ফ্রিল্যান্সিং কাজ কত প্রকার ও কি কি : আজকে আমাদের এই পোস্টে আমরা ফ্রিল্যান্সিং কাজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি।
বর্তমান সময়ে, ইন্টারনেট নির্ভর যুগে ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে, সবচেয়ে জনপ্রিয় জীবিকার মধ্যে একটি। সারা বিশ্বে এরকম অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং পেশা আছে। যা আপনি আপনার বাসায় বসে করতে পারবেন।
এছাড়া এমন অনেক কোম্পানি আছে। যারা দক্ষ ব্যক্তিদের স্কিল গুলোর ওপর নির্ভর করে। তাদের বিভিন্ন ধরনের এবং পেশাগত কাজকর্ম মিটিয়ে নিতে আগ্রহী থাকেন।
আজ আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়ে দেবো। কতগুলো জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজের ধরন এবং পেশাগত যোগ্যতা সম্পর্কে।
আপনি যদি এই আর্টিকেল সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে চান। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার ও কি কি ?
বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে work-from-home এর স্বাধীনতা প্রদান করে থাকে। এখানে আপনি কোন কোম্পানির অধীনস্থ না হয়েও। নিজে স্বাধীনভাবে সেই কোম্পানির সাথে সংযুক্ত হয়ে। আপনার পেশা অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
তার জন্য বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে এমন হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সিং চাকরি আছে। যা একজন ব্যক্তিকে টাকা ইনকামের সঠিক পথ দেখিয়ে দেয়।
তার মধ্যে, আমরা জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং পেশা নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করব। তার জন্য নিচে দেওয়া পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করতে হবে। যেমন-
কপিরাইটিং এবং ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং
ডিজিটাল যুগে ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং এবং কপিরাইটিং এর চাহিদা অনেক বেশি। এ সকল কাজে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি বা ক্লায়েন্ট এর হয়ে, ডিজিটাল কনটেন্ট লিখতে হবে।
সেজন্য আপনি অন্য কারো হয়ে লিখে থাকলে, সেটা কে ঘোস্ট রাইটিং বলা হয়। এখানে আপনাকে অন্যের জন্য ব্লগ, আর্টিকেল, ই বুক, বই রিসার্চ, প্রেস রিলিস, মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপন এর কপি এছাড়া অন্যান্য লেখা লিখতে হতে পারে।
আপনি অনলাইন ইন্টারনেট ব্যবহার করে, নিজের ল্যাপটপ বা এন্ড্রয়েড মোবাইল থেকে এসকল পরিষেবা প্রদান করতে পারবেন। তার জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় দক্ষতা হিসেবে, প্রয়োজন পড়বে সেগুলো হচ্ছে-
- ভালো সৃজনশীল লেখার দক্ষতা থাকতে হবে।
- সঠিক সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
কোডিং, প্রোগ্রামিং, ডেভেলপিং
প্রোগ্রামিং বিশ্বের সবথেকে চাহিদাসম্পন্ন পেশা গুলোর মধ্যে একটি। যে কোন ব্যবসার ক্রিয়েটিভ প্রজেক্ট এবং প্রতিষ্ঠান অনলাইন উপস্থিতি যেমন ওয়েবসাইট মেকিং, তৈরি করার জন্য বিশেষভাবে প্রোগ্রামার এবং কোডার এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে।
অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে, ফ্রিল্যান্সিং ডেভলপাররা বিভিন্ন ধরনের ক্ষেত্র গুলোতে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকে। ফ্রন্ট এন্ড ডেভলপিং এর ক্ষেত্রে, গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস তৈরি করতে জানতে হবে অবশ্যই।
আর আপনি যদি ব্ল্যাক এন্ড ডেভলপার থাকেন। তাহলে, আপনাকে ওয়েবসাইটের আর্কিটেকচার স্ক্রিপটিং ডাটাবেজ তৈরি করাতে এক্সপার্ট হতে হবে। ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
