মোবাইল ট্র্যাক হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় : বর্তমান সময়ের প্রতিটি স্মার্টফোন দিয়ে আপনাকে বিভিন্ন উপায়ে ট্র্যাক করা সম্ভব।
কিন্তু আপনি যদি এ বিষয়ে নজর রাখেন তাহলে এর পরিমাণ কমিয়ে নিতে পারবেন।
আমরা বর্তমানে বিভিন্ন প্রয়োজনে, বিশেষ করে- ব্যবসা সম্পর্কিত বা ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারণে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি।
কিন্তু মোবাইলে আমাদের সারাদিনের কর্মকাণ্ড যে, সব সময় ব্যক্তিগত থাকে না! সেটা সবসময় বোঝা সম্ভব হয় না। কারো মোবাইল যেভাবে ট্র্যাক করা যেতে পারে এমন কিছু উপায় সম্পর্কে আমরা আজ আলোচনা করব।
তবে তার আগে আপনাকে জেনে নিতে হবে। কিভাবে আপনার মোবাইল ট্র্যাক করতে পারে।
কিভাবে আপনার মোবাইল ট্রাকিং হয় ?
মোবাইল ট্র্যাকিং অনেক অপ্রত্যাশিত উপায়ে হয়ে যেতে পারে। আপনার ব্যবহার করা ডিভাইসে কারো প্রবেশের অধিকার থাকলে সহজেই সেই মানুষ আপনার মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচার সক্রিয় করতে পারেন।
আবার অন্য কোন ব্যক্তি ট্রাকিং চালু করেছে কিনা সেটি ডিভাইসের মালিক বুঝতেও পারবেনা। যার ফলে, অনেক অ্যাপস এবং মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম লোকেশন ট্রেকিং ফিচার মানুষের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে যেতে পারে।
তাছাড়া আপনার কর্মক্ষেত্রে বা নিউকর্তার মাধ্যমে আপনার মোবাইল ব্যবহার ট্র্যাক হতে পারে। বিশেষ করে যে, সকল ক্ষেত্রে আপনার ডিভাইসটি কোম্পানি থেকে এমনকি আপনার মোবাইলটা যদি একটি কর্পোরেট নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয়। সে ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল ট্রাকিং সম্ভব।
এছাড়া অনেক অ্যাপস এবং মোবাইল পরিষেবাতে রয়েছে বিল্ট ইন ট্র্যাকিং ফিচার। উক্ত ফিচারগুলো কখনো কখনো অনেক কাজের জন্য প্রয়োজন হয়।
বিশেষ করে এন্ড্রয়েড তার ব্যবহারকারীদের বর্তমান অবস্থানের উপর ভিত্তি করে কাছাকাছি এলাকাগুলো সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে। যাতে করে তারা এলাকা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে পারে।
তাছাড়া অনেকেই জানেন না যে, বিভিন্ন অ্যাপস বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ট্র্যাক করে থাকে।
গত 2019 সালে দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনের ২৫০ টি iphone apps পরীক্ষা করা হয়। সেখানে দেখা যায় যে পণ্য বা পরিষেবা গুলো ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করছে কিনা।
যার ফলাফলে দেখা যায়, তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিয়েছে।
যোগাযোগ করে সেবা প্রধান কারী বা সিম কোম্পানি মোবাইল ট্রাকিং এর সাথে জড়িত। তার কারণ প্রতিটি মোবাইল কোম্পানির মালিকানাধীন সেল টাওয়ারে ব্যক্তিগতভাবে সনাক্তযজ্ঞ তথ্য প্রেরণ করে থাকে।
কিন্তু এটি সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্রয়োজনীয় অংশবিশেষ। তার কারণ মোবাইল কোম্পানি গুলো অবশ্যই আপনার অবস্থান যাচাই করবেই।
তাছাড়া আপনি যে তাদের একজন গ্রাহক তার নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আপনার পরিচয় গোপন রেখে সে যাচাই করানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য এখনও গবেষণা চলমান অবস্থায় রয়েছে।
মোবাইল ট্র্যাক হচ্ছে কিনা বুঝার উপায়
বর্তমানে অসংখ্যা স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলো মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের কিছু লক্ষণ শনাক্ত করতে পারে। মনে করুন- তারা লক্ষ্য করতে পারে ডিভাইসটি ধীরগতির হয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া বিভিন্ন কর্ম ক্ষায় অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন গুলো দেখা দিচ্ছে। কিন্তু মোবাইল ট্র্যাকিং করা হলে তা সব সময় এত স্পষ্ট ভাবে বোঝার উপায় নেই।
মোবাইল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি বিভিন্ন কোড ডায়াল করে দেখতে পারবেন। যেগুলো মোবাইল ট্র্যাকিং করা হলে সম্ভাব্য কিছু প্রক্রিয়া দেখিয়ে দেবে।
বিশেষ করে আপনি যদি *#61# লিখে মোবাইলে ডায়াল করলে ইনকামিং কল গুলো অন্যান্য কোন নম্বরে ফরওয়ার্ড করা হয় কিনা তা জানতে পারবেন।
এরকম ভাবে *#62# ডায়াল করার ফলে দেখতে পারবেন। কোন ড্রাইভারসন সফটওয়্যার বিভিন্ন কল ও ট্যাক্স পেয়ে আপনার কাছে পৌঁছাতে বাধা দেয় কিনা।
তো এরকম ভাবে আপনি যদি মোবাইলে অনুভব করেন। তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার মোবাইল ট্র্যাক হচ্ছে।
তো আপনার মোবাইল যদি এরকম ভাবে ট্র্যাক করা হয়। তাহলে কিভাবে, এখান থেকে রক্ষা পাবেন। সে বিষয়ে জানতে নিজের তথ্য গুলো অনুসরণ করুন।
আপনার মোবাইল ট্রাকিং করা থাকে কিভাবে বাঁচাবেন ?
