ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কি কি প্রয়োজন : ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট সম্প্রতিকালে যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে বেশিরভাগ স্ট্যাটআপ, উদ্যোক্তা এবং কোম্পানি গুলো তাদের কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সারদের সবার আগে সিলেক্ট করছে।
ফ্রিল্যান্সিং আপনার নিজের কাজ করার পদ্ধতিকে, পরিপূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। তাই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে, তাদের পছন্দ মত, জায়গা এবং সময় বেছে নিয়ে কাজ করার স্বাধীনতা উপভোগ করে থাকে।
এসকল ফ্লেক্সিবল এবং আকর্ষণীয় সুবিধা মানুষকে ফ্রীলান্সিং জীবিকার দেখে উৎসাহিত করছে। এটি এমন একটি সেক্টর যেখানে মানুষের স্বাধীনতার পাশাপাশি আকর্ষণীয় টাকা উপার্জনের সুযোগ প্রদান করে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম গুলোতে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছে। যদি অনেকে ফ্রিল্যান্সিং থেকে নিয়মিত যাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে ওঠা কিন্তু অনেক সহজ ব্যাপার।
তাই আজ আমি আপনার সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি, ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার জন্য কি কি প্রয়োজন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী থাকেন। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষপ্রান্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
- ১৩ টি অনলাইন জব | অনলাইনে মাসে ১ লক্ষ+ টাকা ইনকাম করার উপায়
- ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কি ? জেনেনিন এখানে
- কিভাবে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় [বিস্তারিত এখানে]
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য কি কি প্রয়োজন ?
ফ্রিল্যান্সাররা কোন নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করার বিপরীতে, অ্যাসাইনমেন্ট দিন বা ঘন্টার ভিত্তিতে কাজ করে। কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এবং অনলাইন প্লাটফর্ম এর সাহায্যে বিভিন্ন ব্যক্তিদের বা ক্লায়েন্টদের সাথে যুক্ত থাকে। এবং তাদের সার্ভিস গুলো প্রদান করতে পারে।
যে সকল ক্লায়েন্টদের সাথে তারা কাজ করুক না কেন। তাদের কোনো নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার সাথে দীর্ঘকাল এর প্রতি না থাকতে পারে। আসুন জেনে নেয়া যাক একজন ফ্রিল্যান্সার হতে গেলে কি কি প্রয়োজন।
ভালো রেজ্যুমে তৈরী করতে হবে ?
একজন ফ্রীলান্সিং পেশাদার হিসেবে তৈরি করতে গেলে আপনার প্রিভিয়াস কাজের অভিজ্ঞতা গুলোকে কাজে লাগিয়ে। একটি স্পষ্ট ভার্চুয়াল রেজ্যুমে কিংবা সিভি তৈরি করতে হবে।
যেখানে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে। আপনি কি ধরনের কাজের সাথে যুক্ত এবং আপনার পরিষেবা থেকে কি ধরনের সুবিধা ক্লায়েন্টরা পেতে পারে। এবং আরও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কার সংক্রান্ত তথ্যের বিষয়ে।
বর্তমান সময়ে ডায়নামিক রেজ্যুমে লোকদের চাকরি পেতে যথেষ্ট সহায়তা করে। আর আপনি যেহেতু স্বাধীনভাবে কাজ করতে আগ্রহী। সেজন্য আরো বিশেষ করে, আপনার নিজের একটা ডিজিটাল রেজ্যুম এর মাধ্যমে প্রমোট করে তোলা জরুরী।
যার ফলে আপনার সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট এবং কোম্পানি আপনাকে সহজে খুঁজে পাবে। নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আপনি আপনার একটি ভালো প্রোফাইল হলে নিতে পারবেন।
নিজের একটি ভালো প্রোফাইল খোলার জন্য আপনারা লেনিন এবং আরও বিভিন্ন ধরনের এম্প্লয়মেন্ট ওয়েবসাইটগুলোতে করতে পারবেন।
ভালো কাজ এর সেটআপ তৈরী করতে হবে ?
আপনি কোন কোম্পানির অধীনে কাজ করছেন না তার জন্য আপনার নিজের একটি পেশাদারী কাজের সেট আপ থাকা একান্ত প্রয়োজন। তার কারণ ক্লায়েন্টরা সবসময় চাইবে আপনার থেকে সারা কাজ করিয়ে নিতে।
আর সেটি কাজের মান এর দিক থেকে হোক আর সময় এর দিক থেকে হোক। তাই ক্লায়েন্ট এর চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে, আপনার নিজস্ব একটি স্টেডি ওয়ার্ক স্পেস এবং কাজের পরিবেশ থাকা অনেক জরুরী।
মনে করুন- অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবস্থা রাখা। স্পেয়ার কম্পিউটার ব্যবস্থা রাখা যাতে আপনার কাজ এর কোনরকম সমস্যা না হয়।
স্ট্রং সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরী করতে হবে ?
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আপনার ক্লায়েন্ট ধরার ক্ষমতা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ মানে, আপনাকে আপনার ক্লায়েন্টদেরকে নিজেই সন্তুষ্ট করতে হবে।
এজন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপনার প্রোফাইল এবং কাজের ব্যাপারে প্রচার করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের চাকরির অ্যাপ গুলোতে নিজের প্রোফাইল তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের এবং কোম্পানির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন।
যার ফলে আপনার পেশাদারী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে। এমনকি অনেক ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে আপনি সরাসরি কান পেতে পারবেন। এবং সিলেক্ট করে সেই অনুযায়ী বিডিং করতে পারবেন।
কিন্তু একটি স্ট্রং প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে পারলে। আপািন ভবিষ্যতে আপনার পরিচয় এবং প্রোফাইল এর সুবাদে কোন অসুবিধা বা বাধা ছাড়া ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন।
একটা ভালো ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে ?