এই কাজ করার জন্য আপনার অবশ্যই প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকতে হবে সেগুলো হচ্ছে-
- চাহিদাসম্পন্ন কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেমন- এইচটিএমএল, রুবি, জাভা, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি ব্যাপকভাবে পারদর্শী হতে হবে।
- ড্রিমউইভার .net এবং জাভা জাতীয় সফটওয়্যার টুলকিট সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
- ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপিং এর কাজ জানা থাকলে সেটি এডেড স্ক্রিল এর মধ্যে পড়ে যাবে।
গ্রাফিক ডিজানিং
গ্রাফিক ডিজাইন বহু বছর ধরে বিশ্বে জনপ্রিয় এগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিত হয়েছে। বিশেষ করে, ভারত এবং বাংলাদেশের মতো দেশে ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা আছে।
একজন ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর নির্দিষ্ট কারুশিল্প এবং সৃজনশীলতা থাকা অত্যন্ত জরুরী। ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে চাইলে আপনাকে আপনার বিশ্বস্ত এবং নিস সবার আগে নির্ধারিত করতে হবে।
একজন দক্ষ টাইপগ্রাফার, টিশার্ট জিজাইনার হতে পারেন। এছাড়া কোন ইকমার্স স্টোর এর হয়ে ডিজাইন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার কিছু জরুরী দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-
- গ্রাফিক্স ডিজাইনে প্রফেশনাল ডিগ্রী থাকতে হবে।
- গ্রাফিক ডিজাইনিং সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
- গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার গুলো ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে।
ভার্চুয়াল অ্যাসিসটিং
একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকতে পারে। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক সহায়তা থেকে শুরু করে গ্রাহক সহায়তা দেওয়া উত্তর দেওয়া এবং নিয়োগকর্তার জন্য নির্ধারণ করা এবং বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট এর কাজ পরিচালনা পর্যন্ত করা লাগতে পারে।
এখানে আপনাকে লেখার বাহিরে বিভিন্ন কাজ করতে হবে যেমন- চ্যাটিং সাপোর্ট দেওয়া, যোগাযোগ পরিচালনা, অনুসন্ধান করা, সময় পরিচালনা করা আরো অন্যান্য কাজ।
ফ্রীলান্সিং লেখকদের মত আপনার দ্রুত লেখার দক্ষতা থাকলে এবং অনলাইনে কাজ করার সামান্য ব্যবস্থা থাকলে। আপনি ভার্চুয়াল এসিস্টেন হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
এ ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট পেশায় ক্লায়েন্ট অনুযায়ী আপনার প্রজেক্ট এর ধরন পাল্টাতে পারে। তার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-
- বেসিক রাইটিংয়ের জ্ঞান থাকতে হবে।
- অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজের ধরন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
- ইমেইল, মিটিং, সময়সূচী এবং এপয়েন্টমেন্ট পরিচালনা করা জানতে হবে।
মোবাইল এপস ডেভেলপমেন্ট
কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর মধ্যে জাভা সম্পর্কে আপনার ভালো জ্ঞান থাকলে আপনি ফ্রীলান্সিং মোবাইল অ্যাপ ডেভলপমেন্ট কে পেশা হিসেবে সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
কিন্তু এখানে কোডিং সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এছাড়া আপনি যদি এমএস উইন্ডোজ বা অ্যাপেল আইওএস প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করেন।
- লিড জেনারেশন কি ? কিভাবে লিড জেনারেশন করে ইনকাম করবেন ?
