অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম হলো- প্রথমে আপনাকে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। অতঃপর নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সাবমিট করতে হবে। এসকল কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনাকে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর এসএমএসের মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আপডেট জানানো হবে।
অনেক সময় জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল এসে যায়। নামের বানান ভুল থাকে। জন্মতারিখ ভুল থাকে। এছাড়াও পিতা-মাতা বা ঠিকানা ভুল হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনারা নিজেরাই অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে নিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম ও ধারাবাহিকতা নিচে দিয়ে দেওয়া হল।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজনঃ
আপনি যদি নাম, পিতার নাম, মাতার নাম এর সংশোধনী আনতে চান- সেক্ষেত্রে আপনাকে একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং জন্ম নিবন্ধন সাবমিট করতে হবে।
পিতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে পিতার জাতীয় পরিচয় পত্র সংযুক্ত করতে হবে।
মায়ের নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্র সংযুক্ত করতে হবে।
আর যদি ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান সে ক্ষেত্রে, স্থায়ী ঠিকানা জমির পর্চা দলিলের ফটোকপি সাবমিট করতে হবে। সাথে অবশ্যই স্থানীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত একটি প্রত্যয়ন পত্র সাবমিট করতে হবে।
আর যদি নাম্বার পিতার নাম অথবা মাতার নামের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংশোধন হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তিক এফিডেভিট করে নিতে হবে। যেটি স্থানীয় কোন উকিল দিয়ে খুব সহজেই করে নিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি 230 টাকা যেটি রকেট এর মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। তার মধ্যে দুইশত টাকা ফ্রি এবং 30 টাকা ভ্যাট। আপনি যদি প্রথম বার আবেদন করেন সেক্ষেত্রে 230 টাকা নেবে অতঃপর যদি পুনরায় আবেদন করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে তিনশত পঁয়তাল্লিশ টাকা জমা দিতে হবে। অতঃপর যতবার আবেদন করবেন প্রত্যেকবার 115 টাকা করে আপনার ফী বাড়তে থাকবে।
আপনার সকল কাগজপত্র রেডি হয়ে গেলে জাতীয় পরিচয় পত্র সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করে সেখানে আবেদন করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে করনীয়
জাতীয় পরিচয় পত্রের সার্ভার রেজিস্ট্রেশন
আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে চান সে ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের যে ওয়েবসাইট রয়েছে সেখানে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র রেজিস্ট্রেশন এর সার্ভার হল: https://services.nidw.gov.bd/
রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে লগ-ইন করে নিন। অতঃপর ব্যক্তিগত তথ্য বাটনে ক্লিক করুন।
প্রথম ধাপে আপনি যে বিষয়গুলি সংশোধন করবেন সেগুলি এডিট করে নিন।
তারপর ভালো করে চেক করে নিন।
তারপর পরের ধাপে পেমেন্ট করে নিন।
তার পরের ধাপে প্রয়োজনীয় ফাইল বা কাগজপত্র আপলোড করে নিন।
এই তিনটি ধাপ হয়ে গেলে ফাইনাল সাবমিট করার জন্য প্রস্তুত। এবার ফাইনাল সাবমিট করুন সাবমিট করার পর একটি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের অপশন পাবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড
ন্যাশনাল আইডি কার্ড সংশোধন ফরম ডাউনলোড করে রেখে দিন এটি আপনাকে কোথাও জমা দিতে হবে না। এমত অবস্থায় আপনার রেজিস্ট্রেশন এবং অনলাইনে আবেদন করা হয়ে গিয়েছে। আপনি অপেক্ষা করতে থাকুন- দুই দিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনাকে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আপডেট।
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি সংশোধিত হয়ে গেলে আপনি জাতীয় পরিচয় পত্রের সার্ভারে লগ ইন করে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে সরাসরি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
যেটি দেখতে লেমিনেটিং ম্যানুয়াল জাতীয় পরিচয় পত্র দেখতে হবে। আপনি শুধু ডাউনলোড করে লেমিনেশন করে নিলেই আপনার আইডি কার্ড রেডি।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন চেক করার নিয়ম
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদন চেক করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র সার্ভার এ লগিন করতে হবে। অতঃপর সর্বশেষ অবস্থা সেখান থেকে জানতে পারবেন।
যদি কোন কারণে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন হতে আরও কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে সর্বশেষ স্ট্যাটাস বাটনে ক্লিক করে আপনাকে ফাইল আপলোড করতে বলা হবে। আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদন চেক করে আপডেট জানতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি যদি 17 ডিজিটের হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে সংশোধন হওয়ার পর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি 10 ডিজিটের নম্বরে চলে আসবে। এক্ষেত্রে 17 ডিজিটের পুরাতন জাতীয় পরিচয় পত্র এবং 10 ডিজিটের নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র বৈধ এবং লিগেল পর্যায়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
সর্বোপরি আমাদের পরামর্শঃ আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে আমাদের এই নিয়মগুলো ফলো করে আবেদন করুন আশা করি দুই দিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে সংশোধন হয়ে যাবে। এজন্য আপনাকে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন হবে না আপনি নিজে নিজেই এ কাজটি করতে পারবেন।
যদি আপনার কাছে এই কাজটি করতে অসুবিধা মনে হয় তাহলে আপনি চাইলে নিকটস্থ কোন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে কাজটি করিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে তারা 50 টাকা থেকে 200 টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারে।