জনতা ব্যাংক ডিপিএস : বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে যারা জনতা ব্যাংক এর গ্রাহক আছেন। তারা জনতা ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী বোধ করেন।
তো আপনিও যদি জনতা ব্যাংক রিপিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান। তবে আমাদের আর্টিকেলের আলোচনাটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
আপনারা চাইলে জনতা ব্যাংকের মোট ৫ টি কাজ সম্পাদনের জন্য জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন।
যেমন-
- অনিবাসী পেনশন স্কিম
- জনতা হজ ডিপোজিট স্কিম
- জনতা ডিপোজিট স্কিম
- জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং সঞ্চয় হিসাব
- জনতা ব্যাংক নারী প্রকল্প সঞ্চয়ী হিসাব
আপনি যদি জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান এবং আপনার টাকা সঞ্চয় করে রাখতে চান। সে ক্ষেত্রে এই পাঁচটি ডিপিএস স্কিম সহজেই খুলতে পারবেন।
তো চলুন এখন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
অনিবাসী পেনশন স্কিম
জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট বিদেশে যারা বসবাসরত বা কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক আছেন। সে সকল নাগরিক সহজেই অনিবাসী পেনশন স্কিম একাউন্ট খুলতে পারবেন।
তাই আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তবে আপনারা চাইলে। অনিবাসী পেনশন স্কিম জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারেন।
অনিবাসী পেনশন স্কিম এর ফিচার সমূহঃ
- আপনারা চাইলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর মেয়াদী অনিবাসী পেনশন স্কিম করতে পারবেন।
- আপনারা মাসিক কিস্তি ৩০০০ থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকার মধ্যে রাখতে পারবেন।
- অ্যাকাউন্টে যে, পরিমাণ টাকা রাখবেন। সে পরিমাণ টাকা মাসের প্রথম দিন হতে শেষ দিন পর্যন্ত। যে, কোন একদিন জমা দিতে পারবেন।
- উক্ত একাউন্টের মাসিক সদের হার ৮.৫%।
- তাছাড়া, মেয়াদ করতে হওয়ার আগে আপনি যদি টাকা উত্তোলন করতে চান। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মেয়াদের জন্য বিভিন্ন ইন্টারেস্ট/ সুদ রেড প্রযোজ্য হবে।
অনিবাসী পেনশন স্কিম একাউন্ট খোলার নিয়ম
- উক্ত একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে অ্যাকাউন্ট খোলার যে ফর্ম আছে সে ফর্মটি স্বাক্ষর যুক্ত করতে হবে।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সে ব্যক্তির তিন কপি রঙিন ছবি প্রয়োজন হবে।
- পাসপোর্ট এর প্রথম সাত পাতার ফটোকপি লাগবে।
- যে ব্যক্তিকে নমিনি হিসাবে সিলেক্ট করতে চান সেই ব্যক্তির দুই কপি রঙিন ছবি লাগবে।
- আপনি একাউন্টের যে পরিমাণ টাকা রাখবেন সে টাকাগুলো রেমিটেন্স এর মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
- প্রতি মাসের কিস্তি প্রতি মাসে দিতে পারেন এছাড়া আপনারা অগ্রিম টাকা রাখার সুযোগ পাবেন।
- কোন নাবালক বা নাবালিকা এছাড়া যুগ্ম নামে এই একাউন্ট তৈরি করতে পারবেনা।
হজ ডিপোজিট স্কিম জনতা ব্যাংক ডিপিএস
তো আপনারা যারা জনতা ব্যাংক এর যে হজ ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট পেয়ে যাবেন। সেই জনতা ব্যাংক ডিপিএস স্কিম একাউন্ট তৈরি করে নিতে পারেন।
একাউন্টের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আপনি যদি কোন ধরনের সুদ ছাড়া ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান। তবে এই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
হজ ডিপোজিট স্কিম এর ফিচারসমূহ
- উক্ত একাউন্টে মেয়াদকাল সর্বনিম্ন এক বছর হতে ২০ বছর পর্যন্ত।
- উক্ত একাউন্টে কোন ধরনের সুদ প্রদান করা হয় না। মানে আপনি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- আপনার পছন্দমত মেয়াদে কিস্তির পরিমাণ নির্ধারণ করে নিতে পারবেন।
- তাছাড়া যে ব্যক্তি এই অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে। সে ব্যক্তি তার পছন্দমত যে, কোন সময় টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
- একাউন্টে কোন প্রকার চার্জ আরোপ করা হবে না কিন্তু সরকারি টেক্স প্রদান করতে হবে।
হজ ডিপোজিট স্কিম একাউন্ট খোলার নিয়ম
