নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম : নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য কি কি উপায় রয়েছে। এবং নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে। সে বিষয়ে অনেকেই ধারণা রাখেনা।
তো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য অনেকেই ভোগান্তের শিকার হয়। বর্তমানে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করা বা নতুন ভোটার হওয়ার বিষয়টি অনেক সহজ।
আপনি চাইলে খুব সহজে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর আবেদন করে, ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
তো বর্তমান সময়ের যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম খুঁজে থাকেন। তারা সঠিক একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন।
কারণ আজ আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাদের নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানানো হবে।
তো আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড করার চিন্তা করে থাকেন। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আপনারা চাইলে নতুন ভোটার আইডি কার্ড ২ টি পদ্ধতিতে আবেদন করতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদন মাধ্যম
১। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন
২। অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভুটান নিবন্ধন ফরম দুই সংগ্রহ করে সেটি পূরণ করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে, নির্বাচন অফিসের জমা দিলে নতুন ভোটার হওয়ার সম্ভব।
কিন্তু তার জন্য আগে অফিসে যেতে হবে ফরম সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে তারপর কাগজপত্র সংযুক্ত করে আবার অফিসে জমা দিতে হবে।
বর্তমান সময়ে নতুন ভোটার আবেদন ফরম অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায় না। নতুন ভোটার আবেদন ফরম এর ওপরে একটি ইউনিক নাম্বার দেওয়া থাকে। বিধায় অনলাইন থেকে ডাউনলোড করলে সেটি ডুপ্লিকেট হয়ে যায়।
তাই পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাই পড়তে হয়। সুতরাং অফিসে আবেদন করে ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে থেকে নতুন ভোটার আবেদন ফরম ডাউনলোড কখনোই করবেন না।
[wp_show_posts id=”3308″]
আপনারা সরাসরি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করবেন।
অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন
অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিজের ঘরে বসে নিজে নিজেই অনলাইনে আবেদন দাখিল করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অফিসে জমা দিলে। অফিসে বারবার যাওয়া আসার সময় এবং কষ্ট উভয় লাঘব হবে।
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম অনেক সহজ। তাই অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন কিভাবে দাখিল করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করুন
অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদন করতে চাইলে প্রথমে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে ভিজিট করতে হবে, services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটটি।
আপনারা এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর নিচে দেওয়া সব এর মত একটি ইন্টারফেস চলে আসবে।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করবেন। পেজটি লোড হয়ে নিচে দেওয়া সবের মতো একটি ফর্ম আকারে চলে আসবে।
উক্ত ফরমে প্রথমে আবেদনকারীর নাম ইংরেজিতে টাইপ করতে হবে। তারপর আবেদনকারীর জন্ম তারিখ টাইপ করতে হবে। এর পরের ঘরে ক্যাপচা লিখতে হবে।
ক্যাপচাটি যেমন দেখা যাবে সঠিকভাবে তাই লিখতে হবে ভুল হলে চলবে না। তারপর বহাল বাটনে ক্লিক করে দিবেন তবে পেজটি লোড হয়ে। নিচে দেওয়া ছবির মত একটি পেজ চলে আসবে।
সেই পেজে আবেদনকারীর সঠিক মোবাইল নাম্বার লিখতে হবে। এবং বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর মোবাইলে চলে আসা ছয় সংখ্যার একটি কোড দেখানো হবে।
মোবাইল এসএমএস এ আসা ছয় সংখ্যার যাচাই করন। কোডটি লিখে বহাল বাটনে ক্লিক করে দেবেন। তবে পেজটি লোড হয়ে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড যুক্ত করার অপশন চলে আসবে।
এখন একটি ইউজারনেম যুক্ত করতে হবে যদি দিতে না চান তাহলে সমস্যা নেই তারপর ঘরে একটি পাসওয়ার্ড লিখতে হবে এবং পরের ঘরে পুনরায় সেই পাসওয়ার্ড আবার লিখতে হবে। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখতে হবে পরবর্তীতে অ্যাকাউন্ট লগইন করতে হলে এই পাসওয়ার্ডটি দরকার হবে অতঃপর বহাল বাটনে ক্লিক করে দেবেন তারপর অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে এবং প্রোফাইল দেখানো হবে।
নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য এখানে প্রোফাইল অপশন এ ক্লিক করলে। ব্যক্তিগত তথ্য এবং অন্যান্য তথ্য ঠিকানা এই তিন প্রকার তথ্য প্রদান করার জন্য বলা হবে। ব্যক্তিগত তথ্য অন্যান্য তথ্য এবং সঠিক ঠিকানা আপডেট করার জন্য এডিট বাটনে ক্লিক করবেন।
অপরাধের ছবির মত এডিট বাটনে ক্লিক করলে অনেক বড় একটি ফর্ম দেখানো হবে সেখানে উপরে দেওয়া ছবিতে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্যাদের দেখানো হয়েছে।
অনুরূপভাবে আপনাকেও সেই ফর্ম দেখানো হবে আবেদনকারীর ইংরেজি নাম জন্ম তারিখ এবং জাতীয়তা সিলেক্ট করা থাকবে।
শুধু বাংলা নাম লিঙ্গ র*ক্তের গ্রুপ এবং জন্মতারিখ নম্বর জন্মস্থান সিলেট করতে হবে।
উপরোক্ত ফর্ম এর ব্যক্তিগত তথ্য এর নিচে পিতা মাতা এবং বড় ভাই এর তথ্য সিলেক্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে পিতা যদি মৃত হয় তাহলে মৃতটেক দিতে হবে এবং মৃত্য সাল টাইপ করতে হবে।
এরপর পিতার নাম বাংলায় এবং ইংরেজিতে টাইপ করবেন। আর পিতার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার লিখতে হবে।
