দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত – আমরা সব সময় শিশুদের শাসন করে থাকি। তাদের বেশি মোবাইল ব্যবহার করার প্রবণতা নিয়ে। কারণ শিশুরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে।
সবসময় মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে, বিভিন্ন ধরনের গেম খেলায় আগ্রহী থাকে। তাই তাদেরকে মোবাইল কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়।
তাই বলে কি, আমাদের মত বড়দের ক্ষেত্রে রয়েছে মোবাইল ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা। হ্যাঁ আমাদের ও অত্যাধিক মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত।
তার কারণ কাজের প্রয়োজনে আমরা যেমন- ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটার এবং ল্যাপটপের স্ক্রিনের সামনে তাকিয়ে থাকি। তেমনি আমাদের অবসরের বেশিরভাগ সময় গুলোতে, মোবাইল ফোনের সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘাটাঘাটি করে, টিভির সামনে বা ট্যাবলেট এর মাধ্যমে গল্প পড়া।
বিশেষ করে, মানুষ যখন, অবসর সময় পায় এবং শুয়ে থাকার সময়, সব সময় তারা মোবাইল ফোনে প্রয়োজন ছাড়াও চেয়ে থাকে। বিভিন্ন মুভি দেখার জন্য ভিডিও গান শোনার জন্য কিংবা গেম খেলার জন্য।
[wp_show_posts id=”3308″]
এছাড়া বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ডিস্ট্যানসিং এর জন্য অনেকে অনলাইনে কথোপকথন এর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে, কি এই অত্যাধিক মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে আটকে থাকার ফলে, এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব কি, আমাদের ওপর পড়ে, হ্যাঁ অবশ্যই পারে।
আর্টিকেল থেকে জেনে নেয়া যাক। বেশিক্ষণ স্ক্রিনের সামনে তাকিয়ে থাকা ঠিক কতটা অস্বাস্থ্যকর। আর আমাদের দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত। আপনি যদি এ বিষয়ে পরিপূর্ণ তথ্য পেতে চান। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আমরা কেন সবসময় মোবাইল ব্যবহার করতে চাই ?
আমাদের মস্তিষ্কে বেশ কয়েকটি কক্ষ রয়েছে যা থেকে ডোপামিন নাম এর এক প্রকার রাসায়নিক ক্ষরিত হয়। যখন আমাদের চারপাশের পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে। তখন এই রাসায়নিকটি আমাদের মনকে ভালো অনুভব করতে সহায়তা করে।
[wp_show_posts id=”3303″]
আর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অনেক মানুষ এর কাছে মোবাইল এর মাধ্যমে সামাজিক মিডিয়ায় মানুষের সাথে ইন্টারেস্ট করলে, তাদের মস্তিষ্ক ডোপামিন এর ক্ষরণ করে থাকে।
বর্তমান সময়ে, বহু মানুষ তাদের অবসর এর বেশি সময় মোবাইলের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করে, সময় কাটিয়ে থাকে।
এবং স্বাভাবিক ভাবে, তাদের মস্তিষ্কের বারংবার ডোপামিন ক্ষরণে তাদের কে দীর্ঘ সময় ধরে, মোবাইল ব্যবহার করতে আকৃষ্ট করে তোলে্
সে ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এই নিয়মিত, ডোপামিন এর ক্ষরণ মোবাইল ব্যবহারের প্রতি মানুষের আসক্ত করে তোলে। আমরা জানি যে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা থাকলে আমাদের মধ্যে দেখা দিতে পারে চরম মোবাইল আসক্তি। এর থেকে জন্ম নিতে পারে শারীরিক অনেক ধরনের সমস্যা।
আমরা আমাদের আগের আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়েছি মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাবার উপায় সে বিষয়ে আপনারা পড়ে নিতে পারেন।
একটানা মোবাইল স্ক্রিনের সামনে সময় কাটালে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে ?
আপনি যদি একটানা মোবাইল স্ক্রিনের সামনে তাকিয়ে থাকেন। তাহলে আপনার নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। অনেক চিকিৎসকরা মানুষের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয় নিয়ে, বেশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
[wp_show_posts id=”3306″]
চিকিৎসকদের মতে একটানা মোবাইল ব্যবহার করলে, বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে যেমন-
- হরমোনাল ইমব্যালেন্স থেকে হতাশা ও উদ্বিগ্ন।
- মানুষের পার্থক্যের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়।
- কুজো হয়ে যাওয়া। সুয়া, বসার ভঙ্গি পাল্টে যাওয়ায় ক্রনিক ব্যথার সমস্যা।
- ঘুমহীন এবং অতিরিক্ত মাথা ব্যথা।
- নিজের আত্মসম্মান নিয়ে উদ্বেগ।
- চোখের দৃষ্টি সমস্যা।
- কোমরে, পিঠি এবং ঘারের সমস্যা।
- শরীরের ফিটনেস সচ্ছলতা হারিয়ে যাওয়া।
- মোবাইল ব্যবহারের আসক্ত হয়ে পড়া।
- শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া।
এছাড়া আরো অনেক রয়েছে যেগুলো আপনারা অতিরিক্তভাবে মোবাইল ব্যবহার করলে বুঝতে পারবেন। এর মধ্যে বেশ কিছু লক্ষণ হয়তো আপনার বা আপনার আশেপাশের মানুষ জনের হয়ে থাকতে পারে।
[wp_show_posts id=”3308″]
যা কখনো একজন মানুষের জীবনযাত্রার অংশ হতে পারে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সুস্থ থাকতে হলে আমাদের দিনে কতক্ষণ মোবাইল চালানো উচিত।
দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত ?
