি ব্যাংক।
- সিটি ব্যাংক।
- ব্রাক ব্যাংক ইত্যাদি।
এ সকল ব্যাংক হতে, আপনারা সহজেই পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ধরনের পার্সোনাল লোন দেওয়ার বিনিময়ে সর্বনিম্ন ১১% হারে লোন প্রদান করে থাকে।
কিন্তু লোনের পরিমাণ সকলের ক্ষেত্রে সমান নাও হতে পারে। এবং কখনো কখনো শর্তসাপেক্ষে পরিবর্তনশীল। কোন ব্যক্তির বার্ষিক ইনকামের উপর ভিত্তি করে, সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়।
এ ধরনের লোনগুলো সাধারণত ছয় মাস হতে পাঁচ বছর মেয়াদের হয়। ব্যাংক ব্যাংক গ্রাহকদের বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে এবং গ্রাহকের পরিশোধ করার যোগ্যতা যাচাই করে পার্সোনাল লোন প্রদান করে।
তাই এবং সরকারি চাকরিজীবীরা অন্যদের থেকে দ্রুত পার্সোনাল লোন গ্রহন করতে পারে।
ব্যবসায়ী বা আর্থ-কর্মসংস্থানকারী ব্যক্তিরা পার্সোনাল লোন পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা আয় থাকতে হবে। অন্যদিকে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা আয় থাকতে হবে।
কোন ব্যাংক এর সুদের হার কত ?
আপনি যখন কোন ব্যাংক হতে পার্সোনাল লোন নিতে যাবেন। তখন আগে অবশ্যই কোন ব্যাংক কত শতকরা কত টাকা হারে সুদ নিচ্ছে।
তা যাচাই করে দেখবেন। কারণ যে ব্যাংক এ সুদের হার কম সাধারণত গ্রাহক থেকেই লোন নিতে, আগ্রহী থাকে সুদের হার সম্পর্কে জানা নেই।
কোন রাষ্ট্র মালিকানাধীন বা সরকারি ব্যাংকগুলো লোন দেয়ার বিপরীতে প্রায় ১৩% এর মত সুদ গ্রহণ করে থাকে আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্য যেমন-
- এশিয়া ব্যাংকের সুদের হার ১০% থেকে ১৩%।
- এক্সিম ব্যাংকের সুদের হার ১৩% থেকে ১৬%।
- আইএফআইসি ব্যাংকের সুদের হার ১৩% থেকে ১৬%।
- মিউচুয়াল টাস্ট ব্যাংকের সুদের হার ১০% থেকে ১৩%।
- ওয়ান ব্যাংক এর সুদের হার ১১% থেকে ১৫ পার্সেন্ট।
- প্রাইম ব্যাংকের সুদের হার ১০% থেকে ১৩%।
- সিটি ব্যাংকের সুদের হার ১৩%।
- ব্র্যাক ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংকের সুদের হার ১১% থেকে ১৪%।
- ডাচ বাংলা ব্যাংকের থেকে ১৩%।
- ইস্টার্ন ব্যাংকের সুদের হার ১০% থেকে ১১%।
তো বন্ধুরা আপনারা কোন ব্যাংক হতে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে চান? সেটি সুদের উপর নির্ধারণ করে লোন গ্রহণ করতে পারে।
কি কি ক্ষেত্রে পার্সোনাল লোন পাওয়া যায় ?
আপনি যদি পার্সোনাল লোন নিতে চান তবে কোন খাতে সেটি বের করবেন। সে বিষয়ে ব্যাংক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পার্সোনাল লোন প্রদান করে থাকে।
তো চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি ক্ষেত্রে পার্সোনাল লোন নেওয়া যায়। সেগুলো হলো-
- বিয়ের খরচ
- কোন দামে প্রোডাক্ট ক্রয়
- বাড়ি মেরামত
- ব্যবসার মূলধন
- ক্রেডিট কার্ডের ঋণ ইত্যাদি
পার্সোনাল লোন পেতে হলে কি কি যোগ্যতা লাগবে ?
বাংলাদেশ থেকে পার্সোনাল লোন নিতে চাইলে গ্রাহকের নিম্নোক্ত যোগ্যতা থাকতে হবে। যেমন-
লোন আবেদনকারীর বয়স- আপনি যদি পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে চান। সে ক্ষেত্রে আপনার বয়স ন্যূনতম একই বছর হতে সর্বোচ্চ ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
লোন আবেদনকারী যোগ্যতা- নির্দিষ্ট কোন ব্যাংক হতে পার্সোনাল লোন এর আবেদন করা ব্যক্তি’র অবশ্যই ইনকাম থাকা বাধ্যতামূলক। মাসিক এবং বার্ষিক আইনেই এমন কেউ পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবেন না।
আর পার্সোনাল লোন নিতে চাইলে যে, সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে।
সেগুলো হল-
- জাতীয় পরিচয় পত্র কপি
- ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
- চাকরিজীবীদের আইডি কার্ড
- ৬ মাস পর্যন্ত ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ঋণগ্রহণে জামিনদার/ গ্যারান্টার
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- বিদ্যুৎ বিল, গ্যাসের বিল, পানির বিল থাকতে হবে
- চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে স্যালারি একাউন্ট
- নিয়োগপত্র এবং পে স্লিপ
- আবেদনকারী যদি বাড়ির মালিক হয়। সেক্ষেত্রে বাড়ির দলিল, আর ভাড়াটিয়া হলে ভাড়ার রশিদ
- ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স
তো বন্ধুরা আপনারা যদি উপরোক্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যাংক হতে পার্সোনাল লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
আমরা আপনার সুবিধার জন্য উপরে, সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নাম উল্লেখ করেছি। এখন আপনি ব্যাংকগুলোর শর্তসাপেক্ষে পার্সোনাল লোন নিতে পারেন।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আপনারা যারা পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন। সে বিষয়ে আমরা আপনাকে বিস্তারিত ভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি।
কোন ব্যাংক হতে লোন নিতে পারবেন। লোন নেওয়ার যোগ্যতা কি, লোন নেওয়ার বয়স, পার্সোনাল লোনের সার্ভিস চার্জ কত? এছাড়া্ আরো অন্যান্য বিষয়ে।
তো সর্বশেষ আমাদের লেখা আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো আশা করি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আর বিশেষ করে পার্সোনাল লোন কিভাবে নেবেন। এই বিষয়ে আপনার বন্ধুদের জানাতে একটি সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করুন। ধন্যবাদ