ইকুইটি কি : ইক্যুইটি শেয়ার বলতে কি বুঝায় ? ইক্যুইটি মার্কেট কিভাবে কাজ করে, এই সকল বিষয় নিয়ে আজ আপনাদের বিস্তারিত জানাব।
বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের জন্য ইকুইটি শেয়ার হচ্ছে, একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট অপশন। ইক্যুইটি শেয়ারের মাধ্যমে আমরা একটি কোম্পানি এর ভগ্নাংশ এর মালিকানা পেয়ে থাকি।
তার জন্য ইকুইটি শেয়ারহোল্ডারদের একটি কোম্পানি আংশিক মালিক হিসেবে বিবেচিত করা হয়ে থাকে।
ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (IPO), এর মাধ্যমে প্রথম বার এর জন্য ইকুইটি শেয়ার গুলোকে জনসাধারণ এর জন্য জারি করা হয়।
এছাড়া, জারি করার পরে, স্টাক এক্সচেঞ্জ এর মধ্যে ইকুইটি শেয়ার গুলোকে ট্রেড বা ক্রয় বিক্রয় করা হয়। এখন মনে হয় আপনি চিন্তা করচেন যে, ইকুইটি মানে কি। তাই না।
- অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য [বিস্তারিত এখানে]
- রিসেলার ব্যবসা কি ? রিসেলার ব্যবসা করে আয় করার উপায়
এক্ষেত্রে চিন্তার কোন কারণ নেই। ইকুইটি বলতে কি বোঝায় এই বিষয়ে যদি আপনি বুঝতে না পারেন। তবে নিচে দেওয়া আলোচনাটি অবশ্যই, শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলে আশা করা যায় আপনি ইক্যুইটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন।
ইকুইটি কি ?
আমরা যখন কোন কোম্পানি তে, বিনিয়েঅগ করি। তখন আমরা সেই কোম্পানির কিঃছু পরিমাণ এর ভাগীদার হয়ে যায়। এখন মনে করুন- যে কোম্পানিতে আপনি বিনিয়োগ করলেন।
সেই কোম্পানি নিজের সম্পূর্ণ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। তাহলে বিক্রির পরে, যে মূল্য আপনাকে দেওয়া হবে বা আপনি যে মুল্য গ্রহণ করবেন। সেটি কে শেয়ার বাজারে ইক্যুইটি বলা হয়।
যা আমরা উপরে বলেছি ইকুইটি একজন বিনিয়োগকারী কে কোম্পানিতে তার ভাগিদারের প্রমাণ হিসেবে বলা যায়। ইকুইটি একজন বিনেয়োগকারীকে সময় সময় কোম্পানির বিকাশ এর সঙ্গে সঙ্গে লাভ করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা করে ইনকাম করার উপায় [বিস্তারিত এখানে]
- গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার উপায় [রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা]
আর এরকম ভাবে একজন বিনিয়োগকারী কোম্পানি ভালো গ্রোর্থ এর সাথে সাথে বোনাস ও ডিভিডেন্ড ইনকাম করতে পারে। যদি শেয়ার মার্কেট এর বিষয়ে বলা হয়। তাহলে ইকুইটি হচ্ছে একটি কোম্পানির স্টক ও শেয়ার যেগুলো আপনি ক্রয় করে রেখেছেন।
বর্তমানে ইক্যুইটি মার্কেটের মধ্যে টাকা ইনভেস্ট করে, বিশ্ব জুড়ে অনেক মানুষ লাভবান হচ্ছেন। তো এখন আশা করতে পারি যে, শেয়ার বাজার ইক্যুইটি কি এই বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
ইকুইটি শেয়ার কি ?
মুলত একটি কোম্পানির ক্যঅপিটাল বৃদ্ধি করার জন্য কোম্পানির মাধ্যমৈ ইক্যুইটি শেয়ার গুলো জারি করা হয়ে থাকে।
কিন্তু এই ক্ষেত্রে কোম্পানির মালিক হ্রাস পায়। এবং এর শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে শেয়ারের পরিমাণ ও মূল্য এর উপর নির্ভর করে মালিকানা বিভাজিত হয়।
বিনিয়োগকারী’রা ইক্যুইটি শেয়ারের ইউনিট গুলো ক্রয় করে নিয়ে কোম্পানির কিছু অংশ মালিকানা প্রাপ্ত করতে পারে।
ইক্যুইটি শেয়ার গুলো ক্রয় করার মাধ্যমে, বিনিয়োগকারীদের কোম্পানি সম্পুর্ণ মূলধনের মধ্যে অবদান থেকে যায়। আর এই ভাবে বিনিযোগকারীরা হয়ে উঠে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার।
ইক্যুইটি শেয়ারহোল্ডার’রা হচ্ছে কোম্পানির মালিক। কিন্তু তাদের মালিকানা অধিকার বা অংশ তাদের কাছে থাকা, কোম্পানির শেয়ারের পরিমাণের উপর নির্ভর করে।
তাছাড়া, ইকুইটি শেয়ারহোল্ডার’রা কোম্পানির মাধ্যমে হওয়া লাভ গুলো গ্রহণ করে থাকে। বেশির ভাগ লার্জ ক্যাপ এবং সুপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানির মাধ্যমে তাদের শেয়ার হোল্ডারদের ডিভিডেন্ডস ও বোনাস পর্যন্ত প্রদান করা হয়।
ইকুইটি শেয়ার এর প্রকার ?