বিভিন্ন বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা, অনেক ধরনের অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পেরেছেন। যে একজন বয়স্ক প্রাপ্ত এবং প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উচিত, তার প্রতিদিনের কাজের বাইরেও প্রতিদিন 2 ঘন্টার যে কোনো ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা।
তাদের মতে যে সময়টা আপনি অহেতুক মোবাইল স্ক্রিনের সামনে, নষ্ট করছেন। তার জায়গাতে আপনি যদি অন্য কোন শারীরিক কার্যকলাপ নিযুক্ত থাকেন। তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ফলপ্রদ হবে।
কিন্তু একবার দীর্ঘক্ষন ধরে মোবাইল স্ক্রিনে, তাকানোর অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে তা সহজে ভুলে যেও মুশকিল হয়। তবে আপনি ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে থাকলে নিশ্চয় আপনার প্রতিদিনের মোবাইল ফোন ব্যবহার কমিয়ে দিতে পারবেন।
গুগল ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ও অ্যাপল স্ক্রিন টাইম
মানুষের নিয়ম মোবাইল ঘাঁটার নেওয়ার জন্য অ্যাপেল এবং তাদের এন্ড্রয়েড মোবাইল গুলোতে যথাক্রমে, ইনবিল্ট এবং ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং নামের এক ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সংযুক্ত করেছে।
[wp_show_posts id=”3303″]
যার ফলে আপনাকে ঘন্টা, দিন এবং সপ্তাহের মধ্যে আপনি কতটা সময় মোবাইলের সময় দিয়েছেন সেটি হিসাব রাখতে পারবেন। আর আপনি যদি দেখেন যে আপনি নির্দিষ্ট খুব সহজে সময় কাটাচ্ছেন তাহলে সেই অ্যাপ গুলো আপনার এটি ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবে।
উক্ত সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে, আপনি সেদিন আর আপনার মোবাইলে সেই অ্যাপটি ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন না। এটি হচ্ছে সবথেকে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম ব্যবহার করা।
কিশোর-কিশোরী এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের মোবাইল ব্যবহারের সময়-সীমা
আপনি যদি দিনে আট ঘন্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করো সুখী উৎপাদনশীল এবং ভাল বোধ করেন। তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে মোবাইলের সময় কাটাতে পারেন।
অন্যদিকে যাদের বেশিক্ষণ মোবাইলের সামনে তাকিয়ে থাকলে, স্ট্রেসড, উদ্বিগ্ন, হতাশ বিভ্রান্তিকর মনে হয় তাহলে অবশ্যই উচিত, মোবাইল ফোন কাটানোর সময়কে সারাদিনে, দুই ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া।
[wp_show_posts id=”3308″]
এ দুটি ক্ষেত্রে আপনার যা সঠিক মনে হয় সেটি করা উচিত। কারণ জোর করে, বা হঠাৎ করে, মোবাইলের ব্যবহার কমিয়ে ফেলা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হবে।
শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময়সীমা
বর্তমানে শিশুদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে মোবাইল ব্যবহারের প্রচলন দেখা যায়। বিশেষ করে, করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে অনলাইন ক্লাসের জন্য এই ব্যবহার চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
তাই বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ লেখাপড়ায় স্মার্ট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এবং অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকার কারণে শিশুদের মোবাইলের প্রতি আগ্রহ বেশি। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে হবে।
বিশেষ করে শিশুদের মোবাইল ব্যবহার করার সময় প্রতিদিন 2 ঘন্টা করে, রাখতে হবে এর বেশি রাখলে তাদের শারীরিক ক্ষতি দেখা দিতে পারে।
এ ক্ষেত্রে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক প্রাপ্ত লোকদের, সবসময় মনে রাখতে হবে, প্রতিদিন প্রয়োজনের তুলনায় 2 ঘণ্টার বেশি মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা ঠিক না।
আপনি যদি অতিরিক্তভাবে দিনে 8 থেকে 10 ঘন্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। সে ক্ষেত্রে আপনারা শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবেন যেগুলো আমরা উপরে উল্লেখিত করেছি।
তাই মোবাইল ফোন অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করা ব্যতিরেকে ভালো কিছু করার চেষ্টা করুন তাহলে শারীরিক ভাবে এবং মানসিক ভাবে সুস্থতা থাকতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ
- মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার ওয়েবসাইট
- গেম খেলার জন্য কোন মোবাইল ভালো [জেনেনিন এখানে]
- লঞ্চ হচ্ছে এই নতুন এন্ড্রয়েড 5G মোবাইল [জেনেনিন বিস্তারিত]
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হল, দিনে কত ঘন্টা মোবাইল চালানো উচিত। আমরা জানি বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষের কাছে একটি করে হলো মোবাইল ফোন রয়েছে।
তারা প্রয়োজন ছাড়াও অসংখ্য পরিমাণের সময় মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকে সময় নষ্ট করে থাকে। যার ফলে তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে।
তাই আপনি যদি আপনার শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ থাকতে চান। তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন মোবাইল ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করতে হবে যেমন- 2 ঘন্টা।
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি উপকারে আসে তাহলে, অবশ্যই এটি আপনার বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে একটি শেয়ার করে দিবেন।
আর বিশেষ করে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আপনি যদি নতুন নতুন টিপস এন্ড ট্রিক্স পেতে চান। তাহলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।