- যে কোন বয়স্ক প্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- একাউন্ট তৈরি করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড/ পাসপোর্ট/ জন্ম নিবন্ধন সনদ/ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মধ্যে যেকোনো একটি কপি থাকতে হবে।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী সেই ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে।
- যে ব্যক্তিকে নমিনি হিসাবে রাখতে চান? সে ব্যক্তির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- তাছাড়া যুগ্ম নাম এবং একই নামে, একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলার মত সুবিধা পেয়ে যাবেন।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস
জনতা ব্যাংকের যে স্কুল ব্যাংকিং সঞ্চয় কার্যক্রম আছে। সেই কার্যক্রমে আপনারা চাইলে। জনতা ব্যাংক ডিপিএস সিস্টেমের টাকা জমা রাখতে পারবেন।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস এর ফিচারস সমূহ
- আপনারা চাইলে পছন্দ মত যে কোন মেয়াদকাল নির্ধারণ করে নিতে পারবেন।
- মাসিক ইফতার পরিমাণ ১০০ টাকা প্রদান করতে হবে।
- উক্ত একাউন্টের জন্য সুদের হার নির্ধারিত করা হয়নি।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস খোলার নিয়ম
- যে ব্যক্তি একান্ত তৈরি করতে চান সে ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর পরিচয় পত্র লাগবে।
- অ্যাকাউন্ট খোলা ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- যে ব্যক্তিকে নমিনি হিসেবে রাখতে চান তার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে।
- এছাড়া প্রয়োজন হলে অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে।
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প
আপনি যদি নারীর সঞ্চয় প্রকল্প অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে আগ্রহী থাকেন তবে জনতা ব্যাংকের অধীনে সে জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প এর ফিচারস সমূহ
- আপনারা চাইলে সর্বনিম্ন পাঁচ বছর থেকে শুরু করে দশ বছর পর্যন্ত একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- 1000 টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকায় গুনিতকে সর্বোচ্চ ২৫০০০ টাকা প্রতি মাসে জমা করতে পারবেন।
- উক্ত একাউন্টের জন্য সুদের হার ৬ পার্সেন্ট।
- এছাড়া আপনি যদি পাঁচ বছর এর আগে বা ১০ বছর এর আগে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে চান। তবে চার্চ বাবদ টাকা বাকি রেখে সরল সুদে আপনাকে টাকা গুলো ফিরিয়ে দেয়া হবে।
জনতা ব্যাংক নারি কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প একাউন্ট খোলার নিয়ম
- ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারীরা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।
- অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি প্রযোজ্য।
- যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান সেই ব্যক্তির সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি দরকার।
- যে ব্যক্তিকে নমিন হিসেবে রাখতে চান তার এক কপি রঙিন ছবি দরকার হবে।
- পরিচয় প্রমাণ এর জন্য প্রমাণিক দলিলের ফটোকপি দরকার হবে।
তো আপনারা যারা জনতা ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান। তারা উপরোক্ত, ডিপিএস স্কিম গুলো করতে পারেন।
- ডিপিএস কি ? কত ধরনের ডিপিএস আছে এবং ডিপিএস এর সুবিধা ও অসুবিধা
- মোবাইল ব্যাংকিং কি ? মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হলো জনতা ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যসমূহ।
আপনাদের যদি জনতা ব্যাংক একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে আপনারা সেই একাউন্ট থেকেই বিভিন্ন ক্যাটাগরির ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারবেন।
আর সেখানে আপনারা বিভিন্ন মেয়াদে টাকা সঞ্চয় করে রাখতে পারবেন। যা মেয়াদ পূর্তি হওয়ার পরে, আপনারা আসল ও সুদসহ টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।
তো আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো। আশা করি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আর বিশেষ করে এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের জানাতে, অবশ্যই একটি শেয়ার বাটনে ক্লিক করে দিবেন ধন্যবাদ।