মোবাইল ট্র্যাক হ্রাস করার বিষয়টি আপনি যা ভাবছেন। তার থেকে সহজ। কিন্তু আপনি যদি সেগুলো সম্পর্কে জানেন।
ফ্লাইট মোড চালু হওয়ার পর জিপিএস লোকেশন সেটিং করা।
মোবাইলের এরোপ্লেন মোড ফিচারটি চালু করলে। তা সেলুলার ও ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক গুলো সেই সংযোগগুলোকে বাধা প্রদান করে।
যেগুলো ট্র্যাকিংয়ের সহায়তা করে থাকে। প্রথমে ফ্লাইট মোড নির্বাচন করে দিবেন। তারপর আপনার মোবাইলের জিপিএস বা লোকেশন ফিচারটি অবস্থা পরীক্ষা করে নিবেন।
ফ্লাইট মোড চালু করার পরে, প্রায় লোকেশন সেটিং স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এটি বন্ধ হয়েছে কিনা তা জানার জন্য নিশ্চিত হওয়া ভালো।
তবে এই ফিচারটি বন্ধ করে দিলে আপনি কল বা মোবাইল ডাটার জন্য আপনার মোবাইল ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু ট্রেকিং বন্ধ করার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত উপায়। তবে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের জন্য এটি আদর্শ উপায় নয়।
অপারেটিং সিস্টেমের দিকে নজর দিন
যারা মোবাইল অ্যাপস ভিত্তিক ট্র্যাকিং সম্পর্কে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। তাদের অপারেটিং সিস্টেম বা ও এস ভিত্তিক সেটিংস থেকে এটিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যাবে।
Iphone এর আই ও এস এর সাম্প্রতিক সংস্করণ গুলো সব ধরনের অ্যাপস এর ক্ষেত্রে ট্র্যাকিং বন্ধ করার সুযোগ প্রদান করে থাকে।
Google সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড এর জন্য প্রাইভেসি স্যান্ড বক্স নাম অনুরূপ একটি ফিচার চালু করেছে। এটি থার্ড-পার্টির কাছে ব্যক্তিগত ডাটা স্থানান্তর সীমিত করে, নিয়ে আসে। তাছাড়া এটি সব অ্যাপসে ট্রাকিং কার্যক্রম চলার অনুমতি প্রধান করে না।
গোপনীয় ব্রাউজার নির্বাচন করুন
ওয়েব ব্রাউজার হিসেবে বেশিরভাগ মানুষ গুগল ক্রোম কে তাদের পছন্দের তালিকায় রাখেন। কিন্তু ইন্টারনেট ইউজার কারীরা বুঝতে পারে না যে এটি অনলাইন কার্যকলাপ গুলো ট্রাকিং করে থাকে।
তবে আপনি চাইলে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে গুগলের ট্রাকিং ফিচারগুলো বন্ধ করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আরেকটি বিকল্প হচ্ছে এমন একটি ব্রাউজার ব্যবহার করা যা আপনাকে কম ট্রাকিং করে বা একেবারে ট্র্যাকিং করেন না।
উক্ত ব্রাউজারগুলো অনুসন্ধানের সময় আপনাকে পার্সোনালিস্ট রেজাল্ট দেবে না। যা ট্রাকিং যুক্ত ব্রাউজাগুলো আপনাকে প্রদান করে থাকে।
কিন্তু এই ব্রাউজারগুলো অবশ্যই আপনাকে গোপনীয়তা সম্পর্কে আরও বেশি মানসিক শান্তি দিয়ে থাকে।
শেষ কথা
তো বন্ধুরা আপনারা যারা মোবাইল ট্রাকিং হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় জানতে উপর উল্লেখিত আলোচনাটি ভালোভাবে পড়ার চেষ্টা করুন তাহলেই বিস্তারিত বুঝতে পারবেন।
যদিও আপনার মোবাইল ট্র্যাকিং করা হয়। সে ক্ষেত্রে আপনারা ট্র্যাকিং এর হাত থেকে মোবাইল ফোন রক্ষা করতে পারবেন।
তো মোবাইল ট্রাকিং সম্পর্কে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে আরও বিভিন্ন ধরনের নতুন আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।