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করবেন? [বিস্তারিত দেখুন]
- অনলাইনে কিভাবে দ্রুত টাকা আয় করা যায়
তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এখানে মূলত আপনার ক্লায়েন্ট এর হয়ে এন্ড্রয়েড ডিজাইন করে দিতে হবে।
এই কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-
- অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে আগ্রহী হতে হবে।
- আগের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্ছনীয়।
এসইও প্রফেশনাল
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কিম্বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হচ্ছে, এখনকার মার্কেটের প্রায় সব থেকে, জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং পেশা গুলোর মধ্যে একটি।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে, একটি সম্পন্ন দক্ষতা নির্ভর পেশা। এখানে মূলত আপনাকে কোন ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চ ফলাফলের তালিকা নিয়ে যেতে হবে।
তার জন্য আপনাকে লিঙ্ক বিল্ডিং, ট্রাফিক জেনারেশন, পান্ডা এফেক্ট, গুগোল এর বিহেভিয়ার অ্যালগরিদম এবং আরো অন্যান্য বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বিশেষ করে এশিয়া মানে কি এই বিষয়ে আমরা আগেই আমাদের ওয়েবসাইটে একটি পোস্ট পাবলিশ করে দিয়েছি আপনার চলে সেই আর্টিকেলটি অনুসরণ করে বিস্তারিত এসইও সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
আপনি যদি এই কাজটি করতে চান। তাহলে এসইও প্রফেশনালের কিছু দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-
- গুগল এর অ্যালগরিদম এর এবং এসইও টুল সম্পর্কে ভালো দক্ষতা হবে।
- কিওয়ার্ড এবং ট্রাফিক জেনারেশনের জ্ঞান থাকতে হবে।
- গুগল এডসেন্স সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
ট্রান্সলেশন
বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে প্রতিষ্ঠান প্রকাশক এবং গ্লোবাল কর্পোরেশনগুলোর জন্য স্থানীয় কনটেন্ট প্রস্তুত করা সব থেকে কার্যকর বিক্রিীবাটার মাধ্যম গুলোর মধ্যে অন্যতম।
এসকল আঞ্চলিক কনটেন্ট প্রস্তুত করার জন্য উক্ত সকল কোম্পানির গুলো বিভিন্ন পারদর্শী ফ্রিল্যান্সিং ট্রান্সলেটরদের খোজে থাকেন।
আপনি যদি একাধিক ভাষার পারদর্শী হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার কোন ট্রান্সলেশন এর ডিগ্রি থাকে। তাহলে উক্ত কাজ আপনার জন্য অনেক উপর্যুক্ত হবে।
তাছাড়া, ট্রান্সলেশন ফ্রিল্যান্সারদের কাছে, অনেক জনপ্রিয় একটি কাজ করার উপায়। উক্ত কাজ করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকতে হবে যেমন-
- বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার বিষয়ে সম্পূর্ণ দক্ষ হতে হবে।
- সাহিত্য জ্ঞান থাকাটা বোনাস অ্যাডভান্টেজ।
আপনারা উপরের যে ফ্রিল্যান্সিং কাজ কত প্রকার গুলো জানতে পারলেন। এগুলো ছাড়া আরও অসংখ্য প্রকার রয়েছে। সে ফ্রিল্যান্সিং কাজের ধরন নিয়ে, আপনার ফ্রিল্যান্সিং করলে, সহজেই নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন, আশা করা যায়।
- মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার উপায়
- ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো অনলাইনে?
- গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব : গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার ওয়েবসাইট
শেষ কথাঃ
উপরের আলোচনায় এ পেশাগুলো ছাড়া আপনি আরও অসংখ্য কাজের প্রকার পেয়ে যাবেন যেমন- গেম ডেভেলপমেন্ট, লিগাল সার্ভিসেসে, অনলাইন টিউশন, মার্কেটিং স্পেশালিষ্ট, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, ওয়েব রিসার্চ, ট্রান্সক্রিপশন, সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিপ্ট রাইটিং ইত্যাদি।
তাই আপনার সাথে ফ্রিল্যান্সিং এ সফলতা অর্জন করতে চান। তাহলে এই কাজগুলো করার জন্য অনলাইনে অসংখ্য মার্কেটপ্লেস পেয়ে যাবেন সেখানে যুক্ত আপনারা নিজের ক্যারিয়ার করতে পারবেন।
আমাদের আজকের আলোচনাটি আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন। আর বিশেষ করে, এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের জানাতে একটি শেয়ার করে দিবেন।
এছাড়া, আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত আরো নতুন নতুন টিপস পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
I want freelancing