ওয়েব হোস্টিং কি – আপনি যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানানোর কথা ভাবেন, তাহলে ওয়েব হোস্টিং ও ডোমেইন এর কথা সবর আগে ভাবতে হয়। আর এ ব্যাপারে আপনার জানাশুনা থাকাটা অনেক জরুরি। কেননা, ওয়েব হোষ্টিং হলো আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ এর বাড়ি/Land। যেভাবে এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষের থাকার জন্য একটি জায়গা বা ঘরের প্রয়োজন হয়, ঠিক সেভাবেই, ইন্টারনেটের জাগতেও একটি ওয়েবসাইটকে রাখার জন্য, জায়গার প্রয়োজন হয়। তাই, ইন্টারনেটে যেকোনো ব্লগ. ওয়েবসাইট, বা app চালু করার জন্য আপনার প্রথমেই প্রয়োজন একটি জায়গা। আর সেই জায়গাকেই ওয়েব হোস্টিং (web hosting) বলা হয়।
নিজের ওয়েবসাইটের জন্য ওয়েব হোস্টিং কেনার প্রয়োজন হলে যেখান থেকে কিনবেন তার ব্যাপারে ভালো করে জানুন। কেননা ওয়েব হোস্টিং জন্য অনেকগুলো বিষয় থেকে যেগুলো আপনার জানা অত্যন্ত জরুরী। আরে ব্যাপারেই আজকের এই আলোচনা। What is web hosting in Bangla ?
আজকাল একটা ওয়েবসাইট ইচ্ছা করলেই যেকোনো সময় বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু ওয়েবসাইট maintain করাটাও সবাইর পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য proper knowledge থাকাটা অনেক অনেক জরুরি। একটি ওয়েবসাইটকে অনলাইন জগতে পপুলার করতে বেশ কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে ওয়েব হোস্টিং। এছাড়াও প্রয়োজন হবে একটি ডোমেইন। এই দুটি জিনিস ছাড়া আপনি কখনোই একটি ওয়েবসাইট চালু করতে পারবেননা।
ডোমেইন কি? কিভাবে কাজ করে? কিভাবে কিনবেন? কোথায় থেকে কিনবেন এ ব্যাপারে আমরা অন্য একটি টিউটরিয়ালে আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে দেখে নিতে পারেন।
তবে, আজকে আমরা হোস্টিং কাকে বলে এবং হোস্টিং এর ব্যাপারে এ টু জেড জানার চেষ্টা করবো।
ওয়েব হোস্টিং কি ? what is web hosting Bangla (টিউটোরিয়াল)
ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে আমি অনরেডি আলোচনা করেছি। তবুও সহজ ভাবে বলছি- ওয়েব হোস্টিং হলো ওয়েবসাইট বা ব্লগ রাখার জন্য যে স্পেস প্রয়োজন হয় সেটাই ওয়েব হোস্টিং। ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আমাদের ওয়েব হোস্টিং এর প্রয়োজন হয় যেটা আমরা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে কিনে নিতে পারি। ওয়েব হোস্টিং সাধারণত এক বছর দু বছর বা পাঁচ বছরের জন্য কেনা যায় এরপর প্রতিবছর সেটাকে রিনিউ করতে হয়।
Read More: ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন? ব্লগিং করে ঘরে বসে আয়।
এবং সেই ওয়েব হোস্টিং এ একটি সার্ভার যুক্ত করা থাকে যে সার্ভার এর মাধ্যমে ওয়েব হোস্টিং টি পরিচালিত হয়।
সেই web server এমন একটি কম্পিউটার যে সব সময় ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত (connected) থাকে। এবং ওয়েব সার্ভারের কিনে নেয়া জায়গাতে যখন আমরা আমাদের video, file, image, media বা text article ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফাইল আপলোড করি তখন সেগুলি web server এ জমা (store) হতে থাকে।
ওয়েব সার্ভার সবসমই ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত (connected) থাকার কারনে, আমাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ যে কোন সময়, যে কেউ ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজেদের মোবাইল বা কম্পিউটারে access করতে পারেন। কিন্তু, ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আগে আমাদের একটি domain name কিনে, তাকে আমাদের web server এর সাথে সংযোগ (connect) করতে হবে।
আপনার ওয়েব সার্ভারের (hosting) সাথে যখন ডোমেইন যুক্ত (connected) হবে তখন ডোমেইন নামের মাধ্যমে যে কোনো কম্পিউটার বা মোবাইলের ফোনের মাধ্যমে আপনার ওয়েব সার্ভারে থাকা সকল তথ্য যথা video, file, image বা অন্য content দেখা যাবে। আর এই প্রক্রিয়াকেই ওয়েবসাইট বা ব্লগ বলা হয়।
