দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির সহজ উপায় : আমরা জানি দুশ্চিন্তা মানুষের জীবনের সঙ্গে অতপ্রোত ভাবে জড়িত। এটি যেমন মনে হয় মুদ্রার এপিট ওপিট। চিন্তা ছাড়া মানুষ অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণা তে, বলা হয়েছে, মানসিক চাপ- হৃদরোগ ক্ষতির কারণ। এবং নিউ ইয়র্ক এর রচেস্টার মেডিকেল সেন্টার এর “সেন্টার ফর মাইন্ড বিডি রিসার্চের”, মনোরোগ বিদ্যার সহকারী অধ্যাপক জানান যে,
বিভিন্ন তথ্য ও প্রাপ্ত বিশ্লেষণ করে, জানা যায় দুশ্চিন্তা, স্বল্প খাবার খাওয়া বা ব্যায়াম করার অনীহার ফলে হয়।
যে সকল শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। মানসিক চাপ এর জন্য সৃষ্ট সমস্যা গুলো সাধারণত আরো ভয়াবহ হয়। তো আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান?
তাহলে আমাদের দেওয়া ৭ টি সহজ উপায় অনুসরণ করতে পারেন।
সেই উপায় গুলো অনুসরণ করার ফলে, আপনার মানসিক চাপ কমিয়ে দিয়ে, হৃদয় সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে, “ইনশাআল্লাহ”।
তো আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার ০৭ টি সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ৭ টি সহজ উপায়
আমরা আগেই জানিয়েছে দুশ্চিন্তা ছাড়া কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে কিছু কিছু মানুষ অতিরিক্ত ভাবে, দুশ্চিন্তা করার ফলে, শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আর মানুষের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেলে মন-মেজাজ কিন্তু ভালো থাকে না। তাই আপনি যদি বেশি দুশ্চিন্তায় ভোগে থাকেন।
সেক্ষেত্রে, অবশ্যই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা ৭ টি সহজ উপায় প্রস্তুত করেছি যা অনুসরণ করে। আপনার দুশ্চিন্তা দূর করতে পারবেন।
তো চলুন আর সময় নষ্ট না করে জেনে নেয়া যাক। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় গুলো সম্পর্কে।
01. মেডিটেশন
মানসিক চাপ দূর করে, মনকে শান্ত করার জন্য মেডিটেশন একটি কার্যকরী ব্যায়াম। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে 25 মিনিট।
একটানা ০৩ (তিন) দিন মেডিটেশন করলে, তা হতাশা ও দুশ্চিন্তা অনেকটাই দূর করতে সহায়তা করে।
তাই আমি আপনাকে বলব। প্রথমত, আপনারা দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য মেডিটেশন করতে পারেন।
তো একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ইয়োগা করে, তারা তুলনামূলক অনেক কম শারীরিক সমস্যায় ভোগেন।
02. নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন
আপনার মাথা থেকে দুশ্চিন্তা ধরে রাখতে চাইলে, নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন। আপনার মস্তিষ্ক ও হাত ব্যস্ত থাকে এমন কোন কাজ করুন যাতে করে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হয়। যেমন-
- মোবাইল গেম খেলুন
- কোন অঙ্কন করুন
- ভিডিও শো দেখুন, ইত্যাদি
এক্ষেত্রে আপনি যদি কোন কাজ না করে, অলসতা ভাবে শুয়ে বসে থাকেন। তাহলে হতাশা আর দুশ্চিন্তা আপনাকে ঘিরে থাকবে, এটাই কিন্তু স্বাভাবিক।
তাই যে, কোন প্রোডাক্টেড কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। তাহলে কিছু টা চিন্তা দূর করতে পারবেন।
03. বাস্তববাদী হোন
আপনার সাথে যে কোন ঘটনা বা ভবিষ্যতে কি ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় অনেক অযথা উষকণ্ঠিত এবং চিন্তিত হয়ে পড়েন।
এজন্য মনে রাখতে হবে জীবন মানেই কিছু সমস্যা থাকবে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে। যা জীবনে কাম্য নয় কিন্তু এটিও কিন্তু ঠিক সবকিছু সমাধান আছে।
এবং সময়ের সাথে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। তাই বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়ে তার সাথে খাপ খাইয়া চলার মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে।
সকলের এতে করে আপনার টেনশন বা দুশ্চিন্তা কমে যাবে।
আপনি তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এর প্রতি অতিরিক্ত আবেগী মনোভাব দূর করুন। মনে করুন, গবেষকদের মতে জানা গিয়েছে যে, প্রিয় টিমের ফুটবল পরাজয় দেখার সাথে সাথে, হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি আরো বৃদ্ধি পায়।
তার জন্য তুচ্ছ কারনে, উত্তেজিত কখনোই হবেন না কারণ জীবনের মূল্য এর চেয়ে বেশি আর কিছু নয়।
04. নির্ভুল হওয়ার চিন্তা বাদ দিন
আপনারা যারা চরিত্রে’র মানে, সব সময় শ্রদ্ধ চরিত্র এর অধিকারী হতে চান? তারাই মূলত হৃদরোগে বেশি ভোগেন। এ ধরনের অতিরিক্ত খুঁতখতে মনোভাব শেষ পর্যন্ত ব্যক্তির চরিত্রে শত্রুতার মনোভাব সৃষ্টি করে।
মানুষের চরিত্রের পেছনে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শত্রু ভাবাপন্ন মনোভাব মূল তালিকা সত্য হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই এ ধরনের মনোভাব ব্যক্তির মানে অন্যদের প্রতি প্রবল বিদ্বেষ তৈরি করে থাকে।
একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে শক্রু ভাবাপন্ন মনোভাব উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করার মূল কারণ যা হৃদরোগ এর কারণ।
তাই সব সময় দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। তাহলে দুশ্চিন্তা কমাতে পারবেন।
05. বন্ধুদের সাথে সময় কাটান
আপনাদের সব সময় একাকী থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্ষতি হতে পারে। এমনকি কখনো কখনো হৃদরোগ ধরা না পড়লেও, ক্ষতির আশঙ্কা কিন্তু থাকবে।
তার জন্য একাকী ঘরে বসে না থেকে আপনার প্রিয় বন্ধু বান্ধব দের সাথে সময় কাটান। তবে, প্রকৃত বন্ধু ছাড়া মেলামেশা করুন বেন না। এতে করে আপনার টেনশন কমানোর বিপরীতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
06. প্রাণ খুঁলে হাসুন
আমরা ২০০৫ সালের পরিচালিত গবেষণায় জানতে পেরেছি সব সময় গম্ভের থাকার বিপরীতে প্রাণ খুলে হাসলে শতকরা ২০% বেশি ক্যালরি পোড়ানো যায়।
এক্ষেত্রে, প্রাপ্তবয়স্ক লোকদেরকে নিয়মিত হাস্যকর ও তুলনামূলক গম্ভের চলচ্চিত্র দেখানোর পর গবেষকরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আসেন।
তাই নিয়মিত প্রমথ হৃদয়ে স্পন্দন এর হার বাড়িয়ে দেয়।
আবার ২০১০ সালে প্রকাশিত আমেরিকান জার্নাল অফ কার্ডিওলজির তথ্য মতে হাসি ঠাট্টার ফলে দেহের সংবন তন্ত্র কিংবা বিভিন্ন নালীর কার্য ক্ষমতা বেড়ে যায়।
তাই ঠোঁটের কোণে সব সময় এক চিলতে হাসি রাখুন বা পারলে মন খুলে হাসবেন। এতে করে দুশ্চিন্তা ভুলে থাকতে পারবেন।
07. ডায়েরি লিখুন
মনে করুন- আপনি কখনোই ডাইরি লেখেননি বা ডাইরি লিখতে পছন্দ করেননি। তো যে বিষয়টি আপনাকে কষ্ট দিয়েছে। মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সেটি একটি ডাইরিতে লিখবেন। তার পাশাপাশি আপনি কি চান? বা কি করলে আপনার ভালো লাগবে। সে বিষয়টি লিখবেন ডাইরি লেখার এই অভ্যাসটি মানসিক চাপ কমাতে, অনেক বেশি সহায়তা করে।
তাই আপনি দুশ্চিন্তা না করে, আপনার মনের ভাব গুলো ডাইরিতে, লিখে প্রকাশ করবেন। তাহলে দেখবেন আপনার দুশ্চিন্তা গুলো কমে গেছে।
শেষ কথাঃ
আমাদের আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারলেন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ৭ টি সহজ উপায়। আমরা আগেই বলেছি, দুশ্চিন্তা ছাড়া মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
এক্ষেত্রে কিছু মানুষের দুশ্চিন্তা বেশি আবার কিছু মানুষের দুশ্চিন্তা কম। তো আপনি যদি দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন।
সেক্ষেত্রে আপনি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপরোক্ত কাজ গুলো যদি সঠিকভাবে করতে পারেন।
তাহলে আশা করা যায় আপনি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাল্লাহ।
আমাদের লেখা আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পরে আপনার কাছে কেমন লাগলো আশা করি কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন।
আর বিশেষ করে, আপনার বন্ধুবান্ধবদের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার এই ৭ টি উপায়। জানাতে নিচে থাকা যে, কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে, শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।