আমরা একানে আলাদা আলাদা কিছু ইক্যুইটি শেয়ারের প্রকার গুলো জানিয়ে দেব। তার জন্য নিচে দেওয়া তথ্য গুলো অনুসরণ করুন। তাহলে আশা করা যাবে আপনি ইক্যুইটি শেয়ার কত প্রকার সেই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে পারবেন।
তো চলুন আর সময় নষ্ট না করে ইকুইটি শেয়ার এর প্রকার গুলো জেনে নেওয়া যাক। যেমন-
সাধারণ শেয়ার
সাধারণ শেয়ার গুলো হচ্ছে, সেই শেয়ার যে গুলো একটি কোম্পানির মাধ্যমে ফান্ড বাড়াতে জারি করা হয়। যাতে কোম্পানির দীর্ঘ মেয়াদী খরচ গুলো মেটানো সম্ভব হয়।
বিনিয়োগকারীরা সেই সকল শেয়ার ক্রয় করার বিপরীতে কোম্পানির অংশের মালিকানা পেয়ে যায়।
কিন্তু, বিনিয়োকারীদের ক্রয় করা শেয়ারের সংখ্যা বা পরিমাণ এর উপর তাদের মালিকানার অংশ নির্ভর করে। একজন সাধারণ শেয়ার হোল্ডারের কাছে, ভোটাধিকার থেকে থাকে।
বোনাস শেয়ার
বোনাস শেয়ার হচ্ছে, এমন একটি ইকুইটি শেয়ার। যাকে একটি কোম্পানি তার ধরে রাখা উপার্জন থেকে জারি করা হয়ে থাকে। অন্য ভাবে বললে, একটি কোম্পানি তার লাভ গুলোকে এই সকল বোনাস শেয়ার জারি করার মাধ্যমে বিতরণ করে।
কিন্তু তার মাধ্যমে অন্যান্য ইক্যুইটি শেয়ারের মতো কোম্পানির বাজার মূলধন বৃদ্ধি পায় না।।
অধিকার শেয়ার
উক্ত অধিকার শেয়ার গুলেঅ কিন্তু সকলের জন্য জারি করা হয় না। কোম্পানির মাধ্যমে এই শেয়ার গুলো শুধু তার কিছু নির্দিষ্ট প্রিমিয়াম বিনিযোগকারীদের জন্য জারি করা হয়ে থাকে।
আর এই জন্য এই সকল শেয়ার হোল্ডারদের ইকুইটি শেয়ারের পরিমাণ বা ইক্যুইটি অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পায়। এই সকল ইকুইটি শেয়ার জারী করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আর্থিক প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অর্থ সংগ্রহ করা।
সুইট ইকুইটি
এখানে একটি কোম্পানির Director এবং Employees রা এই সকল সুইটি ইক্যুইটি শেয়ার গুলো প্রাক্ত করে। তাদের এই সকল শেয়ার গুলো একটি ডিসকাউন্টেড দাম এর সাথে ক্রয় করার সুযোগ প্রদান করা হয়।
ইক্যুইটি মার্কেট কিভাবে কাজ করে ?