কারণ, একটি website বা blog এ আপনি সেই সকল জিনিস গুলি দেখতে পারবেন, যেগুলি সেই ওয়েবসাইটের ওয়েব সার্ভারে (web server) আপলোড (upload) করা হয়েছে। এবং জনসাধারনকে দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এথক্ষনে ওয়েব হোস্টিং কি ?তা আপনি এখন বুঝেই গেছেন। হোস্টিং এমন একটি জায়গা যেটা আপনার অবশ্যই কিনতে হবে। নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগকে ইন্টারনেটে অনলাইন সক্রিয় (active) করে রাখার জন্য।
অবশই পড়ুন – কিভাবে ব্লগ তৈরি করে অনলাইনে আয় করবেন।
ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার ? (Types of web hosting)
ওয়েব হোস্টিং কাকে বলে বা কি এইটা জানার পর, web hosting এর প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নেই এটাও জরুরী। বিভিন্ন টাইপের ওয়েবহোস্টিং বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন বহন করে থাকে। ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা, security, speed এর উপর নির্ভর করে ওয়েব হোস্টিং web hosting কয়েক ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। এমনিতে, web hosting এর অনেক প্রকার আছে।
এই সমস্ত প্রকারভেদ এর মধ্যে যে সকল ওয়েব হোস্টিং আমরা সচরাচর ব্যবহার করে থাকি এবং আমাদের প্রয়োজন হয়ে থাকে সেই সম্পর্কে আমরা আলোচনা করছি।
- শেয়ার্ড হোস্টিং (shared hosting)
- V P S (Virtual private server)
- ডেডিকেটেড হোস্টিং (dedicated server)
- ক্লাউড হোস্টিং (cloud hosting)
চলুন এই সব রকমের ওয়েব হোস্টিংয়ের প্রকার গুলির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
শেয়ার্ড হোস্টিং কি ? what is shared hosting ?
শেয়ার হোস্টিং (Shared hosting) এর মানে হলো, একই ওয়েব ওয়েব সার্ভার/ ওয়েব হোস্টিং কে কয়েক জনে শেয়ার (share) করে ব্যবহার করা। মানে, একটি web server অনেক গুলি ওয়েবসাইট শেয়ার করবেন। উদাহরণ স্বরূপে, ভেবেনিন একটি জমি আছে এবং সেই জমিতে কয়েক জনে মিলে বিভিন্ন ধরনের ফসল করছেন। এই ক্ষেত্রে, আপনাদের জমি হলো web server এবং এবং আপনাদের ভিভিন্ন জনের আলাদা আলাদা ফসল হলো আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট।
এতে, আপনার লাভ এটাই যে, আপনাদের জমি যেহেতু কয়েকজন মিলে ব্যবহার করছেন তেমনি সবাই মিলে সেটার ভাড়া বা দাম দেবেন। এতে করে আপনার অনেক কম টাকা খরচ হবে।
Shared hosting এর ক্ষেত্রেও, আমরা একটি web server অনেক গুলি ওয়েবসাইট বা ব্লগের সাথে শেয়ার করি, এতে আমাদের এর জন্য অনেক অনেক কম টাকার প্রয়োজন হয়। শেয়ার্ড হোস্টিং আপনি অনেক কম দামে কিনেনিতে পারবেন। সাধারণত একটি নতুন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য shared hosting ব্যবহার করা হয়। কেননা এতে খরচ কম এবং প্রথম অবস্থায় সুন্দরভাবে ব্যবহার করা যায়।
Read More: কিভাবে ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
Shared hosting এর ব্যাবহারের কিছু লাভ
অনেক সস্তায় এবংকম দামেই কিনতে পারবেন।
একটি নতুন ওয়েবসাইটেরজন্য সেরা হোস্টিং।
শেয়ার্ড হোস্টিং এর দাম এর কথা বললে, আপনি 100 টাকা থেকে 200 টাকা (monthly) বা 700 থেকে 1500 টাকা বছরে ভালো শেয়ার্ড হোস্টিং কিনতে পারবেন। এমনিতে অনেক shared hosting company রয়েছেন যারা ফ্রীতেই হোস্টিং দেন। (তবে ফ্রি হোস্টিং এ অনেক সিমাবদ্ধতা থাকে)
ভার্চুয়াল প্রাইভেট হোস্টিং কি ? (Virtual private server) VPS
ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার বা VPS shared hosting থেকে শতগুন ভালো। তবে VPS সার্ভার আমরা তখন নেই যখন আমাদের ওয়েবসাইটে ভিসিটর বা ট্রাফিক অনেক বেশি আসে এবং যখন আমাদের ওয়েবসাইট অনেক popular হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় vps হোস্টিং নেয়ার প্রয়োজন আমি মনে করিনা।
ভি পি এস (vps) হোস্টিং আসলে কি?