এখন মাতার তথ্যাদের ক্ষেত্রেও মৃত্যু হলে টিক চিহ্ন দেবেন এবং মৃত্যুর সাল লিখবেন এছাড়া মৃত না হলে টিক দেওয়ার দরকার নেই তারপর মাতার নাম বাংলা এবং ইংরেজি ও জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর লিখতে হবে।
আবার বড় ভাই/ বোনের তথ্যের জায়গায় আবেদনকারীর বড় ভাই বা বোনের নাম জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর লিখতে হবে। নতুন ভোটার আইডি কার্ড ব্যক্তির যদি বড় ভাই এবং বোন না থাকে সে ক্ষেত্রে লেখার প্রয়োজন নেই।
উপরোক্ত ব্যক্তিগত তথ্যাদি ফর্মের নিচের দিকে আবেদনকারী স্বামী স্ত্রীর তথ্য প্রদান করতে হবে। আবেদনকারী যদি বিবাহিত হয় তবে বৈবাহিক অবস্থা বিবাহিত নির্বাচন করতে হবে। এবং স্বামী স্ত্রীর নাম জাতীয় পরিচয় পত্র লিখতে হবে।
অন্যদিকে আবেদনকারী যদি একাধিক স্বামী স্ত্রী থাকে তবে পর্যায়ক্রমে সকলের নাম এবং জাতীয় পরিচয় পত্র উল্লেখ করতে হবে। আর আবেদনকারীর স্বামী স্ত্রী যদি মৃত হয় তবে মৃত সাল উল্লেখ করতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে অন্যান্য তথ্যও পূরণ করতে হবে।
অন্যান্য তথ্য এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, অসমর্থতা, সনাক্তকরণ চিহ্ন, টিন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, ধর্ম, টেলিফোন নম্বর এবং মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করতে হবে।
আবেদনকারী তার তথ্য অনুযায়ী ফর্মটি পূরণ করবেন। যদি কোন অসামর্থতা আবেদনকারীর না থাকে। তবে এই ফিল্ড পূরণ করা যাবে না।
ভুল করে যদি কোন অসমর্থতা উল্লেখ করা যায়। তবে পরবর্তীতে ভোগান্তির শিকার হতে হবে।
এখন অন্যান্য তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে ঠিকানা যুক্ত করতে হবে।
প্রথমে অবস্থানরত দেশের নাম নির্বাচন করতে হবে তারপর বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা যদি আলাদা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আলাদা নির্বাচন করতে হবে।
[wp_show_posts id=”3306″]
তারপর ভোটার এরিয়া নির্বাচন করতে হবে। ভোটার এরিয়া হচ্ছে যে এলাকায় গ্রাম মহল্লার ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে চান। সেই এলাকার নাম নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি ভুল হয় তাহলে ভুল তালিকা নাম চলে যাবে।
ঠিকানার তথ্য পূরণ করার পর ওপরে ডান পাশে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করবেন।
উপরোক্ত পরবর্তী বাটনে ক্লিক করা হয়ে গেলে কাগজপত্র আপলোড করার অপশন দেখানো হবে ও করে ছবির মত কিন্তু এখানে কাগজপত্র এর প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
তার মানে এই নয় যে, নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে কাগজপত্র লাগবেনা্ অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। আবেদন অফিসে জমা দেওয়ার সময় এখান থেকে আপনারা পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে দিবেন।
তো এখন নিশ্চিত করুন অপশনে আসার পর সাবমিট করতে হবে। সাবলেট অপশনে ক্লিক করলে পেজটি লোড হয়ে প্রোফাইল অপশন এ নিয়ে যাবে এবং ডাউনলোড বাটন দেখানো হবে।
আপনারা ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করলে ২ নং ভোটা নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড করতে পারবেন। ফরমটি প্রিন্ট করে নিতে হবে। ফরম প্রিন্ট করার পর কিছু জরুরী কাজ রয়েছে। তা অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। যেমন-
আপনারা কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়া ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে চাইলে অবশ্যই ফর্ম এর অপর পাতায় আবেদনকারের স্বাক্ষর টিপ সহ দিতে ভুলবেন না।
আর উপরে যে ছবিটি দেখতে পারছেন। সেখানে যাবতীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার চেষ্টা করবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে যে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদন করার পর আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
[wp_show_posts id=”3303″]
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো হচ্ছে-
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র কপি
- বৈবাহিক সনদ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র কপি
- র*ক্তের গ্রুপ রিপোর্ট
- প্রত্যয়ন পত্র- চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ওয়ার্ড মেম্বার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক।
- নাগরিক সনদপত্র
- বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল, গ্যাস বিল ইত্যাদি।
- ট্যাক্স রশিদ
- অঙ্গীকারনামা
- পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)
আপনারা উপরোক্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করেন নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। তো এই কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে আপনারা চাইলে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সরাসরি নতুন ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে কাগজপত্র গুলো দিয়েই আবেদন করতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
তো আমাদের আজকের এই আলোচনাতে আপনাদের জানানো হলো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৩ সম্পর্কে।
তো আপনি যদি নতুন ভোটার হতে ইচ্ছুক হন। তবে উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী আপনারা সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে। এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে নতুন ভোটার আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড সংক্রান্ত জরুরী তথ্য জানতে, নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।