ফ্রিলান্সিংয়ে যেহেতু প্রায় সকল কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বেশি সক্রিয়। সেজন্য একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার অনলাইন উপস্থিতি কিন্তু আপনাকে কাজ পেতে সহায়তা করবে।
আপনি যদি সম্পূর্ণরূপে ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী থাকেন। তাহলে অবশ্যই নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। এর কারণ অনেক ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল নেশনাল রেপুটেড ক্লায়েন্ট এবং কোম্পানির অনলাইনের মাধ্যমে পেশাদার কর্মী বা ফ্রিল্যান্সার খুঁজে থাকে।
তার জন্য বর্তমান সময়ে আপনার যদি একটি ভাল দৃশ্যমান ওয়েবসাইট থাকে তাহলে সেটি তাদের কাছে, অনেক আকর্ষণীয় এবং প্রফেশনাল বলে মনে হবে।
আপনার পেশা দায়িত্ব দেখলে, অনেক ক্লায়েন্ট আপনার সাথে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করবে। তার জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের পরিচিতি তৈরি করা ফ্রিল্যান্সারদের কাছে অতিমাত্রায় অত্যন্ত জরুরী।
ভালো বিডিং করা জানতে হবে ?
প্রথম অবস্থায় একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে গেলে। আপনাকে বিভিন্ন প্রকার ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলো থেকে নিজে নিজে প্রজেক্ট বা কাজ গুলো ধরে, ক্লায়েন্ট এর সাথে আলোচনা করে কাজ গ্রহণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে দেখবেন আপনার মত এমন অনেক লোক আছে। যারা তাদের কাজের পরিমাণ কাজের অভিজ্ঞতা এবং আনুমানিক পারিশ্রমিক দাবি জানিয়ে, ক্লায়েন্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আপনাকেও একই পন্থা অবলম্বন করে তাদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে কাজ শুরু করে দিতে হবে। কিন্তু এই ধরনের বিডিং এর ঝামেলা এড়াতে চাইলে।
আপনি ইন্টার্নশিপ এবং ট্রেনিং প্রোগ্রাম এর ওয়েবসাইট থেকে কাজ শুরু করে, আস্তে আস্তে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে অগ্রসর হতে পারবেন।
ক্লায়েন্টের সাথে সমঝোতাপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে তুলতে হবে ?
একজন ফ্রিল্যান্সারের কাছে ক্লায়েন্ট হচ্ছে, তার আসল ব্যবসা। তার জন্য ক্লায়েন্টদের সাথে ইতিবাচক কাজের সম্পর্ক গড়ে তোলা অনেক জরুরী।
কিন্তু একজন সফল ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্ট এর কাজের পাশাপাশি তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে চলতে হয়। একটি দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব বা সমঝোতা গড়ে তোলার জন্য ক্লায়েন্ট এর থেকে ব্যবসার পুনরাবৃত্তি এবং নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া কিন্তু সম্ভবপর।
অবশ্যই কাজের মান নিয়ে কখনোই আপোষ করবেন না। সময়মতো কাজ জমা দেবেন, আর টাকা লেনদেন নিয়ে সর্বদাই স্পষ্ট থাকবেন।
সময়ের মধ্যে কাজ জমা করতে দিতে হবে ?
ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করার সময় ভদ্রতা এবং পেশাদারিত্ব বজায় রাখা কিন্তু অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সময়সীমা মেনে চলাও ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
যদিও পেশাদারিত্ব গড়ে উঠতে একটু সময় লাগতে পারে। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের টিকে থাকতে হলে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা, অনেক জরুরী হয়ে পড়ে।
নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে হবে ?
একজন ফ্রীল্যান্সার হিসেবে নিজের ইমেজ তৈরি করার জন্য সময় নেই। আর বিভিন্ন প্লাটফর্মে আপনার ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন প্রদান করুন।
আপনার উদ্দেশ্য থাকা উচিৎ যে, আপনাকে যাতে ক্লায়েন্টরা একটি শক্তিশালী। ডিজিটাল ব্র্যান্ড হিসেবে, দ্রুত ভাবে খুজে বের করতে পারে। এবং কাজ দেওয়ার সময় আপনার কথায় যেন প্রথমে মনে করেন।
নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে সোশ্যাল মিডিয়াতে, কাজ ভাগ করে নেওয়া কিন্তু একটি জনপ্রিয় উপায় হতে পারে। আর বর্তমানে, লিংকডইন কিন্তু ফ্রিল্যান্সার কাজ খোঁজার একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো অবলম্বন করে, আপনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারবেন খুব দ্রুত। কিন্তু আপনি কখনোই পরিকল্পনা পূর্বে সীমিত থাকবেন না।
এর কারণ আপনার স্বপ্নের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার আপনার জন্য সারা জীবন ধরে মোটেই অপেক্ষা করবে না। তার জন্য আপনাকে উদ্যোগ নিয়ে আপনার স্বপ্নকে পূরণ করতে হবে তাই এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
তো বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর বিশেষ করে এ বিষয়ে আপনার বন্ধুদের জানাতে একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম শেয়ার করে দিবেন।
এছাড়া, আপনি যদি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আরো নতুন নতুন টিপস এন্ড ট্রিক্স পেতে চান। তাহলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।