যেমন, একটি বিল্ডিং (building) এ অনেকগুলি রুম (room) বানানো থাকে ঠিক সেভাবেই এই প্রকারের হোস্টিং এ একটি ওয়েব সার্ভার অনেক গুলি ভাগে ভাগ করা হয়। এবং, যেভাবে আপনার কিনে নেয়া রুমে কেবল আপনার অধিকার থাকবে। ঠিক সেভাবেই vps server এ আপনি কিনে নেয়া ভাগে কেবল আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের অধিকার থাকবে।
আপনি, যেই জায়গাটুকু কিনবেন সেটা কেবল আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন আর অন্যকেও সেই ভাগ ব্যবহার করতে পারবে না। এইটা আপনার private web server এর মতোই। ঠিক এ কারনেই vps server বা vps hosting এর রাখা ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত (fast) লোড হয়। এমনকি বেশি পরিমাণে ভিজিটর আসলেও সাইড কখনো ডাউন হয় না।
ভিপিএস হোস্টিং লাভজনক দিকগুলো:
- Security র হিসাবে দেখতে গেলে vps server অনেক নিরাপদ (secure).
- অনেক দ্রুত এবং এর কর্মক্ষমতা অনেক উচুস্থরের।
- Share hosting থেকে অনেক গুন্ বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর handle করতে পারে।
বর্তমানে ভিপিএস (vps) হোস্টিং প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা মাসে (monthly) এবং ৮০০০ থেকে ২০০০০ হাজার টাকা বছর হিসাবে পেয়ে যাবেন।
ডেডিকেটেড হোস্টিং কি ? (Dedicated web hosting)
ডেডিকেটেড হোস্টিং অন্য হোস্টিং থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ, শেয়ার্ড হোস্টিং এ আপনাকে একটি ওয়েব সার্ভার অসংখ ওয়েবসাইটের সাথে শেয়ার করতে হয় এবং vps hosting এ আপনাকে ওয়েব সার্ভার এর একটি ভাগ বা অংশ দিয়ে দেয়া হয় যেটা কেবল আপনার।
পক্ষান্তরে, ডেডিকেটেড হোস্টিং/ Dedicated Web Server এর ক্ষেত্রে আপনাকে একটি পুরো ওয়েব সার্ভার দিয়ে দেয়া হয় যেটা কেবলমাত্র আপনার। এবং, সেই ওয়েব সার্ভারে কেবল আপনার ওয়েবসাইট এবং তার ফাইল হোস্ট করা থাকবে। ঠিক তেমনি, যখন আপনি একটি রুম নয় পুরো বিল্ডিং (building) টাই কিনে নিলেন এবং তারপর সেখানে কেবল আপনার থাকার অধিকার থাকলো।
ডেডিকেটেড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে, কেবল একটি ওয়েবসাইট একটি সার্ভারে হোস্ট থাকার কারণে সেই ওয়েবসাইট অনেক বেশি ফাস্ট এবং দ্রুত কাজ করবে এবং নিরাপত্তার (security) দিকদিয়ে দেখলে এ অনেক বেশি নিরাপদ (secure).
কিন্তু, মনে রাখবেন, এই হোস্টিং আপনার তখনই প্রয়োজন হবে যখন আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাই এ অনেক বেশি ট্রাফিক আসবে। কেননা ডেডিকেটেড সার্ভারের দাম অনেক অনেক বেশি। তাই ছোট, নতুন, বা কম ট্রাফিক আসে এমন ওয়েব সাইট এর জন্য ডেডিকেটেড সাভার প্রয়োজন হয় না।
ডেডিকেটেড হোস্টিং এর কিছু লাভ
- অনেক বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর handle করতে পারে।
- এই রকমের হোস্টিং অনেক নিরাপদ (secure) .