ইক্যুইটি শেয়ার মার্কেটের ক্ষেত্রে কোম্পানি এর ডিমান্ড এবং সরবরাহ করার ধারণার উপর শেয়ার এর প্রাইস কম এবং বেশি হওয়া বিবেচিত হয়।
যদি অনেক বেশি মানুষ একটি কোম্পানির শেয়ার স্টক বিক্রি করেছেন। তবে সেই কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাবে।
আর যদি অনেক মা্নুষ সেই কোম্পানির শেয়ার স্টক ক্রয় করে নিচ্ছে তবে সেই কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পাবে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ নিজেদের ধারণা’র উপরে নির্ভর করে ও কোম্পানির মৌলিক বিশ্লেষন করে স্টক গুলো ক্রয় করেন এবং বিক্রি করে থাকেন।
আর যদি বেশির ভাগ মানুষ এটি ভেবে থাকে যে, কোন কোম্পানি আসছে সময়ে অনেক ভালো পারফর্ম করবে। তবে মানুষ সেই কোম্পানির স্টক ক্রয় করে নিবে। তাহলে স্টক এর প্রাইস আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে।
এছাড়া, যদি বেশি পরিমাণের মানুষ এটি বিশ্বাস করে থাকে যে, কোম্পানি আসছে সময়ে ভালো পারফর্ম করবেন।
তবে অধিক মানুণ সেই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিবে।
যার ফলে, স্টক এর প্রাইস আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। ডিমান্ড এবং সরবরাহ বাজারে শেয়ারের দাম নির্ধারিত করতে সহায়তা করে।
ইক্যুইটি এর বৈশিষ্ট্য
ইক্যুইটি মার্কেট এর মধ্যে বিনিয়োগ করার পূর্বে আপনার ইকুইটি শেয়ারের বৈশিষ্ট গুলো অবশ্যই জেনে নেওয়া জরুরী। যেমন-
স্থায়ী শেয়ার : ইক্যুইটি শেয়ার গুলো প্রকৃতিতে স্থায়ী। কারণ শেয়ার গুলো হচ্ছে, একটি কোম্পানির স্থায়ী সম্পদ।
গুরুত্বপূর্ণ রিটার্ন : ইক্যুইটি শেয়ার গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ রিটার্ন সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাব্য থাকে।
রিস্ক অনেক : এই সকল বিনিয়োগ এর মাধ্যম গুলো অনেক ঝুকিপূর্ণ হয়ে থাকে। ইক্যুইটি শেয়ার বা স্টক এর দাম এর কম বেশি হওয়ার ্পর বিনিয়োগকারীদের লাভ এবং লোকসান নির্ভর করে।
লভাংশ : একটি কোম্পানির লাভ, ইক্যুইটি শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। অন্য ভাবে যদি বলা হয় তাহলে একটি কোম্পানি তার বার্ষিক লাভের কিছুটা লভ্যাংশ তার শেয়ার হোল্ডার এর মধ্যে ভাগ করতে পারে।
কিন্তু লভ্যাংশ বিতরণ এর জন্য কোম্পানির উপর কোন প্রকার বাধ্যবাধকতা থাকে না।
ভোটাধিকার : বেশি ভাগ ইক্যুইটি শেয়ার হোল্ডারদের কিন্তু ভোটাধিকার থাকে। তার মধ্যে তারা কোম্পানির শাসককর্তা ও নিয়ন্ত্রণ কর্তাদের নির্বাচন করার সুযোগ পেয়ে যান।
অতিরিক্ত লাভ : ইক্যুইটি শেয়ার হোল্ডার অতিরিক্ত লাভের যোগ্য যে অতিরিক্ত লাভ কোম্পানির দ্বারা করা হয়।
লিকুইডিটি : ইক্যুইটি শেয়ার গুলো হলো এমন এক বিনিয়োগ এর প্রকার। যে গুলো অত্যন্ত লিকুইড শেয়ার গুলো স্টক এক্সচেঞ্জ এর মধ্যে ট্রেড করা হয়।
তার জন্য আপনি ট্রেডিং এর নির্দিষ্ট সময় এর মধ্যে যে কোন সময় শেয়ার গুলোকে ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন।
সীতিম দায় : কোম্পানি’র কতটা লস করেছে সেটি একজন সাধারণ শেয়ার হোল্ডার কে প্রভাবিত করে না। মানে কোম্পানির ঋণ বাধ্যবাধকতার বিষয় গুলো নিয়ে, শেয়ারহোল্ডার রা দায়বদ্ধ হয়ে থাকে না।
- ১ লাখ টাকায় ব্যবসা শুরু করার উপায়
- চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার কৌশল [বিস্তারিত এখানে]
- নতুন করে ব্যবসা শুরু করার কৌশল [বিস্তারিত এখানে]
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা ইক্যুইটি কি? ইকুইটি শেয়ার কি এবং কত প্রকার কিভাবে কাজ করে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছি।
এখন আমি আশা করি যে, আমাদের পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। তো এটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে।তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন।
আর বিশেষ করে, আপনি যদি আমাদের এই সাইট থেকে আরো নতুন নতুন টিপস এন্ড টিক্স পেতে চান। তাহলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।