- কর্মক্ষমতা অন্যদের থেকে অনেক গুনে বেশি।
- ওয়েবসাইট বা ব্লগ অনেক দ্রুত কাজ করবে।
Dedicated server এর দাম ৬০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা মাসে বা ৩০০০০ থেকে ২ লক্ষ টাক পর্যন্ত বছরে হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে আরো অনেক বেশি।
ক্লাউড হোস্টিং কি ? (Cloud hosting)
ক্লাউড হোস্টিং বর্তমানে ব্লগার এবং ওয়েবসাইট মালিকদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্রচলিত। এবং এটি অনেক ট্রাস্টেড হোস্টিং সার্ভিস হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এর কর্মক্ষমতা এবং স্পিড অনেক ভালো মানের এবং এই হোস্টিং নিরাপত্তার দিক থেকে অনেক নিরাপদ। গত কয়েক বছরে, cloud hosting অনেক জনপ্রিয়তা ও চাহিদা অনেক হারে বেড়ে গেছে। এবং, আমি নিজেই আমার কয়েকটি ওয়েবসাইটের জন্য ক্লাউড হোস্টিং বেবহার করছি।
সহজে বলতে গেলে- ক্লাউড হোস্টিং এ অনেক গুলি ওয়েব সার্ভার একসাথে রাখা হয়। তাই আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে সার্ভারের কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। যেমন cpu, RAM বা storage বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। এতে, যখনি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিসিটর বাড়বে আপনি অনেক সহজে সেই হিসেবে নিজের ওয়েব সার্ভারের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে পারবেন। আবার যখন ভিজিটর কম থাকবে তখন কমিয়ে নিতে পারবেন। আপনি চাইরে লোড ব্যালেঞ্চিং করে নিতে পারবেন।
ক্লাউড হোস্টিং এ ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম এবং বেশি ট্রাফিক সহজেই হ্যান্ডেল করতে পারে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও আপনি ক্লাউড ওয়েব সার্ভারকে অনায়াসে বিশ্বাস করতে পারবেন।
ক্লাউড হোস্টিং ব্যাবহারের লাভ
- সার্ভার ডাউন (server down) হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
- কার্যক্ষমতা অনেক বেশি। এবং, নিজের প্রয়োজন অনুসারে খরচ বাড়ানো বা কমানো যাবে।
- ওয়েবসাইটের বেশি ট্রাফিক বাভিসিটর হ্যান্ডেল (handle) করতে পারে।
ক্লাউড হোস্টিং এর দাম তার কর্মক্ষমতা হিসেবে তেমন বেশি নয়।৩০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা মাসে বা ৫০০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা মাসে ভালো মানের ক্লাউড হোস্টিং পেয়ে যাবেন। উল্লেখ্য যে, এখানে দাম আপনার প্রয়োজন অনুসারে (cpu, ram এবং storage) এর ওপরে নির্ভর করে।
ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং ভালো হবে ?
তাহলে বন্ধুরা, আশাকরি ওয়েব হোস্টিং কি এবং হোস্টিং এর বিভিন্ন প্রকারের জানাতে পারলাম। আসলে, ওয়েবসাইটের জন্য কোন হোস্টিং নিবেন বা কেমন হোস্টিং নিবেন সেটা আপনার ওয়েবসাইটের পপুলারিটি ও ভিজিটর এর ওপরে নির্ভর করে।
আমার মতে, আপনি যদি একটি নতুন ব্লগ বানানোর কথা ভাবেন, তাহলে প্রথমে shared hosting কিনুন। আপনি অনেক কমেই শেয়ার্ড হোস্টিং কিনতে পারবেন এবং প্রথম অবস্থায় আপনার ব্লগে তেমন কোনো ট্রাফিক বা ভিসিটর আসবেনা।
অতঃপর যখন আপনার ওয়েবসাইটে ধীরে ধীরে ভিজিটর বাড়াতে শুরু করবে তখন আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বা লোড অনুসারে যে কোন হোস্টিং এ ট্রানস্ফার করে নিতে পারবেন। আপনি চাইলে ক্লাউড, ভিপিএস বা ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
প্রথমেই আপনার ভিপিএস বা ডেডিকেটেড সার্ভার নেওয়ার কোনো প্রয়োজন আমার মতে নেই। তবে হ্যাঁ যদি এমন ওয়েবসাইট হয় যেটা শুরু করার কিছু দিনের মধ্যেই ভালো পরিমাণে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা আছে সেটার জন্য আপনি শুরু থেকেই ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার জন্য কোন হোস্টিং ভালো হবে?
আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং সে ওয়েবসাইটে যদি অনেক বেশি পরিমাণে ভিজিটর আসতে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন অনুসারে হোস্টিং পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে।
কোন হোস্টিং এর কেমন ক্ষমতা কোন হোস্টিং নিলে কতটুকু ভিজিটর হ্যান্ডেল করতে পারবেন তার একটি ধারণা আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি।
শেয়ার হোস্টিং এর ক্ষমতা: আপনার ওয়েবসাইটটি যদি একেবারেই নতুন হয় তাহলে আপনি চোখ বন্ধ করে একটি যেকোনো শেয়ার হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন। একটি শেয়ার্ড হোস্টিং দিয়ে আপনি প্রতিমাসে 50 হাজার থেকে ৩ লক্ষ ভিজিটর পর্যন্ত হ্যান্ডেল করতে পারবেন। এবং আপনার ওয়েবসাইটে যদি real-time ভিজিটর থাকে সেক্ষেত্রে আপনি শেয়ার্ড হোস্টিং এর মাধ্যমে 1000 থেকে 2000 পর্যন্ত রিয়াল টাইম ভিজিটর হ্যান্ডেল করতে পারবেন। তবে ওয়েবসাইট এর স্ট্রাকচার, থিম এবং লোডিং স্পীড এর উপর নির্ভর করে এর হিসাবটা কমবেশি হতে পারে।
ক্লাউড হোস্টিং এর ক্ষমতা: বলতে গেলে মোটামুটি দামের মধ্যে ক্লাউড হোস্টিং খুব ভালো সার্ভিস। এটা অসাধারণ সার্ভিস দিয়ে থাকে। আপনার একটি ওয়েবসাইটে অনায়াসে প্রতিদিন এক লক্ষ পর্যন্ত ভিজিটর হ্যান্ডেল করতে পারবেন কার্ড হোস্টিং দিয়ে। এমনকি আপনার ওয়েবসাইটে যদি ১ লক্ষ পর্যন্ত real-time ভিজিটর থাকে তবুও ভালো মানের ক্লাউড হোস্টিং দিয়ে সেটাকে হ্যান্ডেল করতে পারবেন।
ভিপিএস হোস্টিং এর ক্ষমতা: আপনি যদি আপনার ওয়েব সার্ভারে ভিপিএস হোস্টিং ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন 50 হাজার থেকে 10 লক্ষ পর্যন্ত ভিজিটর হ্যান্ডেল করতে পারবেন। এমনকি আপনার ওয়েবসাইটে যদি এক লক্ষ ভিজিটার থাকে তবুও ভিপিএস হোস্টিং এর মাধ্যমে হ্যান্ডেল করা সম্ভব।
ডেডিকেটেড সার্ভার এর ক্ষমতাঃ বর্তমানের যত ওয়েব হোস্টিং রয়েছে তাদের মধ্যে ডেডিকেটেড সার্ভার সবচেয়ে ক্ষমতা সম্পন্ন। অনলাইনে থাকা যত বড় বড় ওয়েবসাইট রয়েছে সকল ওয়েবসাইট গুলো ডেডিকেটেড সার্ভার এ পোস্ট করে থাকে। ডেডিকেটেড সার্ভার এর কার্যক্ষমতা আপনি চাইলেই বাড়িয়ে নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার খরচ বেশি হবে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি প্রতিদিন মিলিয়ন এর উপরে ভিজিটর থাকে তাহলে আপনার ডেডিকেটেড সার্ভার প্রয়োজন হবে।
আমি বিভিন্ন ক্যাটাগরির হোস্টিংয়ের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করলাম। এখন আপনি চাইলে সহজেই বের করে নিতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটের কন্ডিশন বা ভিজিটর এর মান অনুযায়ী কোন হোস্টিং আপনার প্রয়োজন।
- আমার মতে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর যদি মাসিক এক লক্ষ এরকম হয় তাহলে আপনি শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করবেন।
- এবং যদি আপনার মাতৃ ভিজিটর 1 লক্ষ থেকে 10 লক্ষ পর্যন্ত হয় তাহলে আপনার ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত।
- আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিজিটর যদি 10 লক্ষ থেকে 50 লক্ষ পর্যন্ত হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি ভিপিএস হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন।
- আপনার ওয়েবসাইটের যদি মান্থলি ভিজিটর 50 লক্ষ এর অধিক হয় তাহলে আপনি আপনার অবশ্যই ডেডিকেটেড সার্ভার ব্যবহার করতে হবে।
আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইট কিভাবে চালানোর জন্য এর আগেও আপনি হোস্টিং আপগ্রেড করতে পারেন। কিছু টাকা বেশি খরচ হলেও পারফরম্যান্স পাবেন আগুনের মত।
ওয়েব হোস্টিং কেনার আগে যে বিষয়গুলি আপনাকে জানতে হবেঃ
ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে এতক্ষণ বিস্তারিত জানলেন এখন যদি আপনি ওয়েব হোস্টিং কেনার জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকেন তাহলে ওয়েব হোস্টিং কেনার পূর্বে আপনাকে কিছু বিষয় জানতে হবে আমি নিম্নে সেগুলো আলোচনা করছি।
- আপনি যে প্রোভাইডারের কাছ থেকে হোস্টিং কিনবেন সে প্রোভাইডার সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। আমার মতে যদি ওয়েব হোস্টিং কিনতে চান সেক্ষেত্রে ইন্টার্নেশনাল ভালো কোন কোম্পানি থেকে কিনতে পারেন। দেশি প্রোভাইডারদের কাছ থেকে হোস্টিং কিনে অনেকেই প্রতারিত হয়েছে এমন নজির এভেলেবেল।
- হোস্টিং সার্ভার কেনার পূর্বে জেনে নিতে হবে আপনি যে হোস্টিং কিনতে চাচ্ছেন না সেখানে আপনি কয়টি ওয়েবসাইট হোস্ট করতে পারবেন।
- সার্ভারে ডাটাবেজ সাবডোমেইন এবং এফটিপির কোনো সীমাবদ্ধতা আছে কিনা।
- আপনাকে কতটুকু স্টোরেজঃ দেবে।
- এবং হোস্টিং কেনার পূর্বে আপনাকে জেনে নিতে হবে আপনি যে হোস্টিং নিতে চাচ্ছেন এই হোস্টিং এর ব্যান্ডউইথ এর কোনো সীমাবদ্ধতা আছে কিনা।
- আপনার হোস্টিং এ ইমেইল সুবিধা আছে কিনা।
- আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অটো ব্যাকআপ। আপনার হোস্টিং কেনার পূর্বে আপনাকে জেনে নিতে হবে আপনি যে হোস্টিং কিনেছেন তাতে অটো ব্যাকআপ আছে কিনা। একটি সার্ভারের অটো ব্যাকআপ কয় ধরনের হতে পারে, Daily, Weekly, Monthly। যদি সম্ভব হয় ডেইলি ব্যাকআপ থাকা হোস্টিং নেয়ার চেষ্টা করবেন।
- আরো ইম্পরট্যান্ট একটি বিষয় হলো সাপোর্ট। আপনি যাদের কাছ থেকে হোস্টিং নিচ্ছেন তারা আপনাকে সাপোর্ট দেবে কিনা। বা তাদের সাপোর্ট এর মান কেমন, বা অতি দ্রুত সাপোর্ট দেয় এ বিষয়গুলো জানা একান্ত প্রয়োজন।
- আরো একটি জরুরি বিষয় হচ্ছে সিপ্যানেলের এক্সপ্রেস, বা ফুল কন্ট্রোল আপনার কাছে হস্তান্তর করবে কিনা।
আপনি যদি হোস্টিং নেন তাহলে এই সমস্ত বিষয়গুলি হোস্টিং এয়ারপোর্টে অবশ্যই জেনে নেবেন আর না হলে পরবর্তীতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
সর্বোপরি আমাদের পরামর্শঃ
তাহলে বন্ধুরা, আশাকরি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে হোস্টিং সম্পর্কে একটি বিষদ ধারনা দিতে পেরেছি। যদি আপনাদের ওয়েব হোস্টিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট অবশই করবেন। এবং আর্টিকেল যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার অবশ্যই করবেন। ধন্যবাদ।
1 thought on “ওয়েব হোস্টিং কি ? হোস্টিং এর দাম এবং আপনার কেমন হোস্টিং প্রোয়োজন (A 2 Z)”